বাণিজ্য মেলার জন্য ঢাকায় একটি স্থায়ী কেন্দ্র নির্মাণের চিন্তা করা হয়েছিল ২০০৯ সালে। এজন্য ২৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পও নেয়া হয়। কিন্তু তেজগাঁওয়ে জমি স্বল্পতায় সেটি হয়নি। এরপর পূর্বাচল ৭৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ে এই কেন্দ্র নির্মাণে নতুন প্রকল্প নেয়া হয়। কিন্তু প্রকল্পের ৩ বছরের মেয়াদকাল পার হলেও তেমন অগ্রগতি হয়নি। ফলে নতুন করে প্রকল্পের মেয়াদ আবারও বাড়ানো হচ্ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে প্রকল্প ব্যয়ও। ২০০৯ সালে যে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে ২৭৫ কোটি টাকা ব্যয় হতো, এখন তা প্রায় ৫ গুণ বেড়ে ১ হাজার ৩০৩ কোটি টাকায় উন্নীত হচ্ছে।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এই প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রথম সংশোধনী উপস্থাপন করা হচ্ছে। অনুমোদন পেলে প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদকাল ২০২০ সাল পর্যন্ত বাড়বে। এর আগে ২০১৬ সালে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছিলেন, আগামী তিন বছরের মধ্যে বাণিজ্য মেলার স্থায়ী কেন্দ্র নির্মাণ হবে। কিন্তু সেটার খুব অগ্রগতি না হওয়ায় আপাতত শেরে বাংলানগরেই বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
২০১৫ সালে নারায়ণগঞ্জের পূর্বাচলে নিউ টাউন এলাকায় চার নম্বর সেক্টরের ৩১২ নম্বর রোডে ২০ একর জায়গা জুড়ে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সবিউশন সেন্টার নামের স্থায়ী এ বাণিজ্য মেলা কেন্দ্রটি নির্মাণ-সংক্রান্ত প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়। ওই সময় ২০১৮ সালের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে ধরে নেয়া হয়। আর ব্যয় ধরা হয় ৭৯৬ কোটি ১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকার বহন করবে ১৩৮ কোটি ১৮ লাখ টাকা। আর প্রকল্প সাহায্য হিসেবে চীন দিচ্ছে ৬২৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা। কিন্তু এই অর্থের মাধ্যমে প্রকল্পের অগ্রগতি তেমন হয়নি। এর পেছনে বাস্তব সম্মত কারণ রয়েছে বলে দাবি করেছে বাস্তবায়নকারী সংস্থা রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)।
তারা বলছে, বাস্তবতার নিরিখে অতিরিক্ত ১৫ একর ভ‚মি অধিগ্রহণ, নতুন নতুন স্থাপনা নির্মাণ, সেন্টারের পরিসর বৃদ্ধি, রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন কারণে প্রকল্প ব্যয় বাড়ছে। নতুন করে ১৭০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা বাড়িয়ে মোট ব্যয় ধরা হচ্ছে ১ হাজার ৩০৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সেই সঙ্গে মেয়াদ ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্থায়ী বাণিজ্য মেলা কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে পণ্য প্রস্তুতকারী ও রফতানিকারকরা তাদের পণ্য প্রদর্শনের সুযোগ পাবেন। ফলে ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম স্থাপিত হবে। বাড়বে বাণিজ্যের উৎকর্ষ সাধনের সুযোগ। এতে দেশে বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন জোরদার হবে। এসব দিক বিবেচনা করে প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়েছিল।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে- প্রতিটি ৯ বর্গমিটার আয়তন বিশিষ্ট ৮০৬টি বুথ সংবলিত ২টি বড় হল রুম নির্মাণ, ১ হাজার ৫০০ কার পার্কিংয়ের ব্যবস্থা এবং সম্মেলন কক্ষ, প্রেস সেন্টার, সভাকক্ষ, বাণিজ্য তথ্যকেন্দ্র, অভ্যর্থনা কেন্দ্র, সার্ভিস রুম, সাব-স্টেশন স্থাপন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন