শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

চাঁদপুরে সম্রাট আওরঙ্গজেব আমলের মসজিদের সন্ধান লাভ

চাঁদপুর থেকে বি এম হান্নান | প্রকাশের সময় : ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৮:২২ পিএম
জঙ্গল পরিষ্কার করার সময় সম্রাট আওরঙ্গজেব আমলের এক গম্বুজ বিশিষ্ট প্রাচীন মসজিদের সন্ধান পাওয়া গেছে। চাঁদপুর সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের ছোটসুন্দর গ্রামের তালুকদার বাড়ির পরিত্যক্ত জায়গায় মসজিদটির অবস্থান। গত বুধবার বিকেলে মসজিদটি দৃশ্যমান হলে বৃহস্পতিবার দিনভর শ্রমিকরা জঙ্গল পরিষ্কার করেন। সুলতানী আমলের শেষ ভাগে এ স্থাপত্যটি নির্মিত হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আল মামুন জানান, ‘তথ্য পেয়ে মসজিদটি দৃশ্যমান করার উদ্যোগ নেই। পরে ভেতরে ঢুকে দেখি, এটি এক গম্বুজ বিশিষ্ট। দেয়াল ঘেঁষে চারপাশে চারটি ছোট মিনার রয়েছে। বাইরের দৈর্ঘ্য ১৬ ফুট, প্রস্থ ১৫ ফুট। মসজিদের ভেতরের দৈর্ঘ্য আট ফুট ১০ ইঞ্চি এবং প্রস্থ ৭ ফুট তিন ইঞ্চি। মসজিদের একটি মেহরাব রয়েছে। দেয়ালে ছোট ছোট কয়েকটি খোঁপ রয়েছে। দেয়ালের পুরুত্ব ৩৩ ইঞ্চি। পোড়া ইট, বালি, চুনা এবং সুরকি দিয়ে মসজিদ নির্মিত।’
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আরো জানান, ‘এলাকার প্রয়াত মুরব্বিরা জানিয়েছিলেন সেখানে একটি পুরনো স্থাপনা আছে। কিন্তু কেউ সেখানে যেতেন না। কারণ, মসজিদটির ওপরে একটি বিশাল জীন গাছ ও তার শেকড়, বাঁশঝাড়, অন্যান্য বনলতা যা স্থাপনার বাইরের অংশকে ঢেকে রেখেছিল। আজিজ তালুকদার নামে এক ব্যক্তি ১০-১২ বছর আগে জীন গাছটি কেটে সেটি দৃশ্যমান করার উদ্যোগ নেন। কিন্তু পরবর্তীতে কোনো কারণে তিনি আর আগ্রহ প্রকাশ করেননি।
কারণ, এটি এতোই ভেতরে ছিল যে; সম্পূর্ণ দৃশ্যমান করা তার একার পক্ষে সম্ভব ছিল না। তিনি অবশ্য স্থানীয় লোকজনকে স্থাপনাটি সম্পর্কে জানান। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে, (জ¦ীন, ভ‚ত ও সাপের উপদ্রব থাকার ভয়ে) কেউ মসজিদটি দৃশ্যমান ও সংরক্ষণের উদ্যোগ নেননি। 
স্থানীয়রা জানান, ২০-২৫ বছর আগে এ মসজিদের পাঁচ কি.মি. দ‚রে উলিপুর গ্রামে একই রকম দু’টি মসজিদের সন্ধান পাওয়া যায়। নতুন মসজিদের গায়ে কোনো লেখা না পাওয়া গেলেও ওই দু’টি মসজিদের শিলালিপিতে সম্রাট আওরঙ্গজেবের আমলের কথা বলা হয়েছে। নতুন দৃশ্যমান মসজিদটি তিনশ’ বছর আগের বলে ধারণা স্থানীয়দের।
মসজিদটি নির্মাণের পরবর্তীকালে স্থানীয়রা এলাকা ত্যাগ করায় হয়তো এটি পরিত্যক্ত হয়ে জঙ্গলে রূপ নেয় তাদের ধারণা। প্রত্নতাত্তিক অধিদপ্তর ঢাকা জোনের পরিচালক রাখি রায় ওই গ্রামের সন্তান। তিনি জানান, জঙ্গল পরিষ্কারের আগে গত মঙ্গলবার স্থানীয় চেয়ারম্যান তাকে মসজিদ এলাকায় নিয়ে যান। মসজিদটি সুলতানি আমলের বলে ধারণা করছেন তিনি। স্থানীয় সংসদ সদস্য আবেদন করলে মসজিদটি সংরক্ষণ করা হবে বলেও জানান রাখি রায়।
স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. দীপু মনি বলেন, মসজিদটি সংরক্ষণের বিষয়ে প্রতœতাত্তি¡ক অধিদপ্তরের সাথে কথা বলবো।’ চাঁদপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. শওকত ওসমান বলেন, ‘মসজিদটি সম্পর্কে অবহিত হয়েছি। মসজিদ সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে।’

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন