বন্ধ হয়ে যাওয়া দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বেসরকারি এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে বর্তমানে বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় তিন হাজার শিক্ষক-কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকার পর অবশেষে তাদের এমপিওভুক্তির কথা জানালো সরকার। গতকাল (মঙ্গলবার) শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে (মাউশি) এসব শিক্ষক-কর্মচারীকে এমপিওভুক্তির নির্দেশ দেয়া হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের বেসরকারি মাধ্যমিক-৩ শাখা মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মোতাবেক দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জিত সনদের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্যদ বা ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত চ‚ড়ান্ত বলে গণ্য হবে। উক্ত সনদের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে বিধি মোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্ত সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) গ্রহণ করবে। অফিস আদেশের অনুলিপি মাউশি মহাপরিচালক, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক ছাড়াও সব শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় স‚ত্রে জানা যায়, ২০০৬-২০১৩ সাল পর্যন্ত ১৩টি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের ১৩ এপ্রিল হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করেন। রায়ে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এই নামে কোনও বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের অনুমতি না দেওয়ার জন্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়। রায়ে বলা হয়, দারুল ইহসান কোনও বিশ্ববিদ্যালয় নয়। তবে সনদ অবৈধ ঘোষণা করেননি আদালত। রায় প্রকাশের দারুল ইহসান থেকে পাস করার পর বিভিন্ন সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক ও কর্মচারীদের এমপিওভুক্তিতে জটিলতা তৈরি হয়। নতুন এমপিভুক্তির জন্য আবেদনকারীদের এমপিওভুক্তি বন্ধ হয়ে যায়। ইনডেক্সধারী শিক্ষক-কর্মচারীরা নতুন প্রতিষ্ঠানে উচ্চতর পদে এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না। ফলে দেশব্যাপী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিষয়টি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়।
জটিলতা নিরসনে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর গত বছর ১২ অক্টোবর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের ক্ষেত্রে রায়ের আগে অর্জিত সনদধারীদের গ্রহণযোগ্যতা দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগকে চিঠি দেয়। এতে বলা হয়, হাইকোর্টের রায়ের আগে ইনডেক্সধারী হওয়ায় তাদের এমপিওভুক্তি ও বিএড সনদধারীদের সনদের গ্রহণযোগ্যতা প্রদানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ জরুরি। দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জিত সনদের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এখতিয়ার ঘোষিত হওয়ায় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত সনদধারী (আদালতের রায়ের আগে) এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের কর্মস্থল পরিবর্তন ও উচ্চপদে এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত কামনা করা হয় চিঠিতে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন