শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

অপরাধীদের হাতে বৈধ সিম

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৮ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৫ এএম

অনুমতি ছাড়া ৪২টি কোম্পানির নামে উত্তোলন করা সিম অবৈধভাবে অপরাধীদের কাছে বিক্রি করে আসছিল একটি চক্র। গ্রামীণফোনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ সিমগুলো একটিভ করে দিতেন। প্রত্যেকটি সিম বিক্রি হতো পাঁচশ টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে অবৈধভাবে সিম উত্তোলন ও বিক্রির অভিযোগে গ্রামীণফোনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ (বিজনেস সেলস) সৈয়দ তানভীরুর রহমান ও প্রতারকচক্রের আরেক সদস্য মো. তৌফিক হোসেন খান (পলাশ) কে গ্রেফতার ও জিজ্ঞাসাবাদের পর এসব তথ্য জানিয়েছে র‌্যাব। তাদের কাছ থেকে ৫৫৩টি সিম, বায়োমেট্্িরক রেজিস্ট্রেশনের কাজে ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ ও নয়টি ট্যাব উদ্ধার করা হয়। গতকাল রোববার দুপুরে কারওয়ান বাজারস্থ র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির সাংবাদিকদের বলেন, বায়োমেট্টিক পদ্ধতিতে সিম রি- রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম শুরুর পর মোবাইল ফোনে হুমকি ও চাঁদাবাজি কমে আসছিল। সহজেই ধরাও পড়ছিল অপরাধীরা। কিন্তু স¤প্রতি বেশ কিছু অভিযোগ আসার পর তদন্তে নামে র‌্যাব-৪। গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ভাসানটেক থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন এক শ্রীলঙ্কান নাগরিক। অভিযোগে তিনি বলেন, গ্রামীণফোনের দুটি নাম্বার থেকে (০১৭৮৯৮২২১৮৯ ও ০১৭৫৫ ৫৯৩২৯১) তার কাছে ১০ কোটি টাকা চাঁদা চাওয়া হয়। চাঁদার টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেয়া হয়। র‌্যাব ওই সাধারণ ডায়েরির তদন্ত করতে গিয়ে জানতে পারে চাঁদা ও হত্যার হুমকিতে ব্যবহৃত সিম দুটি ‘মাইক্রোকডেস ইনফরমেশন’ নামক একটি সংস্থার অনুকূলে রেজিস্ট্রিকৃত এবং তৌফিক হোসেন খান পলাশের মালিকানাধীন ‘মোনাডিক বাংলাদেশ’ নামে ডিস্ট্রিবিউশন হাউসের মাধ্যমে ইস্যুকৃত। আর ওই সিম ডিস্ট্রিবিউশন হাউসের তদারকির দায়িত্বে ছিলেন গ্রামীণফোনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ (বিজনেস সেলস) সৈয়দ তানভীরুর রহমান।
তিনি বলেন, অন্য প্রতিষ্ঠান কিংবা কোম্পানির নামে অগোচরে অবৈধভাবে সিম উত্তোলন করার বিষয়টি নিশ্চিত হবার পর জড়িত ওই দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের ধরতে অভিযান পরিচালনা করে অবৈধভাবে ৪২টি প্রতিষ্ঠানের নামে উত্তোলিত ও একটিভ করা মোট ৮৬৭ সিম উদ্ধার করা হয়।
অতিরিক্ত ডিআইজি চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির আরো বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার দুজন জানান, উদ্ধার করা সিমগুলো ওই ৪২টি প্রতিষ্ঠানের অগোচরে একটিভ করা হয়েছিল। যা ওই ডিস্ট্রিবিউশন হাউসের সহায়তায় গত ১১ জুন গ্রামীণফোন প্রতিনিধি তানভীর রহমান প্রত্যক্ষ তত্ত¡াবধানে অ্যাকটিভেট করা হয়। র‌্যাব-৪ সিও বলেন, ব্যক্তিগতভাবে সিম উত্তোলন করতে হলে ফিঙ্গারপ্রিন্ট লাগে, সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি। কিন্তু কোনো প্রতিষ্ঠানের নামে সিম উত্তোলন করতে হলে একটি ফিঙ্গারপ্রিন্টে একাধিক সিম উত্তোলন সম্ভব। সেই সুযোগটাই নিয়েছে প্রতারকচক্র। ওই সিমগুলো সাধাণত চাঁদাবাজিতে জড়িত অপরাধচক্রের হাতে পৌঁছে যেত। অনেকে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায় ব্যবহার করে থাকেন এ ধরনের সিম। আর ৫০০ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করত এই অপরাধীচক্রের সদস্যরা। র‌্যাব-৪ অধিনায়ক বলেন, আমরা গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে ভাসানটেক থানায় প্রচলিত আইনে মামলা ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ড চাইব। এই প্রতারকচক্রের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন