মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সম্পাদকীয়

জাতীয় ঐক্য : রাষ্ট্র মেরামতের একমাত্র সনদ

আবুল কাসেম হায়দার | প্রকাশের সময় : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম | আপডেট : ১২:১৫ এএম, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

আমরা ঘর-বাড়ি মেরামত করে থাকি। রাস্তা মেরামত করে থাকি। কিন্তু এবার শুনলাম রাষ্ট্র মেরামত করতে হবে। কোনো জিনিস অনেক দিন ব্যবহার করার ফলে তার কিছু কিছু নষ্ট হয়ে যায়, তখন কিছুটা মেরামত করলে পুরো জিনিস ব্যবহার উপযোগী হয়ে পড়ে। তখন আমরা তার ব্যবহার করি। তাতে আমাদের কোনো অসুবিধা হয় না। এই কাজকে মেরামত করা বলা হয়।
সম্প্রতি দেশের কিশোর-তরুণদের নিরাপদ সড়ক চাই দাবিতে বিক্ষোভ হয়ে গেল। প্রধানমন্ত্রীও এই আন্দোলনকে যৌক্তিক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। দেশের সকল রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ ও সকল পেশার মানুষ এই আন্দোলনকে স্বাগত জানিয়েছেন। অনেকে মনে করেন, এই আন্দোলন শুধু ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলন নয়। এই আন্দোলন সমাজ-রাষ্ট্রে বিরাজমান দুর্নীতি, নিবর্তনমূলক ব্যবস্থা ও অসম রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতেরও তাগিদ দিয়েছে। কারণ, বর্তমান রাষ্ট্রকাঠামো যে সাধারণ নাগরিকের পরিবর্তে কোটারি স্বার্থই সংরক্ষণ করে, পরিবহন খাত তার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত। তবে রাষ্ট্রকাঠামোর আমূল পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন বেশ কিছু গভীর সংস্কার। আর এই সংস্কার করার জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক সমঝোতা ও ঐকমত্য। কারণ এই সংস্কার দলমত নির্বিশেষে সকলের গ্রহণযোগ্যতায় না হলে দীর্ঘ স্থায়ী হবে না। রাজনৈতিক দলসমূহের ঐকমত্যের ভিত্তিতে এই সকল সংস্কার না হলে, স্থায়ী হবে না, ঠিকমত হবে না, কার্যকর হবে না। জাতীয় স্বার্থে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে উল্লেখিত সংস্কার হওয়া জরুরি।
জাতীয় সংসদ: জাতীয় সংসদকে একটি স্বাধীন ও কার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা জরুরি। বর্তমান সংসদে সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নেই। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সংসদ গ্রহণযোগ্যতা তেমন অর্জন করতে পারেনি। নির্বাহী বিভাগের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সংসদ সদস্যদের জন্য একটি আচরণবিধি থাকা দরকার। সংসদে স্থায়ী কমিটিগুলোকে আরো বেশি কার্যকর করা প্রয়োজন।
স্বাধীন বিচার বিভাগ: বর্তমানে বিচার বিভাগ স্বাধীন। কিন্তু বাস্তবে স্বাধীনতা কি পুরাপুরি বিচার বিভাগ ভোগ করতে পারছে? বিচার বিভাগকে সত্যিকার অর্থে স্বাধীন করতে হবে। উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগের জন্য স্বচ্ছ আইন প্রণয়ন জরুরি। নিম্ন আদালতকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত করতে হবে। সর্বস্তরে বিচারক নিয়োগ স্বচ্ছতা আনতে হবে। সৎ, যোগ্য ও নিষ্ঠাবান ব্যক্তিকে বিচারক নিয়োগ দিতে হবে। রাজনৈতিক বিবেচনায় বিচারক নিয়োগ বন্ধ করতে হবে। রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা করা থেকে সরকারকে বিরত থাকতে হবে। ক্ষমতায় গিয়ে ঐ সকল মামলা প্রত্যাহারের নমুনা বন্ধ করার নিয়ম চালু করতে হবে।
সংবিধান সংস্কার: ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত। আমাদের সংবিধান লিখিত। অনেকবার সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে। কিন্তু সংবিধান সংশোধনের জন্য কোন বিশেষজ্ঞ কমিটি নেই। উক্ত কমিটি থাকা প্রয়োজন। জাতীয় স্বার্থে সংবিধানের অনেককিছুর সংশোধন প্রয়োজন। নির্বাচনকালীন সরকার প্রশ্নে সংবিধানের আলোকে গ্রহণযোগ্য বিধান প্রণয়ন করা জরুরি। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন। নারীদের সংরক্ষিত আসন নিয়ে বিরোধ মীমাংসা হওয়ার প্রয়োজন। গণভোটের নিয়ম থাকা আবশ্যক।
স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন: আমাদের নির্বাচন কমিশন একটি বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে নির্বাচন কমিশন সেই দলের পক্ষ অবলম্বন করতে বাধ্য হয়। স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষমতা তার থাকে না। যেহেতু স্বাধীন কোন আইনের মাধ্যমে এই কমিশন গঠিত নয়, তাই নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য স্বচ্ছ আইন দরকার। নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ, সৎ, নিষ্ঠাবান ব্যক্তিদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে জনবল নিয়োগ, বাতিল ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষমতা প্রদান করতে হবে।
দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল: দেশে বহু রাজনৈতিক দল রয়েছে। কিন্তু দক্ষ, স্বচ্ছ, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল গঠনের জন্য দলের মধ্যে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নেতৃত্ব নির্বাচনের নিয়ম চালু ও বাস্তবায়ন করতে হবে। দলের মধ্যে গণতন্ত্র না থাকলে দেশে গণতন্ত্রের চর্চা হতে পারে না। তাই নিজ দলে সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক চর্চার বিকাশ ও বাস্তবায়ন করতে হবে। তেমন কোন রাজনৈতিক দলে সহযোগী সংগঠন থাকবে কিনা তারও একটি সিদ্ধান্ত সকল দলের ঐক্যের ভিত্তিতে নিতে হবে। তবেই দেশে রাজনৈতিক দলের বলিষ্ঠতা বৃদ্ধি পাবে। রাজনৈতিক দলের আয়-ব্যয়ের হিসাবে স্বচ্ছতা আনতে হবে।
আর্থিক খাতের সংস্কার: দেশের ব্যাংকসহ সকল আর্থিক খাত তলানিতে চলে গিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক খাতের তদারকি করতে ব্যর্থ হয়েছে। সরকারি, বেসরকারি অনেক ব্যাংক আজ দৈন্যদশায় চলে গিয়েছে। এই ক্ষেত্রে আইনের সংস্কার দরকার। আইনের প্রয়োগের মাধ্যমে শান্তি বিধান করে আর্থিক খাতের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। দিন দিন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান দুর্বল হয়ে পড়ছে। সকল ব্যাংককে বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে আনতে হবে। ঘুষ, দুর্নীতি, অনিয়ম বন্ধ না হলে ব্যাংকিং খাতের দৈন্যদশা দূর করা সম্ভব হবে না।
মাদক: দেশের তরুণ সমাজ আজ মাদকে নিমজ্জিত। প্রায় ১ কোটির অধিক তরুণ-তরুণী নানা রকম মাদকে আসক্ত। জাতি ধীরে ধীরে ধ্বংসের দিকে চলে যাচ্ছে। এই অবস্থার পরিবর্তন আনতে হবে। মাদকবিরোধী অভিযানে কেউ কেউ নিহত হচ্ছে। কিন্তু তাতে মাদক নির্মূল হচ্ছে না। মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ও প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় না আনতে পারলে মাদক ব্যবসা বন্ধ হবে না। মাদকের সঙ্গে জড়িত পুলিশসহ সমাজের উচ্চস্তরের অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান জড়িত। তাদের চিহ্নিত করতে হবে। আইনের আওতায় আনতে হবে। শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। দ্বিতীয়ত সকল রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠনকে মাদককে ‘না’ বলতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সরকারের উচ্চস্তর থেকে মাদককে ‘না’ বলার পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা: দেশে গণমাধ্যম স্বাধীন। কিন্তু নিয়ন্ত্রিত। বিশেষ করে আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ ধারা অনুযাযী গণমাধ্যমে মতামত নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে। মুক্ত ও স্বাধীন মতামত প্রধান অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে। সরকারি নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমগুলোর জন্য স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ আইনী কাঠামো প্রয়োজন। যখন যে সরকার থাকে সরকারি গণমাধ্যমগুলো তখন তার একতরফা খবর প্রকাশে বাধ্য হয়। তাতে সাধারণ মানুষের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে না।
দুর্নীতি দমন ও সরকারি উদ্যোগ: দেশে সর্বস্তরে দুর্নীতি বিস্তার লাভ করেছে। কয়েকদিন পূর্বে টিআইবি কর্তৃক পুলিশ প্রশাসনে সবচেয়ে বেশি ঘুষ দিয়ে কাজ করানোর রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। দুর্নীতি হ্রাস বা দূর করার জন্য সার্বিক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সমাজের তথা রাষ্ট্রের উচ্চস্তর থেকে দুর্নীতি বিরোধী সর্বাত্মক অভিযান শুরু করতে হবে।
মানবাধিকার সংরক্ষণ: ব্যক্তিমত প্রকাশের স্বাধীনতা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। কিন্তু বিভিন্নভাবে মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব হয়। আজ ঘুষ, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের মাধ্যমে মানবাধিকার খর্ব হচ্ছে। আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ ধারার অপপ্রয়োগের মাধ্যমে ব্যক্তিমত প্রকাশের স্বাধীনতা হ্রাস পেয়েছে।
তরুণ সমাজের জন্য বিশেষ বিনিয়োগ: দেশের জনশক্তির একটি বিরাট অংশ তরুণ। তারা বিদেশগামী। সকলে একটু সুযোগ পেলেই উন্নত দেশে বসবাস করতে চায়। তাই দেশের মেধার অভাব দেখা দিয়েছে। তরুণদের জন্য বিশেষ বিনিয়োগ করতে হবে। তাদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নিরাপত্তা সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে। দেশের তরুণ সমাজ কর্মহীনতার কারণে অসামাজিক কর্মকান্ডে জড়িত হয়ে পড়ছে। সুশিক্ষা, কর্মমুখি শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে তরুণ সমাজের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হবে।
প্রশাসনিক সংস্কার: প্রশাসনে নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ, সৎ. মেধাবী কর্মকর্তা প্রয়োগের জন্য একটি আধুনিক প্রশাসনিক আইন প্রয়োজন। রাজনৈতিক বিবেচানয় নিয়োগ কোনোভাবে দেশের জন্য কল্যাণকর নয়। কারণ কোনো দলই চিরকাল ক্ষমতায় থাকবে না। তাই নিরপেক্ষ, সকল দলের সমর্থক নিয়োগে সমান সুযোগ থাকতে হবে। এই জন্য ব্যক্তি পছন্দ, দলীয় পছন্দের রাজনীতি থেকে আমাদের সরে আসতে হবে। যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ চূড়ান্ত করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
স্থানীয় সরকার ও বিকেন্দ্রীয়করণ: সংসদের দায়িত্ব হচ্ছে আইন প্রণয়ন করা। কিন্তু আমাদের দেশের সংসদ সদস্যগণ সব কাজ করেন। এটা রহিত করতে হবে। তাদের কারণেই স্থানীয় সরকার নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে না। সংবিধান অনুযায়ী স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানসমূহকে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ করার উদ্যোগ নিতে হবে। একটি কার্যকর বিকেন্দ্রীয়করণ কর্মসূচী প্রণয়ন জরুরি।
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা: দেশের সার্বিক উন্নতির স্বার্থে পুরো দেশকে পরিকল্পিতভাবে উন্নয়নের ধারায় নিয়ে আসতে হবে। তাই রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরো দেশের আর একটি কার্যকর সার্ভে করা দরকার। অর্থাৎ দেশের কোথায়, কী পরিমাণ, কতটুকু ভূমি কী কাজে ব্যবহার হবে, তার একটি স্থায়ী নকশাসহ পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত। এখন কিন্তু বিক্ষিপ্তভাবে শিল্পায়ন, কৃষি, বাসস্থান, রাস্তা, ব্রিজ, বন্দর প্রভৃতি স্থাপিত হচ্ছে। আবার এ সকল পরিকল্পনা এক এক সময়, একএক সরকার এসে নিজের ইচ্ছামত পরিবর্তন করে। তাই দেশে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হচ্ছে না। কোথায় শিল্প স্থাপন হবে, কোথায় বনায়ন হবে, কোথায় আবাসন হবে, কোথায় নদীনালা থাকবে, কোথায় মাঠ হবে তা নির্দিষ্ট করা নেই। কিছু কিছু থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। সরকার কর্তৃক স্থায়ীভাবে পরিকল্পিত দেশ হলে, দেশ তখন সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে যাবে। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিতে তখন সহজ হবে। এই কাজটি রাষ্ট্রীয়ভাবে, বিদেশি পরামর্শক নিয়োগের মাধ্যমে করা প্রয়োজন।
শেষ কথা: আমরা আশা করতে পারি, কিশোর-তরুণদের রাষ্ট্র মেরামতের দাবির পরিপ্রেক্ষিত রাজনীতিবিদেরা জাতীয় পর্যায়ে আলাপ-আলোচনায় আগ্রহী হবেন এবং নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হবেন। উল্লেখিত বিষয়সমূহ জাতীয় পর্যায়ে যে কোনো সময় আলোচনার বিষয়বস্তু হওয়া প্রয়োজন। রাজনীতিবিদগণ আলাপ-আলোচনা শুরু করবেন, জাতীয় বিষয়সমূহ সম্পর্কে ঐক্যমত্যে পৌঁছবেন এবং একটি জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করবেন এটাই কাম্য। একই সঙ্গে তারা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের গণতান্ত্রিক ধারার উত্তরণ ঘটাতে সচেষ্ট হবেন, এটাও প্রত্যাশিত। এর ফলে আমরা জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারব এবং শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলার পথকে সুগম করতে সক্ষম হবো।
লেখক: সাবেক সহসভাপতি এফবিসিসিআই, বিটিএমইএ, বিজিএমইএ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি, প্রতিষ্ঠতা চেয়ারম্যান ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৫:১০ এএম says : 0
Yes এখানে আপনি আপনার মন্তব্য করতে পারেন
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন