রাজধানীর মহাখালী থেকে কাজী রাশেদ (৩২) নামে এক যুবলীগ কর্মীর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল ভোরে মহাখালীর আমতলী এলাকার জলখাবার হোটেলের পেছন থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এদিকে আদাবরে মাত্র পাঁচশ’ টাকার জন্য বাছির মিয়া (৬০) নামে এক ভাঙারি ব্যবসায়ীকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে অপর এক ভাঙারি ব্যবসায়ী। গত শনিবার মাঝরাতে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ দু’জনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল ও সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
বনানী থানার এসআই শাহীন আলম বলেন, সকালের দিকে আমতলী এলাকার জলখাবার হোটেলের পেছনে এক ব্যক্তির রক্তাক্ত মরদেহ পরে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। তিনি আরও বলেন, নিহতের শরীরে গুলির চিহ্ন রয়েছে। তবে কে বা কারা তাকে হত্যা করেছে সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে আদাবর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।
নিহত রাশেদের ছোট ভাই কাজী রাজন জানান, তার ভাই পরিবারের সঙ্গে আমতলীর স্কুল রোড এলাকায় থাকতেন। চার ভাই ও দুই বোনের মধ্যে রাশেদ সবার বড়। তিনি আরও বলেন, রাশেদ বনানী থানা যুবলীগের সভাপতি ইউসুফ সরদার সোহেলের অনুসারী ছিলেন। তার সাথে চলাফেরা করতেন। শনিবার সন্ধ্যার পর রাশেদ ও জাকির নামে এক যুবলীগ কর্মী সোহেলের সাথে ছিলেন। রাতে রাশেদ বাসায় না ফেরায় সবাই চিন্তিত হয়ে পড়ে। সকালে জানতে পারেন পুলিশ তার ভাইয়ের লাশ উদ্ধার করেছে। রাজন আরও বলেন, ঘটনার পর থেকে যুবলীগ নেতা সোহেল ও তার অনুসারী জাকিরকে এলাকায় পাওয়া যাচ্ছে না। এই দু’জনের কেউ তার ভাইকে হত্যা করতে পারে বলে তিনি ধারণা করছেন।
এদিকে আদাবরের শেখেরটেক এলাকায় মাত্র পাঁচশ’ টাকার জন্য বাছির মিয়াকে ছুরিকাঘাত করেছে ভাঙারি ব্যবসায়ী আলমগীর (২৫)। গত শনিবার মধ্যরাতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত বাছির হবিগঞ্জের মুড়িয়াউক ইউনিয়নের সুনেশ্বর গ্রামের আম্বর আলীর ছেলে।
আদাবর থানার এসআই মনিরুজ্জামান মনির জানান, নিহত বাছির ও ছুরিকাঘাতকারী আলমগীর হবিগঞ্জের একই এলাকার বাসীন্দা। তারা দু’জনে মোহাম্মদপুরের শেখেরটেক এলাকায় একই বাসায় ভাড়া থাকতেন। বাছির কখনো ভাঙারি আবার কখনো ফলের ব্যবসা করতেন।
এসআই জানান, ঘাতক আলমগীরের বাবাও ভাঙারি ব্যবসা করেন। তার শেখেরটেক এলাকায় একটি ভাঙারির দোকান রয়েছে। বাছির ভাঙারি বিক্রি করবে এমন শর্তে আলমগীরের বাবার কাছ থেকে দাদন হিসেবে অগ্রীম দুই হাজার টাকা নেন। আলমগীর এই টাকা চাইতে গেলে বাছির তার (আলমগীরের) বাবাকে টাকা পরিশোধ করবেন বলে জানায়। কিন্তু আলমগীর বিষয়টি মেনে না নিয়ে বাছিরের সঙ্গে দ্ব›েদ্ব লিপ্ত হন। আলমগীর তাকে অন্তত পাঁচশ’ টাকা দিতে অনুরোধ করলে বাছির সেটি দিতেও অস্বীকার করেন। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে ফলকাটা ছুরি দিয়ে বাছিরের বুকে এলাপাতারি আঘাত করেন। গতকাল বেলা ১১টার দিকে আদাবর থানা পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। তাদের দু’জনের বয়সের মধ্যে বিশাল ফারাক থাকলেও উভয়ে গাঁজা সেবন করতেন বলে তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা ছিল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন