বহুল আলোচিত আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নোয়াখালী অঞ্চলে আওয়ামীলীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির তৎপরতা লক্ষনীয় । প্রচার প্রচারনায় আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টি এগিয়ে রয়েছে। অপরদিকে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ বিএনপি দৌড়ের ওপর থাকলেও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। নোয়াখালী অঞ্চলকে বলা হয় বিএনপির দূর্ভেদ্য ঘাঁটি। ১৯৯১ থেকে ২০০৮ পর্য্যন্ত ৪টি জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। পক্ষান্তরে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন জোট ১৩টি আসনে জয়ী হয়। এরমধ্যে ১২টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় এবং নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উল্লেখ্য, নোয়াখালীতে যে পরিমাণ উন্নয়ন কাজ চলছে সেটা বিগত শত বছরেও হয়নি তেমনিভাবে মামলা মোকদ্দমায় জড়িয়ে বিএনপিকেও দৌড়ের মধ্যে রাখা হয়েছে।
নোয়াখালী-৪ (সদর-সূবর্ণচর) আসনে বর্তমান এমপি একরামুল করিম চৌধুরী ও নোয়াখালী -৫ (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট) আসনে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক, সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন। এছাড়া নোয়াখালী-১(চাটখিল-সোনাইমুড়ী), নোয়াখালী -২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ী একাংশ) ও নোয়াখালী - ৩ (বেগমগঞ্জ) আসনে আওয়ামীলীগের একাধিক শক্তিশালী প্রার্থী রয়েছে। এক কথায় সামাজিক, অর্থনৈতিকভাবে এসব আসনে কেউ কারো চাইতে কম নয়। নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে আওয়ামীলীগের বর্তমান এমপি আয়েশা ফেরদৌস ও তার স্বামী সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী মনোনয়ন প্রত্যাশী বলে জানা গেছে। চাটখিল আসনে বর্তমান এমপি এইচএম ইব্রাহিমের পাশাপাশি আরেক শক্তিশালী প্রার্থী ও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী জাহাঙ্গীর আলমের নাম শোনা যাচ্ছে। দু’জনই এলাকার উন্নয়নে বেশ সচেতন। জাহাঙ্গীর আলম এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি গণসংযোগ, গরীব অসহায়দের সহযোগিতা প্রদান এবং কয়েক শ’ বেকারের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেন। এ আসনে সাবেক ছাত্রনেতা, তরুণ শিল্পপতি ও ম্যাপচৌ গ্রæপের এমডি জসিম উদ্দিন আরমানও মনোনয়ন প্রত্যাশী। সেনবাগ আসনে এমপি মোরশেদ আলমের পাশপাশি তমা গ্রুপের কর্ণধার ও সমাজসেবী আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারন সম্পাদক ড. জামাল উদ্দিন এফসিএ ও জাফর আহমদ চৌধুরীর নাম শোনা যাচ্ছে । বেগমগঞ্জ আসনে বর্তমান এমপি মামুনুর রশিদ কিরনের পাশাপাশি আরেক শক্তিশালী প্রার্থী শিল্পপতি ও সমাজসেবী মিনহাজ আহমেদ জাবেদ এর নাম ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। উল্লেখ্য, মিনহাজ আহমেদ জাবেদ জনপ্রতিনিধি না হয়েও বেগমগঞ্জের উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন।
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে নেতা কর্মীদের সূত্রে জানা গেছে। হামলা, মামলা ও গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে দৌড়ের মধ্যে থাকলেও দলটির সাংগঠনিক অবস্থান শক্তিশালী। এ প্রসঙ্গে বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা কর্মীর সাথে আলাপকালে তারা জানায়, নির্বাচনের জন্য দলের নেতা কর্মীরা প্রস্তুত। আগামী নির্বাচনে নোয়াখালীর ৬টি আসনের মধ্যে ৫টিতে বিএনপি প্রার্থী পরিবর্তন হবেনা বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। এসব আসনের প্রার্থীরা হলেন, নোয়াখালীর চাটখিল আসনে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ও সাবেক এমপি ব্যারিষ্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সেনবাগ আসনে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক চীফ হুইপ জয়নুল আবদীন ফারুক, বেগমগঞ্জ আসনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপি বরকত উল্লা বুলু, নোয়াখালী সদর আসনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক এমপি ও তৃণমূল সমন্বয়ক মো. শাহজাহান, কোম্পানীগঞ্জ আসনে সাবেক উপ রাষ্ট্রপতি, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমদ। অপরদিকে হাতিয়া আসনে সাবেক এমপি প্রকৌশলী ফজলুল আজিমকে বিএনপিতে ফিরিয়ে এনে মনোনয়ন দেয়া হতে পারে বলে গুঞ্জন চলছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন