মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বাংলাদেশের সংবিধান রক্ষার দায়িত্ব ভারতের?

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ জুলাই, ২০১৮, ১২:০১ এএম

এইচ এম এরশাদের দিল্লি সফর নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি। ‘দিল্লিতে এরশাদ ঃ ভারতের কাছে তার গুরুত্ব কী’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এরশাদের সফরসঙ্গী জিয়াউদ্দিন আহমদ বাবলু ও দিল্লির থিঙ্কট্যাঙ্ক জয়িতা ভট্টাচার্যের বক্তব্য তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বাংলাদেশের সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় ভারত ভুমিকা রাখছে। প্রশ্ন হলো সত্যিই কী বাংলাদেশের সংবিধান রক্ষার দায়িত্ব ভারতের? ইনকিলাব পাঠকদের জন্য প্রতিবেদনটি হুবহু তুলে ধরা হলো।
সাবেক প্রেসিডেন্ট ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ ভারত সরকারের আমন্ত্রণে দিল্লি সফরে এসে গুরুত্বপূর্ণ নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে দেখা করছেন। দিল্লি সফররত জাতীয় পার্টির নেতারা বিবিসিকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা ও গণতন্ত্র বজায় রাখার ক্ষেত্রে তাদের দলের যে ভূমিকা এই সফরে ভারত কার্যত তারই স্বীকৃতি দিচ্ছে।
দিল্লিতে পর্যবেক্ষকরাও মনে করছেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটা তৃতীয় শক্তি হিসেবে জাতীয় পার্টির যে জায়গাটা আছে সেটাকে আরও ভালভাবে বুঝতেই জেনারেল এরশাদকে ভারত আমন্ত্রণ জানিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে ভোটের বছরে মি. এরশাদের এই দিল্লি সফরের তাৎপর্য কী? আসলে গত দু-তিনমাসে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি- বাংলাদেশের এই প্রধান দুই দলের নেতারাই ভারতের রাজধানীতে সফর করে গেছেন।
এখন মি. এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির যে দলটি দিল্লিতে রয়েছে, ভারত সরকারের হয়ে নিজে গিয়ে তাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে এসেছিলেন ঢাকায় ভারতের রাষ্ট্রদূত হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু জানাচ্ছেন, অন্য দলের কথা বলতে পারব না, তবে আমরা এসেছি খোদ ভারত সরকারের আমন্ত্রণে আর দিল্লিতেও এখন অবস্থান করছি তাদের আতিথ্যেই। আসার পর প্রথম দিনেই আমাদের বৈঠক হয়েছে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপির সাবেক সভাপতি রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে। পরদিন আমরা বৈঠকে বসি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে। তিনি বলেন, দিল্লিতে তাদের বৈঠক হয়েছে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গেও।
কিন্তু ভারতের এই নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে মি. এরশাদ ও তার সঙ্গীরা ঠিক কী নিয়ে কথাবার্তা বললেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেখুন ভারত হল বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র। আর ওদিকে বাংলাদেশেও সংবিধানকে সমুন্নত রাখতে ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখতে জাতীয় পার্টি লাগাতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। গত নির্বাচনে (৫ জানুয়ারী ২০১৪) আমরা শুধু এই কারণে অংশ নিয়েছিলাম যাতে বাংলাদেশে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা অক্ষুণ থাকে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখনও বিকাশশীল, আমাদের হয়তো অনেক সীমাবদ্ধতাও আছে। কিন্তু যে কোনও অবস্থাতেই আমরা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও শক্তিশালী করতে চাই, আর এ ব্যাপারে ভারতও আমাদের সাথে পুরোপুরি একমত। মূলত এই বিষয়েই দু’পক্ষের মধ্যে কথাবার্তা হয়েছে বলে জানান বাবলু।
দিল্লির থিঙ্কট্যাঙ্ক অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ফেলো জয়িতা ভট্টাচার্য আবার বলছেন, ভারত এখন জামায়াত ছাড়া বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গেই একটা সম্পর্ক রাখতে আগ্রহী জাতীয় পার্টিকে আমন্ত্রণ সেই প্রক্রিয়ারই অংশ। তার কথায়, তা ছাড়া সে দেশে তারা গুরুত্বপূর্ণ একটি তৃতীয় শক্তি, এবং আপনি চান বা না-চান তারা পার্লামেন্টে প্রধান বিরোধী দলও বটে। এর ওপরে মি. এরশাদ নিজে একজন সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান, কাজেই কেন নয়?
২০১৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচনের মতো না-হলেও এবারের নির্বাচনেও জাতীয় পার্টির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে, ভারত এই ফ্যাক্টরটাও মাথায় রাখছে বলে বলছিলেন মিস ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, প্রথমত বিএনপি এখনও পরিষ্কার করে বলেনি তারা নির্বাচনে যাবে কি না। তবে তারপরও গণতন্ত্রে একটা তৃতীয় শক্তির সব সময়ই কিন্তু বড় ভূমিকা থাকে। আসলে আমরা এখনও পর্যন্ত জানি না নির্বাচনী চিত্রটা শেষ পর্যন্ত কী দাঁড়াবে। কিন্তু কে বলতে পারে, জাতীয় পার্টি বাংলাদেশের নির্বাচনী রাজনীতিতে একটা বড় ভূমিকা নেবে না?, বলছিলেন জয়িতা ভট্টাচার্য।
কিন্তু এই দিল্লি সফরে ভারতীয় নেতৃত্বর কাছ থেকেই বা জাতীয় পার্টি ঠিক কী প্রত্যাশা করছে? জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর কথায়, আমাদের সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার ক্ষেত্রে ভারত কিন্তু বরাবরই আমাদের সমর্থন যুগিয়ে এসেছে। গতবারও তারা ঠিক সেটাই করেছে। আসলে ভারতের সাহায্য বলতে কি, ভারতে গণতন্ত্র কিন্তু একটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়ে গেছে এবং তাদের থেকে আমরা অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারি, অনেক কিছু শিখতে পারি। কোনও দিনই ভারতে সামরিক শাসন আসেনি, তাদের গণতন্ত্র অনেক দৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত, এগুলো নিয়ে আমাদের অনেক কথাবার্তা হল! জানাচ্ছেন তিনি।
চারদিনের সফর শেষে বুধবারই ঢাকায় ফিরছেন জেনারেল এরশাদ ও তার সঙ্গীরা। আর তারা এই বার্তা নিয়েই ফিরছেন, যে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের কোনও সঙ্কটে জাতীয় পার্টি ইতিবাচক ভূমিকা নিলে ভারতও তাদের পাশেই থাকবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (13)
Awlad Hossain ২৬ জুলাই, ২০১৮, ৪:১৭ এএম says : 0
ভারত একটি স্বার্থক বাদী দেশ,তারা নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য,এহেন কোন জঘন্য কর্ম নেই যাহা তারা করতে পারে না,তারা পার্শ্ববতী দেশ গুলোতে রাজনৈতিক সহিংসতা লাগিয়ে,ফয়দা নেওয়ার চেষ্টা করছে,ভারত তার পাশ্বর্বতী দেশ গুলোর জনগনের শাথে ঘনিষ্ঠ নয়,তারা যে কোন দলের পহ্মে কাজ করে, যেন সহজেই তাদের কাছ থেকে তাদের ফয়দা হাসিল করতে পারে।
Total Reply(0)
ইমরান ২৬ জুলাই, ২০১৮, ৪:১৮ এএম says : 0
আমাদের নেতাদের আচারণ দেখে তো সেটাই মনে হচ্ছে।
Total Reply(0)
MH Khan ২৬ জুলাই, ২০১৮, ৪:১৮ এএম says : 0
A person with out character and faithfulness and moral values can never be a true leader.
Total Reply(0)
Kazi Manik ২৬ জুলাই, ২০১৮, ৪:১৯ এএম says : 0
মনে হয় আবারো ভোট ডাকাতির নির্বাচনে জাতীয় পাটি কে সঙ্গী বানাতে চায় বা রাখতে চায়।
Total Reply(0)
Sanaullah Azad ২৬ জুলাই, ২০১৮, ৪:২০ এএম says : 0
দ‌ক্ষিণ এশিয়া‌তে ভার‌ত তার অনৈ‌তিক কর্মকা‌ন্ডের জন্য প্রবলভা‌বে ঘৃ‌ণিত।যার ফলশ্রু‌তি‌তে নেপাল ও মালদ্বী‌প হ‌তে ওরা আজ বিতা‌ড়িত।বাংলা‌দে‌শের রাজনী‌তি‌তে ভারত যে আগুন নি‌য়ে খেল‌ছে এক‌দিন সেই আগু‌নে ভারত নি‌জেই জ্ব‌লেপু‌ড়ে ছাড়খাড় হ‌বে এবং এ দেশ থে‌কেও ও‌দের ও তার কুক‌র্মের সহ‌যোগী‌দের বিতাড়ীত করা হ‌বে।
Total Reply(0)
Md Abdul Matin freedom fighter ২৬ জুলাই, ২০১৮, ৭:১৪ এএম says : 0
আমাদের দেশের রাজনীতির দেউলিয়া পনা।আমরা পলাশী বিপর্যয়ের কথা ভুলে গেছি। আর ও একটি বিপর্যয়ের অশনি শংকেত নাতো?
Total Reply(0)
২৬ জুলাই, ২০১৮, ৯:৫৭ এএম says : 0
ভারতের তাবেদার আওয়ামীগ।
Total Reply(0)
Hoque ২৬ জুলাই, ২০১৮, ১২:৫৫ পিএম says : 0
ভাতের ফেন বা মাড় খেতে যেমন নেড়ে কুকুর কাড়াকাড়ি করে, একই অবস্থা হয়েছে বাংলাদেশের জনসমর্থনহীন পতিত রাজনৈতিক দলগুলোর । ভারতের উচ্ছিষ্ট ভোগে তাদের বেঁচে থাকার প্রয়াস । ভারত যেমন কোন কালেই বাংলাদেশের জনগণের বন্ধু নয়, এ সকল গণভিত্তিহীন দলগুলোরও জন মানুষের সাথে কোন সম্পর্ক নেই ।
Total Reply(0)
Muraz ২৬ জুলাই, ২০১৮, ২:২২ পিএম says : 0
I have never seen a country like as India. Really they are big cheater all over the world!
Total Reply(0)
Md mobin ২৬ জুলাই, ২০১৮, ২:৩১ পিএম says : 0
আমাদের গনতন্ত্র খাদের পাশে দাঁড়িয়ে।নির্লজ্জরা গনতন্ত্র প্রতিষঠায় ভুমিকা না রেখে মুরগী হয়ে শিয়ালের কাছে ধর্ণা দেয়। বড়ই শরমের কথা।
Total Reply(0)
Nannu chowhan ২৬ জুলাই, ২০১৮, ৬:২২ পিএম says : 0
Mr.bablu ,why & who is India to interfere in our internal politics ? You don’t feel ashame as a one of the leader?Even our ordinary people can understand that,we are not part of India we are independent country.So like you some others political leaders not believing of our people’s mandate & democratic right you believe indias interferes,we should ashame on it & how can you people willlead our country?
Total Reply(0)
কে এম হারুন অর রশিদ ২৬ জুলাই, ২০১৮, ১০:৪১ পিএম says : 0
ভারত বৃহত রাষ্ট্র হলেও তাদের মন অত্যান্ত ছোট , এক কথায় ভারতে যে বা যারাই ধরনা দেয় তারা মেরাদন্ডহীন ।
Total Reply(0)
AI ৩০ জুলাই, ২০১৮, ১:২১ এএম says : 0
ভারত বাংলাদেশকে জাতীয় সংগীত দিয়েছে। ভারত 2 কোটি বাংলাদেশি হিন্দু সম্প্রদায় লোক কে আশ্রয় দিয়েছিল। একাত্তরের যুদ্বে অধিকাংশ হিন্দু জনগণ প্রাণ হারায় বলা হয়। ভারতের লেখক গান দিয়েছেন " এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা---" এসবের কৃতজ্ঞতা কি ভাবে ভারত চায়?
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন