বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪, ২০ আষাঢ় ১৪৩১, ২৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হবে না : রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০১ এএম

৫ জানুয়ারির মতো আওয়ামীলীগকে আর শূণ্যমাঠে খেলতে দেয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির মত নির্বাচনের স্বপ্ন দেখে কোন লাভ হবে না। এবার আর শূণমাঠে খেলতে দেয়া হবে না। আবারো একতরফা নির্বাচন করতে চাইলে জনগণই তা প্রতিহত করবে। বেআইনি কাজ করে যাবেন একের পর এক, জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেবেন, আর জনগণ বসে থাকবে, জনগণ আঙুল চুষবে- এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। আগামী নির্বাচন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই হবে, দেশনেত্রী বেগম জিয়ার নেতৃত্বেই বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, একটা জাতি রক্ত দিয়ে প্রাণ দিয়ে যে গণতন্ত্রের বিজয় পতাকা উড্ডীন করেছিলো তা আজ একতরফা বাকশালী শাসনে ভূতলে শায়ীত। সেজন্য আর একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে একদলীয় ব্যবস্থা চলতে দেয়া হবে না। আওয়ামী নেতাদের চিরকাল ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন, দুঃস্বপে- পরিণত হবে। ওবায়দুল কাদের সাহেবরা যে একতরফা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন তার আলামতও তারা দেখাচ্ছেন, দেশ বরেণ্য আইনজীবী ব্যরিস্টার মত্তদুদ আহমেদকে নিজ বাড়ীতে কয়েকদিন অবরোধ করে রাখার পর ঈদের দিনে তার বাবা-মা‘র কবর জিয়ারত করতে না দেওয়ায় মাধ্যমে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন মানেই ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের আসতে না দেয়া। শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হবে না এজন্যই যে, তিনি বিরোধী দল সহ্য করেন না। তিনি গণতন্ত্রকে ঘৃণা করেন। তিনি শব্দহীন কবরের শান্তি পছন্দ করেন। একতরফা নির্বাচন করবেন বলেই তিনি প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বেগম জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাবন্দী করেন। তাঁর বিরুদ্ধে কোন সমালোচনা তিনি সহ্য করেন না। সমালোচনাকারীদের গ্রেফতার করে পুলিশ দিয়ে রিমান্ডে নিয়ে উৎপীড়ন করান। তিনি তাঁর দল ও সরকারের সমালোচনাকারী বিএনপিসহ বিরোধী দলসমূহ, ভিন্ন মত ও বিশ্বাসী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়তই কটু ও অশ্রাব্য কথা বলে রাজনৈতিক পরিবেশকে বিষাক্ত করে তোলেন। তিনি গণমাধ্যমকে সম্পূর্নভাবে নিয়ন্ত্রনে নিয়েছেন। সমালোচনাকারী বিরোধী দলের নেতাকর্মীদেরকে গুম ও ক্রয় ফায়ার করতেও দ্বিধা করেন না। সুতরাং শেখ হাসিনার অধীনে কখনোই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। কারণ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন শেখ হাসিনাই গুম করেছেন। একমাত্র নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে হবে।
সরকারকে খুশি করতে’ ঈদের দিনে খালেদা জিয়ার খাবার কারাগারে ঢুকতে দেওয়া হয়নি অভিযোগ করে কারা কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করেন রুহুল কবির রিজভী।তিনি বলেন, ঈদের দিন অভুক্ত অবস্থায় অপেক্ষা করছিলেন বেগম খালেদা জিয়া, আত্মীয়-স্বজনরা এলে তাদের সাথে খাবার খাবেন। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ সরকারকে খুশি করতেই বাসার খাবার কারাগারে ঢুকতে দেয়নি। অভুক্ত দেশনেত্রী বুকফাটা হাহাকারে নাতনী ও নিকট আত্মীয়-স্বজনের সাথে খাবার খেতে পারলেন না। বিষয়টিকে কারবালার ঘটনার সঙ্গে তুলনা করে রিজভী বলেন, এজিদ কর্তৃক ফোরাত তীরে অবরোধের ন্যায় এ সরকার বেগম খালেদা জিয়ার খাবার অবরোধ করে যে ঘৃণ্য ও অমানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, তা শুধু মনুষ্যত্বহীনতাই নয়, তা অবৈধ ক্ষমতার অনমনীয় হিংস্রতার একটি ভয়াবহ রূপ। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করছি।
ঈদের দিন গণভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবারের ঈদযাত্রা ‘নির্বিঘ্ন’ ছিল বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাকে ‘মিথ্যাচার’ আখ্যায়িত করেন বিএনপি নেতা রিজভী।তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী জনগণের উদ্দেশ্যে বলেছেন, নির্বিঘ্নে নিজের বাড়িতে ঈদ করার জন্য নাকি সরকার সব কিছু করেছে। প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য ডাহা মিথ্যাচার। ঈদের দিনেই সড়ক দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন অসংখ্য।তিনি বলেন, ঘরমুখি মানুষ পরিজনদের সাথে ঈদ উৎসবে অংশগ্রহণ করার জন্য বাদুড়ঝোলা হয়ে ট্রেনে চড়েছে। ট্রেনের ছাদ এবং ভিতর লোকে লোকারণ্য। সড়ক-মহাসড়ক যেন বধ্যভূমি। গ্রামীন রাস্তাঘাট ধ্বংস হয়ে গেছে। দুই যানবাহনের মধ্যে মুখোমূখি সংঘর্ষ, যানবাহনের বেপরোয়া দ্রুতগতি, ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি মাল পরিবহন, অস্বাভাবিক দ্রুতগতির জন্য চালকের নিয়ন্ত্রন হারানো, বেআইন ওভারটেক ইত্যাদি নানা আইন বহির্ভূত কর্মকান্ডের জন্য ঈদের খুশির দিনেও বাড়ীতে বাড়ীতেও শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এই হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ ভ্রমন নির্বিঘ্নে করার নমুনা।
রিজভী বলেন,যে সরকার নিজেই বেআইনী সে সরকার কখনোই যথাযথ আইন প্রয়োগ করে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে না। অবৈধ ক্ষমতা ধারণকারীদের কথাবার্তায় উগ্রতা, অহমিকা ও দম্ভের প্রকাশ ঘটে সব সময়। কিন্তু এরই জন্য রাষ্ট্রের কোথাও শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও আইন মেনে চলার বাধ্যবাধকতা নেই।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য নাজমুল হক নান্নু, আবদুস সালাম, ফরহাদ হালিম ডোনার, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, এম এ মালেক, আবদুস সালাম আজাদ, মুনির হোসেন, রফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন