সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্থগিত দু’টি কেন্দ্রে আসছে শনিবার ভোট গ্রহণের কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ১৩২ কেন্দ্রের বেসরকারি ফলাফলে বিএনপি মনোনীত মেয়রপ্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী এগিয়ে থাকলেও এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা হয়নি। ২৪ ও ২৭নং ওয়ার্ডের দু’টি কেন্দ্রে গত ৩০ জুলাই ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছিল। এগুলোতে আগামী ১১ আগস্ট ফের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। আরিফুল হক চৌধুরীর পক্ষ থেকে গতকাল বুধবার দুুপুরে জানানো হয়েছে ৩০১ জন ভোটার এলাকাতেই নেই। মৃত্যু ও প্রবাসে বসবাস এবং চাকুরিতে বদলির কারণে এরা ভোট দিতে পারবেন না। সেই হিসেবে তার বিজয় নিশ্চিত হয়ে গেছে।
জানা গেছে, কামরান স্থগিত দুই কেন্দ্রের সব ভোট পেলেও বিজয়ী হতে পারছেন না। তখনও আরিফ ১৪০ ভোটে এগিয়ে থাকবেন। আরিফ পেয়েছেন ৯০ হাজার ৪৯৬ ভোট। নৌকা প্রতীকে কামরান পেয়েছেন ৮৫ হাজার ৮৭০ ভোট। তাদের ভোটের ব্যবধান ৪ হাজার ৬২৬। স্থগিতকৃত ওই দুই ভোটকেন্দ্রে ভোটের সংখ্যা ৪ হাজার ৭৮৭। এর মধ্যে মারা গেছেন ও প্রবাসে রয়েছেন ২৯৮ জন ভোটার। চাকুরির কারণে আরও তিনজন বদলি হয়েছেন। সেই হিসেবে দুই কেন্দ্রে ভোটের দিন আরোও ৩০১টি ভোট কাস্ট না হওয়ারই কথা।
আরিফুল হক চৌধুরী জানিয়েছেন, সিসিকের স্থগিত হওয়া গাজী বুরহান উদ্দিন গরম দেওয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের মোট ভোটারের মধ্যে মারা গেছেন ৮০ জন ও বিদেশে আছেন ৮০ জন। এ কেন্দ্রে মোট ভোটার সখ্যা ২২২১ জন। অন্যদিকে স্থগিত হওয়া হবিনন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের মোট ভোটার সখ্যা ২৫৬৬। মোট ভোটারের মধ্যে মারা গেছেন ৩৮ জন ও বিদেশে আছেন ১০০ জন, চাকুরি জনিত কারণে বদলি হয়েছেন ৩ জন।
এদিকে ৩০ জুলাইয়ের নির্বাচনে মৃত ও প্রবাসী কেউ ভোট প্রদান থেকে বাদ যাননি। মৃতরা কবরে ঘুমিয়ে থেকে এবং প্রবাসীরা দেশে না এসেই ভোট দিয়েছেন। এমন তথ্য বের হওয়ায় সিলেটে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। সিসিক নির্বাচনে সীমাহীন ভোট জালিয়াতি, কেন্দ্র দখল, এজেন্ট তাড়িয়ে দেয়ার ঘটনার পাশাপাশি ব্যালট বক্সে নির্বিঘে মৃত ও প্রবাসীদের ভোটও পড়েছে।
এরকম ঘটনা ঘটেছে নগরীর ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের জহির তাহির উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে। এই কেন্দ্রের ফলাফল বাতিল করে পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবি করেছেন কাউন্সিলর প্রার্থী আব্দুল জলিল নজরুল। তিনি ইতোমধ্যে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগও করেছেন।
নির্বাচনের পরদিন ৩১ জুলাই এক আবেদনে বলেন, কেন্দ্র থেকে তার পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। এরপর ঘুড়ি প্রতীকের প্রার্থী জাল ভোটের মহোৎসব চালান। কিন্তু এই জাল ভোট ব্যালেটে পোলিং অফিসারের স্বাক্ষর নেই। স্বাক্ষরবিহীন ব্যালেট গণনায় নিয়ে ভোট কারচুপিতে শরিক হয়েছেন তিনি।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ ঘরণার লোক হিসেবে পরিচিত আজম খান। তিনি কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হন। জহির তাহির উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রটি তার নিজের। জাল ভোটে ওই কেন্দ্রে মৃত ও প্রবাসীরা বাদ যাননি। তাদের ভোটও বাক্সবন্দি হয়েছে। ওই কেন্দ্রে ভোটার তালিকায় দেখা যায় পাঠান পাড়ার ২১ জন রয়েছেন যারা মৃত। এছাড়া পাঠান পাড়া ও আর্চায্য পাড়ায় প্রবাসীর সংখ্যা ৩৭ জন। এর মধ্যে পাঠান পাড়ায় ২৮ জন ও আর্চায্য পাড়ায় ৯ জন। তারাও ভোট দিয়েছেন কবরে আর প্রবাসে বসে!
অপরদিকে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেননি ৮০ জন ভোটার। তারা সম্মিলিতভাবে পৃথক একটি আবেদন করেছেন নির্বাচন কমিশনে। নাম পরিচয়, ভোটার আইডি নম্বর উল্লেখ করে তারা এ আবেদন করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন