শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

সঙ্কট নিরসনে জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই

গণতন্ত্র মঞ্চের মতবিনিময় সভা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

দেশের গণতন্ত্র রক্ষা এবং জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে জাতীয় ঐক্যের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন বিশিষ্টজন ও বিভিন্ন দলের নেতারা। তারা বলেন, ঐক্যের বিকল্প নেই। এখন যে ভয়াবহ ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে; সাহস করে সেখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আর এই লড়াইয়ে তরুণদের অংশগ্রহণ করতে হবে।
গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে গণতন্ত্র মঞ্চের মতবিনিময় সভায় তিনি তারা এ আহবান জানান। এ স ময় সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ২১ দফা সংস্কার প্রস্কাব তুলে ধরা হয়। এসব দফা নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করার কথাও জানানো হয়।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমাদের উন্নয়ন হচ্ছে কিন্তু উন্নতি হচ্ছে না। চারদিকে অবনতির ধ্বংসস্তূপ দেখছি। অবনতির জন্য আমরা মহাসংকটে আছি। সমস্যা সমাধানে আমাদের রাজনৈতিক ঐক্য প্রয়োজন। সংকট নিরসনে সবার মতামতের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট দফা নির্ধারণ করে কাজ করতে হবে। রাজনৈতিক সবাইকে জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করতে হবে। তিনি আরো বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার অনির্বাচিত হলেও এর প্রতি মানুষের আত্মবিশ্বাস আছে। যারা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসবে তারা এই দাবিগুলো বাস্তবায়ন করবে। নির্বাচনই ক্ষমতা বদলের মাধ্যম। আমাদের উন্নয়ন হচ্ছে কিন্তু উন্নতি হচ্ছে না। চারদিকে অবনতির ধ্বংসস্তূপ দেখছি। অবনতির জন্য আমরা মহাসংকটে আছি। সমস্যা সমাধানে আমাদের রাজনৈতিক ঐক্য প্রয়োজন। সমস্যা সমাধানে শুধু একটি সুষ্ঠু নির্বাচনই যথেষ্ট নয়। বস্তুত নির্বাচন হলো পূর্বশর্ত। নির্বাচিত হওয়ার পর ক্ষমতাপ্রাপ্ত দল কী করে সেটা দেখার বিষয়।

জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, কোটি কোটি টাকা খরচ করে ইভিএম কিনছেন ডলার সংকটের সময়। নির্বাচন না হলে এই ইভিএম দিয়ে কী হবে? এই ডলারের টাকা কে নেবে। এই সরকারের অধীনে তো নির্বাচন হবে না। জনগণ এই নির্বাচন মেনে নেবে না। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র জনগণের নয়। এখনকার গণতন্ত্র রাজনৈতিক দলের গণতন্ত্র। ৯৬ শতাংশ মানুষ রাজনীতি করে না। তারা শ্রমজীবী ও পেশাজীবী। আমরা এসব মানুষের মতামত নিতে এবং তাদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ চাই। বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ। সবাইকে যেতে হবে। যারা নির্যাতিত, তাদের মামলা দেওয়া হয়েছে। এই রাষ্ট্র আর রাষ্ট্র নেই। এই রাষ্ট্র জনগণের রাষ্ট্র নয়। এই রাষ্ট্রের জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করিনি। তিনি আরো বলেন, বিরোধী দলের কর্মসূচিতে হামলা করছে সরকার। সরকার জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। বলা হচ্ছে নির্দেশ ছাড়া হামলা করা যাবে না। তাহলে আগের হামলাগুলো নির্দেশ দিয়ে হয়েছে। পালাবার রাস্তা পাবেন না।’
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, আশির দশকের লড়াই একটা সম্ভাবনাময় লড়াই ছিল। সবার অংশগ্রহণে এরশাদ পতনের মধ্য দিয়ে একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার কথা ছিল। কিন্তু এরপর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় এলেও দেশে পূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়নি। দেশে গণতান্ত্রিক অধিকার না থাকায় কেউ তাদের দাবির কথা বলতে পারছে না। আর তরুণদের মাঝে যেই ভয়াবহ ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে, তার অবসান ঘটানো এবং আশা করি এই লড়াইয়ে তরুণরাও অংশগ্রহণ করবে।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, দেশের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ভেঙে পড়েছে। দেশের কোনও মানুষ বিশ্বাস করে না যে এই সরকারের অধীনে সঠিকভাবে ভোট দিতে পারে। যেই সরকার মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচিতে সিনিয়র নেতাদের হামলা করে, তাদের কাছে আর কী চাওয়ার আছে?
মতবিনিময় সভায় গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকির সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক নুর, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম প্রমূখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন