বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

উত্তরপত্রে ঘষামাজা করে ফল পরিবর্তন

৭ দিনের মধ্যে জবাব চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

রাজধানীর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ২০১৮ সালের দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষার উত্তরপত্রে ঘষামাজা করে ফলাফল পরিবর্তন করা হয়েছে। উত্তরপত্রে ওভাররাইটিং ও ঘষামাজার বিষয়টি প্রমাণও পেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি। তাই এ বিষয়ে আগামী ৭ দিনের মধ্যে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে মন্ত্রণালয়। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালককে আগামী সাত দিনের মধ্যে অধ্যক্ষের কাছ থেকে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা নিয়ে তা মন্ত্রণালয়কে জানাতে বলা হয়েছে। গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুরে মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আনোয়ারুল হক স্বাক্ষরিত আদেশে এই নির্দেশ দেওয়া হয়। মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মতিঝিল, বনশ্রী ও মুগদা শাখায় ২০১৮ সালে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষার খাতায় ঘষামাজা সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তার প্রতিবেদনে সত্যতা পাওয়া গেছে। এমতাবস্থায় প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা নিয়ে তা আগামী সাত দিনের মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগে পাঠানোর জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ২০১৮ সালের দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ভর্তিতে উত্তরপত্রে ঘষামাজা করে ও রাবার দিয়ে মুছে ভুল উত্তর শুদ্ধ করে লেখা হয়। এর সাথে কলেজের অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগমের জড়িত থাকার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেন বেগম শ্যামলী শিমু নামে এক অভিভাবক। অভিযোগে বলা হয়, ২০১৮ সালের দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষায় অনেক পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্রের ভুল উত্তর রাবার দিয়ে মুছে সেই স্থানে শুদ্ধ উত্তর লিখে নম্বর দিয়ে ফেল করা ছাত্র-ছাত্রীদের পাশ করানো হয়। এই কাজে কলেজের অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগমকে সহযোগিতা করেন কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক আঃ ছালাম খান, অফিস সহকারী দীপা, কবির, আতিক এবং ইঞ্জিনিয়ার আতিক। এ কাজে অধ্যক্ষ প্রায় তিন কোটি টাকা আয় করেছেন বলেও অভিযোগকারী অভিযোগে উল্লেখ করেন। তার অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি তদন্তের জন্য ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করে মন্ত্রণালয়।
তদন্ত কমিটি ২০১৮ সালের মতিঝিল, বনশ্রী ও মুগদা শাখার দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির ভর্তিচ্ছু ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১২২ জনের খাতা পর্যালোচনা করেন। এর মধ্যে মতিঝিল শাখায় বাংলা মাধ্যমের (বালক) দ্বিতীয় শ্রেণির ৩৩টি, বালিকাদের ৮টি, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বালক-বালিকা মিলে ৩টি, ক্যাচমেন্টের ১টি, বনশ্রী শাখার তৃতীয় শ্রেণির বালক (উন্মুক্ত) ১৭টি, মুগদা শাখায় একই শ্রেণির বালক (বাংলা মাধ্যম) ৭টিসহ মোট ৬৯টি খাতা জব্দ করে।
কমিটি এসব খাতার উত্তরপত্রে রাবার দিয়ে মুছে ঘষামাজা ও ওভাররাইটিংয়ের বিষয়টি প্রমাণ পায়। তবে এর সাথে কারা জড়িত সে বিষয়ে সুষ্পষ্ট কোন কিছুই কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়। ঢাকা জেলা প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগে জমা হয়েছে গত ৮ আগস্ট।
উত্তরপত্রে ঘষামাজার বিষয়ে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম বলেন, একাডেমিক প্রধান হিসেবে তিনি ফলাফল প্রকাশ করে থাকে। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা ভিত্তিহীন এবং দুঃখজনক। একশ্রেণির স্বার্থন্বেষী ব্যক্তি বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠান, অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়ে প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি নষ্ট করেন।
মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ আঃ ছালাম খান বলেন, দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি প্রতিষ্ঠান প্রধানকে সকল বৈধ কর্মকান্ডে সহযোগিতা করে আসছেন। তার জানামতে অধ্যক্ষ কোন অবৈধ কাজ করেননি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন