একদিনের মাথায় আটকে গেল বন্ধ হওয়া দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদের বৈধতা। গতকাল (বুধবার) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের এক আদেশে গত মঙ্গলবারের আদেশটি স্থাগিত করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে মাধ্যমিক ও উচ্চ বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়টি কোর্টের আদেশে বন্ধ হয়েছে। সেখানে কিছু পর্যবেক্ষণ দেয়া হয়েছিল। সনদের বৈধতা পর্যবেক্ষণের আলোকে হয়েছে কি না সেটি আরও যাচাই বাচাই করার প্রয়োজন। প্রয়োজনে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত নেয়া হবে। সেজন্য আদেশটি বাতিল না করে আপাতত স্থাগিত করা হয়েছে। জানা ে ছে, দারুল ইহসানের সনদের বৈধতা পাইয়ে দিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যৌথভাবে একটি উদ্যোগ নেয়। আর পিছন থেকে সায় দেয় সনদ বিক্রির একটি গ্রæপ। যেখানে কোটি টাকার লেনদেনের জোরালো অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি টের পেয়ে সচিব অনুমোদন সংক্রান্ত ফাইল যাচাই বাচাই করে আদেশটি স্থাগিত করার নির্দেশ দেন। গত মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা সনদের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি/ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত চ‚ড়ান্ত বলে গণ্য হবে এবং ওই সনদের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে বিধিমোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্ত সংক্রান্ত সব কার্যক্রম মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর গ্রহণ করবে।
২০০৬ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ১৩টি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের ১৩ এপ্রিল হাইকোর্ট এ বিশ্ববিদ্যালয়কে বন্ধ ঘোষণা করে রায় দেন। রায়ে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এই নামে কোনও বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের অনুমতি না দেয়ার জন্য সরকারকে নির্দেশ দেয়া হয়। রায়ে আরও বলা হয়, দারুল ইহসান কোনও বিশ্ববিদ্যালয় নয় বলেও পর্যবেক্ষণ দেন। রায় প্রকাশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কমর্রত শিক্ষক ও কর্মচারীদের এমপিওভুক্তিতে জটিলতা তৈরি হয়। নতুন এমপিভুক্তির জন্য আবেদনকারীদের এমপিওভুক্তি বন্ধ হয়ে যায়। ইনডেক্স্রধারী শিক্ষক-কর্মচারীরা নতুন প্রতিষ্ঠানে উচ্চতর পদে এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না। ফলে দেশব্যাপী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিষয়টি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। জটিলতা নিরসনে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর গত বছর ১২ অক্টোবর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কমর্রত শিক্ষক-কর্মচারীদের ক্ষেত্রে রায়ের আগে অর্জিত সনদধারীদের গ্রহণযোগ্যতা দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগকে চিঠি দেয়। সম্প্রতি বদলি হওয়ার মাউশির উপ-পরিচালক (মাধ্যমিক) নিজ উদ্যোগে এ চিঠি দেন। চিঠি আমলে নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দারুল ইহসানের সনদের বৈধতার ব্যাপারে মতামত চায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাছে। কমিশন আদালতের রায় এবং সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে মন্ত্রণাালয়কে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য মতামত দেয়। এরপর গত মঙ্গলবার বিতর্কিত এ আদেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক শাখা এ কাজটি করেছে সম্প‚র্ণ অগোচরে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন