রাজশাহীর তানোরে একদল প্রতারক ১শ টাকার লটারিতে আকর্ষণীয় পুরষ্কার দেবার নামে গ্রামীণ নারীদের কাছে লটারি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু লটারিতে পুরষ্কার পাবার পর ১হাজার ৫০০ থেকে ২হাজার বা পন্যের সমপরিমাণ মূল্য আদায় করে দেয়া হচ্ছে পুরষ্কার।
অথচ লটারি বিক্রির সময় পণ্য নেবার ক্ষেত্রে কোন ধরনের টাকা লাগবেনা বলে একাধিক লটারি কাটা ব্যক্তিদের জানানো হয়। এমন অভিনব প্রতারণার ব্যবসার ফাঁদ খুলেছে তানোর পৌর সদর এলাকায় গুবিরপাড়া পার হয়ে সেতুর পার্শ্বে অবস্থিত আলম নামের এক ব্যাক্তির বাড়িতে।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, সুদূর ফরিদপুর জেলার বাগ্যাট উপজেলার নগরকান্দা গ্রামের আওলাত মাতবরের পুত্র জুবায়ের এবং একই জেলার ভাংগা উপজেলার মুনসুরাবাদ গ্রামের সিদ্দিক মোল্লার পুত্র রাকিব। এরা দুই জন লটারির ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন।
তাঁরা রাজধানী ঢাকা নবাবগঞ্জ হেড অফিসের নাম ব্যবহার করে মারিয়া ইলেকট্রনিক্স নামের কোম্পানির বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পণ্য দেবার কথা বলে লটারি বিক্রি করছেন একেবারেই গ্রামীণ অঞ্চলে। লটারিতে পণ্য দেয়া আছে প্রায় ২২টির মত। বিক্রির সময় লটারিতে বাধা পুরষ্কার নিতে কোন ধরনের টাকা লাগবেনা বলে হাজার হাজার লটারি বিক্রি করে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখলাখ টাকা। লটারির গায়ে বিভিন্ন নামিদামি পন্য উল্লেখ করা আছে।
গত বৃহস্পতিবারে ওই বাড়িতে অবস্থিত অফিসে গিয়ে দেখা যায়, ধানতৈড় গ্রামের লটারি কাটা ব্যক্তি তারেক একটি মোবাইল ফোন পেয়েছেন। তিনি জানান শুধু আমি না। প্রায় দিন লটারিতে বাধা পুরষ্কার নিতে আসলে পণ্যের দাম দিয়ে পুরষ্কার নিতে হবে। তাছাড়া দিবে না। অথচ লটারি বিক্রির সময় বলা হয়েছিল লটারিতে যে পুরষ্কার থাকবে বিনামূল্যে সেটা দেয়া হবে ।
ম্যানেজারের দায়িত্বে থাকা জুবায়ের জানান, আমরা লটারি বিক্রির সময় বলেছি পণ্য নিতে টাকা লাগবে। সাথে সাথে তারেক সহ কয়েকজন মহিলা তার উপর চড়াও হয়ে বলে কখনো এধরনের কথা বলা হয়নি। বললে ১শ টাকা দিয়ে লটারি কিনব কিসের জন্য। যেখানে ২০ টাকার লটারিতে পাওয়া যায় ২লাখ টাকার বাইক ।
ম্যানেজারের কাছে জানতে চাওয়া হয় এপর্যন্ত কতটা লটারি বিক্রি হয়েছে তিনি জানান ২০ হাজার মত হবে। পণ্য নিয়েছে কতজন তিনি জানান একজনও নিতে আসেন নি। আপনারা কোন অনুমতির ভিত্তিতে এমন প্রতারণা করছেন। এ কোন উত্তর দেননি তিনি।
লটারি কাটা একাধিক ব্যক্তিরা জানান, তাঁরা কোন সদর এলাকায় লটারি বিক্রি করছেনা। তাঁরা একেবারেই গ্রামীণ এলাকায় গিয়ে নারীদের মাঝে মিথ্যা কথা বলে লটারি বিক্রি করছেন এবং তাদের চেহারাগুলো মারাত্মক সন্দেহের।
এনিয়ে তানোর থানার (ওসি) তদন্ত রাকিবুল হাসান জানান, আলমের বাড়িতে ফরিদপুর জেলা থেকে এসে লটারির মাধ্যমে সাধারন মানুষের সাথে প্রতারনা করছেন। এমন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে পুলিশ ফোর্স পাঠিয়ে একজনকে আটক করে নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাদেরকে আর্থিক জরিমানা করে। এবং এধরনের ব্যবস্যা করবেনা বলে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়। নির্বাহী অফিসার চৌধুরী মোঃ গোলাম রাব্বীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এধরনের ব্যবসার কোন সুযোগ নেই। তাই তাদেরকে জরিমানা করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এর পরেও এধারনে অনৈতিক ব্যবস্যা করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন