উত্তর: পরিবার হলো সন্তানের জন্যে সবচেয়ে বড় বিদ্যাপীঠ। পিতামাতা হলেন সন্তানের জন্যে সবচেয়ে বড় শিক্ষক। সন্তানের বড় কোনো সাফল্যে যেমন পিতামাতার মুখ উজ্জ্বল হয়। তেমনি সন্তানের অপকর্মের জন্যে অনেক পিতামাতাকে জেল জুলুম নির্যাতন সহ্য করতে হয়। যে সন্তান ভ‚মিষ্ট হওয়ার সাথে সাথে পিতামাতা আত্মীয় স্বজনেরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েছিলেন। তারাই আবার সন্তানের বেড়ে উঠার সময়কালে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ:ুশ্চিন্তায় ভোগেন। আজকাল আশপাশের পরিবেশে, বন্ধু-বান্ধব, প্রযুক্তির অপপ্রয়োগ ও অপসংস্কৃতির আগ্রাসনের ফলে অনেক ছেলে মেয়েদের জীবন নস্ট হয়ে যাচ্ছে। স্কুল, কলেজ ও বিশ^বিদ্যালয়ে পড়–য়া ছেলে-মেয়েদের কেউ কেউ বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক অসামাজিক কার্যকলাপের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। এক্ষেত্রে নামাযই একমাত্র বখে যাওয়া সন্তানের নৈতিক মূল্যবোধের পরিবর্তন ঘটাতে পারে। কারণ নামায আত্মার বিকাশ ঘটায়। নামায মানুষের বোধ শক্তিকে জাগ্রত করে দেয়। কোরআনে এরশাদ হয়েছে,‘ নিঃসন্দেহে সালাত অশ্লীলতা ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সূরা আনকাবূত: ৪৫)।
সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যত নির্মাণের জন্যে নামাযের ভ‚মিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নামায মানুষকে মমতা শিক্ষা দেয়। নামায সকল প্রকার বদ অভ্যাস থেকে দূরে রাখে। নামায ভালো মানুষ হওয়ার জন্যে উৎসাহিত করে। নামায মানুষকে বিনয়ী হতে শেখায়। নামায শৃংখলা শিক্ষা দেয়। যে সকল ছেলে-মেয়েরা নামায পড়ে, তাদের খাওয়া-দাওয়া, চলা-ফেরা, পড়াশুনা ও ঘুমানোর মধ্যে এক ধরনের শৃংখলা থাকে। তাই সন্তানের ভবিষ্যত সাফল্যের লাভের জন্যে দু:শ্চিন্তা না করে শৈশব থেকে নামাযের আদেশ দিতে হবে। হযরত ইব্রাহিম (আ) তাঁর সন্তানগণ যেনো নামাযী হয়। সেজন্যে তিনি আল্লাহর নিকট প্রার্থণা করেছিলেন। কোরআনে এরশাদ হয়েছে,‘হে আমার রব! আমাকে সালাত কায়েমকারী বানান এবং আমার বংশধরদের মধ্য থেকেও, হে আমার রব, আর আমার দোয়া কবূল করুন।’ (সূরা ইব্রাহিম:৪০)। শৈশব থেকে নামাযের প্রতি আদেশদানের জন্যে হাদিস শরীফেও গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
হযরত আমর ইবনে শুয়াইব (রা) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূল (সা) এরশাদ করেছেন, তোমরা তোমাদের সন্তানদের সালাতের জন্য নির্দেশ দাও, যখন তারা সাত বছরে উপনীত হয়। আর দশ বছর হলে তাকে প্রয়োজনে প্রহার করো, আর তাদের মাঝে বিছানা পৃথক করে দাও। (আবু দাউদ: ৪৯৫)। নামাযের ফজিলত ও গুরুত্ব এতোটাই বেশি। যা বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘ নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর কিতাব তিলাওয়াত করে, সালাত কায়েম করে এবং আল্লাহ যে রিজিক দিয়েছেন তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে দান করে, তারা এমন ব্যবসার আশা করতে পারে যা কখনো ধ্বংস হবে না।’ (সূরা ফাতির:২৯)। হযরত আবু হোরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূল (সা) এরশাদ করেছেন, কোনো ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় যতবার মসজিদে যাতায়াত করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে ততবার মেহমানদারীর ব্যবস্থা করে রাখেন।(বুখারী: ৬২৯)।
সন্তানের বখে যাওয়া রোধ করতে হলে অবশ্যই নামাযের আদেশ দিতে হবে। কারণ যে নামায পড়বে তাকে অবশ্যই পাক-সাফ থাকতে হবে। ইহার জন্যে নিয়মিত অযু গোসল করতে হবে। পোশাক পরিচ্ছেদ পরিস্কার রাখতে হবে। নামায আদায় করতে হলে সময়ের প্রতি খেয়াল রাখতে হয়। ভোরে ঘুম থেকে উঠতে হয়। ভোরে ঘুম থেকে উঠলে স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
উত্তর দিচ্ছেন : ফিরোজ আহমাদ
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন