শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সম্পাদকীয়

দেশের প্রধান দুই দলের মধ্যে ছোটখাটো বিষয়েও বিদ্বেষ দেশের জন্য ক্ষতিকর

মোহাম্মদ আবদুল গফুর | প্রকাশের সময় : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

গেল সপ্তাহের প্রধান খবর ছিল সরকার বিরোধী প্রায় অর্ধশত রাজনৈতিক দলের ঐক্যের আনুষ্ঠানিক যাত্রা। রাজনৈতিক মহলে বি. চৌধুরী, ড. কামাল, মির্জা ফখরুল, রব, মান্না প্রমুখ প্রবীন ও নবীন রাজনৈতিক নেতাদের এ ঐক্য যথেষ্ট গুরুত্ব লাভ করেছে। গুরুত্ব লাভ করেছে বলেই সরকারী দলের নেতাদের-এর বিরুদ্ধে তড়িঘড়ি প্রচারণা শুরু করে দিতে হয়েছে। আওয়ামী লীগের দুই নম্বর নেতা ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এ ঐক্য ৩০ দলের ৩০ নেতার ঐক্য, এর সাথে জনগণের কোন সম্পর্ক নেই।
যে ঐক্যের সময়ে জনগণের কোন সম্পর্ক নেই সে ঐক্য নিয়ে সরকারী নেতাদের মাথা ব্যথার কিছু থাকার কথা নয়। কিন্তু এই ঐক্যের বিরুদ্ধে তাদের তড়িঘড়ি প্রচারণা শুরু থেকে বুঝা যায় এতে তাদের কিছুটা হলেও মাথা ব্যথার কারণ ঘটেছে। শুধু আ.লীগের দুই নম্বর নেতা ওবায়দুল কাদের নন, সরকার বিরোধী ঐক্যে সরকারের এক নম্বর নেতা স্বয়ং প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ ঐক্যের বিরুদ্ধে তার নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রর নিউইয়র্ক থেকেই তিনি এই ঐক্যের বিরুদ্ধে তাঁর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেছেন, খুনী-দুর্নীতিবাজরা ঐক্য গড়েছে।
এদিকে প্রধান মন্ত্রীর এ বক্তব্যের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ড. বি চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামী লীগের শাসন আমলে বর্তমানে সরকারের এমন কোন মন্ত্রণালয় বা দপ্তর নেই, যেখানে দুর্নীতি চলছে না, এরকম একটা সরকারের প্রধান হয়ে প্রধান মন্ত্রীর বিরোধী দলের ঐক্যকে দুর্নীতিবাজদের ঐক্য বলে অভিহিত করার কোন অধিকার নেই।
বিরোধী দলের পক্ষ থেকে সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে এই বলে যে, বর্তমান সরকারের অধীনে রাষ্ট্র একটি দানবে পরিণত হয়েছে। নিউইয়র্কে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিরোধী দল ক্ষমতায় গেলে জাতীয় সম্পদ লুট করবে তাই এই অপব্যবহার রোধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করেছি। সংবাদপত্রে সরকারের বিরুদ্ধে যেসব লেখালেখি হচ্ছে তার বিরুদ্ধেও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য : সাংবাদিকরা নাকি তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছে তাদের ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য। তার কথা মেনে নিলে স্বীকার করে নিতে হয় শুধু সরকার বিরোধী রাজনীতিকরা নয় দেশের সাংবাদিকরাও সরকার বিরোধী প্রচারণা চালাচ্ছেন তাদের ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য। অর্থাৎ সকলেই অসাধু, একমাত্র তিনি ও তাঁর দলের লোকেরাই সাধু ও সৎ।
অথচ একটি পত্রিকায় (প্রথম আলো) গত মঙ্গলবারে প্রথম পৃষ্ঠায় একটি খবরের শিরোনাম ছিল : মন্ত্রীর পুত্র যখন খুনের আসামী। উপ-শিরোনাম ছিল : আজাদকে হত্যা করা হয় প্রকাশ্যে। এক মাস পর হাইকোর্টের নির্দেশে মামলা। মন্ত্রীর ছেলে আসামী তাই পুলিশ নিরব। গ্রেপ্তার নেই। বিচার নিয়ে অনিশ্চয়তা।
সরকারে অধিষ্ঠিতদের এই সব অন্যায় ভূমিকার বিরুদ্ধের ছোট বড় প্রায় অর্ধশত রাজনৈতিক দল সম্প্রতি যে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, তাতে সরকারী নেতাদের অনেকেরই যে মাথা ব্যথা শুরু হয়েছে সে কথা আগেই বলা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে বিরোধী দলকে শায়েস্তা করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নামের যে আইন সম্প্রতি চালু করা হয়েছে, সেটা বাতিল করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন।
তিনি আরও জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া গ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত করা হবে। এটা বাস্তবে সম্ভব হলে খুবই একটা বড় কাজ হবে। কিন্তু বাস্তবে কতটা সম্ভব হবে তা নিয়ে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের মধ্যে এখনও সংশয় রয়েছে।
এমন কথা কেন বলছি, তার কারণ বুঝতে হলে আমাদের দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির বাস্তববাদী বিশ্লেষণ প্রয়োজন রয়েছে। একথা অস্বীকার করবার কোন উপায় নেই যে, আওয়ামী লীগ বর্তমানে দেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল। ১৯৪৯ সালে যে সম্মেলনে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয় সে সম্মেলনের নাম ছিল পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগ কর্মী সম্মেলন। সে সম্মেলনে একজন সাংবাদিক (ভাষা আন্দোলন-খ্যাত সাপ্তাহিক সৈনিক-এর সহকারী সম্পাদক) হিসাবে আমার উপস্থিত থাকার সুযোগ হয়েছিল।
সে সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। সে সম্মেলনে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা-সাধারণ সম্পাদক জনাব শামসুল হক নতুন রাজনৈতিক দলের আদর্শ ও নীতি কী হবে সে সম্পর্কে ‘মূল দাবী’ নামের একখানি মুদ্রিত পুস্তিকা পাঠ করে শুনাচ্ছিলেন। এতে বেশ সময় লাগছিল। সে কারণে চট্টগ্রাম থেকে আগত ডেলিগেট ফজলুল কাদের চৌধুরী সভাপতির কাছে অন পয়েন্ট অব অর্ডার প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, আমরা এখানে এসেছি একটি সরকার বিরোধী দল গড়তে। এখানে এত আদর্শের কচকচানি কেন? মওলানা ভাসানী এতে ‘খামোশ’ বলে রাগত স্বরে বলে ওঠেন, মুসলিম লীগের আদর্শবিচ্যুতি ঘটায় জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পকেট মুসলিম লীগে পরিণত হয়েছে, তাই আমরা আমাজনগণকে সঙ্গে নিয়ে আদর্শের ভিত্তিতে আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠন করতে এসেছি। আদর্শ যদি কারো বদহজম হয় সে এ সভা থেকে চলে যেতে পারে। তেমন লোকের আমাদের কোন প্রয়োজন নেই।
এ কথার প্রতিবাদে ফজলুল কাদের চৌধুরী রাগে গটগট করতে করতে সম্মেলন থেকে ওয়াক আউট করে চলে যান। অত:পর মওলানা ভাসানীকে সভাপতি শামসুল হককে সাধারণ সম্পাদক, শেখ মুজিবুর রহমানকে (সভায় অনুপস্থিত, যুগ্ম সম্পাদক খন্দকার মোস্তাক আহমদকে সহকারী সম্পাদক এবং ইয়ার মোহাম্মদ খানকে কোষাধ্যক্ষ করে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের সাংগঠনিক কমিটি গঠিত হয়। পরবর্তীকালে সাধারণ সম্পাদক অসুস্থ হয়ে গেলে তাঁর স্থানে শেখ মুজিবুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। আরও পরে ‘মুসলিম’ শব্দ বাদ দিয়ে প্রতিষ্ঠানের নাম রাখা হয় পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ।
এখানে উল্লেখযোগ্য যে, আওয়ামী মুসলিম লীগের জন্মের পরও মুসলিম লীগ একটি স্বতন্ত্র নিক্রীয় রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে কিছু দিন টিকে ছিল। পরবর্তীকালে ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, কৃষক শ্রমিক পার্টি, নেজামে ইসলাম পার্টি প্রভৃতি দলের সমন্বয়ে গঠিত যুক্তফ্রণ্টের কাছে ভয়াবহ পরাজয় বরণের পর ধীরে ধীরে এক পর্যায়ে মুসলিম লীগ তার অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলে। সে হিসাবে ১৯৪৯ সালে জন্ম নেয়া পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ তথা আওয়ামী লীগই বর্তমানে দেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল বলা হয়ে থাকে।
আওয়ামী লীগ দেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক সংগঠন হলেও উপরে উল্লেখিত মুসলিম লীগ অথবা অন্য কোন দল দেশের দ্বিতীয় প্রধান রাজনৈতিক সংগঠন হিসাবে কৃতিত্ব দাবী করতে পারে না। সে কৃতিত্বের দাবীদার রাজনৈতিক দলটির নাম বাংলাদেশ ন্যাশানালিস্ট পার্টি তথা বিএনপি। এ দলটির প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়াউর রহমান, যিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাঁর জন্ম ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারী বগুড়ার বাগবাড়ি। করাচি একাডেমী স্কুল থেকে ১৯৫২ সালে ম্যাট্রিক পাস করে তিনি করাচি ডি. জে. কলেজে ভর্তি হন। ১৯৫৩ সালে জিয়া পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৫৫ সালে সেনাবাহিনীতে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট পদে কমিশন লাভ করেন। পাঞ্জাব রেজিমেন্টে দুই বছর চাকুরি করার পর ১৯৫৭ সালে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে তিনি বদলি হন। ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের সময় খেমকারান সেক্টরে সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ পরিচালনা করে তিনি সুনাম অর্জন করেন। সেই যুদ্ধে ফার্স্ট ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একটি কোম্পানীর নেতৃত্ব দেন। ১৯৬৬ সালে কাকুলস্থ পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমীর প্রশিক্ষক নিযুক্ত হন। ১৯৬৯ সালে জয়দেবপুরের দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের- সেকেন্ড ইন কম্যান্ড হিসাবে নিযুক্তি লাভ করেন। ১৯৭০ সালে অক্টোবরে চট্টগ্রামে নবগঠিত ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে একই পদে বদলি হন। এই পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় পূর্ববাংলার নিরাস্ত্র জনতার উপর পাক বাহিনীর সশস্ত্র আক্রমনের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করেন (২৬ মার্চ ১৯৭১)। ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ কালুর ঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে স্বাধীনতার ঐতিহাসিক ঘোষণা পাঠ করেন। মহানমুক্তি যুদ্ধ চলাকালে মুজিব নগর সরকার কর্তৃক সেক্টর কমান্ডার হিসাবে নিযুক্তি লাভ করেন। ১৯৭১ সালের আগস্ট মাসে রউমারিতে ১ম, ২য় ও অষ্টম বেঙ্গল রেজিমেন্টের জোয়ানদের নিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রথম ব্র্রিগেড গঠন করেন। এই ব্রিগেড পরে জেড ফোর্স হিসাবে পরিচিতি লাভ করে। ১৯৭২-এর ফেব্রুয়ারীতে কর্ণেল, ১৯৭৩-এর মাঝামাঝি ব্রিগেডিয়ার এবং ১০ অক্টোবর (১৯৭৩) মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কিছু সংখ্যক সৈন্যের হাতে রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হলে সামরিক আইন জারি হয় এবং খন্দকার মোস্তাক রাষ্ট্রপতি হন। এ বছর ২৫ আগস্ট জিয়াউর রহমান সেনাবাহিনীর চীফ অব স্টাফ পদে নিযুক্তি লাভ করেন। ৪ নভেম্বর ক্ষমতা দখলের দ্ব›েদ্ব ঢাকা সেনানিবাসের সংঘর্ষ বাধলে জিয়াউর রহমান সেনাবাহিনীর পদে থেকে ইস্তফা দেন। এই সংঘর্ষের ফলে খন্দকার মোস্তাক প্রেসিডেন্টের পদ থেকে পদচ্যুত হন এবং বিচারপতি আবু সাদাত সায়িম রাষ্ট্রপতি হন। এরপর ৭ নভেম্বর সিপাহী জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জিয়াউর রহমান চীফ অব স্টাফ পদে পুনরায় প্রত্যাবর্তন করেন এবং উপপ্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৭৬ সালের ৯ আগস্ট কলম্বোতে জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের সম্মেলনে যোগদান করেন।
১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন। ঐ বছরে জাতীয় উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করে তাঁর এই কর্মসূচির প্রতি জনগণের আস্থা যাচাইয়ের জন্য গণভোটের আয়োজন করেন। গণভোটে তার কর্মসূচির প্রতি জনগণের বিপুল সমর্থন ব্যক্ত হয়।
১৯৭৮ সালে আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী জেনারেল ওসমানীকে পরাজিত করে জিয়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিষ্ঠা করেন এবং তাঁর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও শান্তি প্রতিষ্ঠায় তার বিপুল অবদান ছিল। ১৯৮১ সালের ১২ মে ইসলামিক মিশনের পক্ষে ইরাক-ইরান যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্য তিনি বাগদাদ ও তেহরান সফর করেন এবং দুই মুসলিম দেশের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হন।
রাষ্ট্রীয়-ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার অল্প দিনের মধ্যে নিজেকে একজন পরিশ্রমি ও জনপ্রিয় জননেতা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন। সামরিক শাসন থেকে দেশকে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় উত্তরণে তাঁর কৃতিত্বের পরিচয় ঐতিহাসিক।
বর্তমানে বাংলাদেশে যে দুটি রাজনৈতিক দল প্রধান সংগঠন হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করেছে, তার মধ্যে আওয়ামী লীগের পরই যে তাঁর প্রতিষ্ঠিত বিএনপির স্থান, এটা জেনারেল জিয়ার কৃতিত্বের স্বাক্ষর বহন করে। এর কারণ দেশের প্রতি তাঁর অকৃতিম ভালবাসা এবং দেশের উন্নতির জন্য পরিশ্রম করতে সদা প্রস্তুত থাকা।
দু:খের বিষয় বাংলাদেশের উন্নতির জন্য যে দুই মহান নেতা সব চাইতে বেশী আন্তরিক ছিলেন সেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং শহীদ জিয়াউর রহমান দুজনকেই ঘাতকের হাতে জীবন দিতে হয়েছে এবং অদ্যাবধি তার সুষ্ঠু বিচার হয়নি এবং কোনদিন যে তার সুষ্ঠু বিচার হবে তার নিশ্চয়তাও নেই। আরও দু:খের বিষয় বর্তমানে দেশের প্রধান দুটি দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে পরস্পর কুৎসা রটনা ও সমালোচনা একটা নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ অনেকেই জানেন না তারা দুজন পরস্পরকে যথেষ্ট আপন মনে করতেন। পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর মধ্যে শেখ মুজিবকে অধিকাংশ বাঙ্গালী সৈনিকের মত জিয়াও অত্যন্ত শ্রদ্ধা করতেন। বিশ্বস্ত সূত্রে শুনেছি, এক অবাঙালী সৈনিক একবার শেখ মুজিবের নিন্দা করায় জিয়া তার উপর দৈহিক ভাবেও চড়াও হন। অপর পক্ষে জিয়ার সৈনিক জীবনের প্রমোশন অনেকটাই হয় বঙ্গবন্ধুর শাসনআমলে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Billal Hosen ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৯:৩৮ এএম says : 0
ইসলামের দৃষ্টিকোণে দুনিয়ায় মানুষের প্রাণ হরণ কিংবা জীবন নাশের চেয়ে বড় অপরাধ আর হয় না। পবিত্র কুরআনে তাই একজন মানুষের হত্যাকে পুরো মানবজাতির হত্যা বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন, ﴿ مَن قَتَلَ نَفۡسَۢا بِغَيۡرِ نَفۡسٍ أَوۡ فَسَادٖ فِي ٱلۡأَرۡضِ فَكَأَنَّمَا قَتَلَ ٱلنَّاسَ جَمِيعٗا وَمَنۡ أَحۡيَاهَا فَكَأَنَّمَآ أَحۡيَا ٱلنَّاسَ جَمِيعٗاۚ ﴾ [المائ‍دة: ٣٢] ‘যে ব্যক্তি কাউকে হত্যা করা কিংবা যমীনে ফাসাদ সৃষ্টি করা ছাড়া যে কাউকে হত্যা করল, সে যেন সব মানুষকে হত্যা করল। আর যে তাকে বাঁচাল, সে যেন সব মানুষকে বাঁচাল’। {সূরা আল-মায়িদা, আয়াত : ৩২} মানুষের প্রাণহানী ঘটানোকে যেখানে বলা হয়েছে পুরো মানব জাতিকে হত্যার সমতুল্য, সেখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকে গণ্য করা হয়েছে হত্যার চেয়েও জঘন্য অপরাধ হিসেবে। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন, ﴿ وَٱلۡفِتۡنَةُ أَشَدُّ مِنَ ٱلۡقَتۡلِۚ ﴾ [البقرة: ١٩١] ‘আর ফিতনা হত্যার চেয়ে কঠিনতর’। {সূরা আল-বাকারা, আয়াত : ১৯১}
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন