আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ২১ আগস্ট চালানো গ্রেনেড হামলার মামলার রায় আজ। দীর্ঘ ১৪ বছর ৪৮ দিনের অপেক্ষা শেষ হচ্ছে। এই রায়কে ঘিরে কোন ধরনের নৈরাজ্য-নাশকতা যেন সৃষ্টি না হয় সেজন্য সতর্ক রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের পাশাপাশি সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও। আজ ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত রাজপথে সক্রিয় অবস্থান নেবে নেতাকর্মীরা। রায় ঘোষণা থেকে রাত পর্যন্ত বিএনপি ও তাদের মিত্রদের গতিবিধি লক্ষ্য করে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেবে সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি এই রায়কে কেন্দ্র করে যদি কোনও সমস্যা তৈরি করতে চায়, যদি সহিংস নাশকতা করতে চায় তাহলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, এই মামলার রায় নিয়ে বিএনপি এখন থেকে বড় ধরনের নাশকতা ও সহিংসতার পরিকল্পনা নিচ্ছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কঠোর অবস্থানে আছে। কিন্তু তারা ভুলে গেছে এটা ২০১৪ সাল নয়, এখন ২০১৮ সাল। সেই ধরনের কোনও অপচেষ্টা হলে প্রতিরোধ করবে দেশের জনগণ।
দলীয় সূত্র জানায়, আজ সকাল থেকেই ধানমণ্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবস্থান নেবেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। এখান থেকে রায় এবং রায় পরবর্তী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন। এছাড়া কেন্দ্র থেকে তৃণমূল আওয়ামী লীগকে সতর্ক থাকতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ঢাকাসহ জেলা উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান নেবে আওয়ামী লীগ।
এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক সাইফুল্লাহ সাইফুল ইনকিলাবকে বলেন, প্রত্যেক থানা সংগঠনকে বলা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সকাল থেকে অবস্থান নিতে। কোন নাশকতা হলে নিজেদের হাতে আইন না তুলে বরং আইন-শৃংখলাবাহিনীকে তথ্য দিয়ে ও সরাসরি সহায়তা করতে বলা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, বিএনপির অবস্থান দুর্বল কিন্তুশত্রæকে খাটো করে না দেখাই ভাল। ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আকতার হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, যে কোন ধরণের নাশকতা মোকাবেলায় নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। এদিকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের ২৪ টি সাংগঠনিক থানা, ৭৫টি ওয়ার্ড ও ৪৫০ টি ইউনিট কমিটির নেতারা আগামীকাল ভোর থেকে রাজপথে সক্রিয় থাকবে। যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ সুত্র জানায়, ভোর থেকেই নেতাকর্মীরা পাড়া-মহল্লা, বাস স্ট্যান্ড, গুরুত্বপূর্ণ এলাকা, মোড়ে অবস্থান নেবে যুবলীগের নেতাকর্মীরা।
গুলিস্তানে খোলা হবে মনিটরিং সেল। এই সেলের মূল মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকবেন যুবলীগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী স¤্রাট। বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা যেখানেই নাশকতা-সন্ত্রাস করার চেষ্টা করবে সেখানেই জনগণকে সাথে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ইনকিলাবকে বলেন, রায় ঘোষণার পর বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা যদি নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করে তাহলে জনগণকে সাথে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলবো। কোন অপরাধী গোষ্ঠি বা সন্ত্রাসীকে নৈরাজ্য করার সৃষ্টির সুযোগ দেব না।
চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান জানান, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায় উপলক্ষে আজ নগরীর ১৭ স্পটে অবস্থান নেবে মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তবে বিএনপির কোন কর্মসূচি নেই। দলের নেতারা বলছেন, রায় দেখে প্রতিক্রিয়া জানাবেন তারা।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন জানিয়েছেন, গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কেউ যাতে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য নেতাকর্মীরা সতর্ক থাকবে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ১৭টি স্পটে নেতাকর্মীদের অবস্থান করতে বলা হয়েছে।
১৭ স্পটগুলো হলো- দারুল ফজল মার্কেট চত্বর, পশ্চিম মাদারবাড়ি, আন্দরকিল্লা মোড়, জামালখান, ৩২ নম্বর ওয়ার্ড কার্যালয় ও অক্সিজেন মোড়, এনায়েত বাজার, পূর্ব মাদারবাড়ি, আলকরণ, ফিরিঙ্গিবাজার, পাথরঘাটা, দেওয়ানহাট মোড়, পাহাড়তলী, লালখান বাজার, উত্তর পাঠানটুলী ও আগ্রাবাদ ওয়ার্ড।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন