শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যবসা বাণিজ্য

বাড়তি ‘নগদ’ লেনদেনে মানি লন্ডারিং ঝুঁকি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ২১ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

প্রচলিত নীতিমালার চেয়ে বেশি মাত্রায় লেনদেন সীমা নিয়ে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে ‘নগদ’। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ ও থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস নামের একটি প্রতিষ্ঠানের যৌথ অংশীদ্বারিত্বের ভিত্তিতে পরিচালিত এই সেবায় মানি লন্ডারিং এর ঝুঁকি দেখছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে।

দেশের সব অর্থনৈতিক লেনদেন বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্তাবধানে ও নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হলেও প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রথমবারের মত বাংলাদেশ ব্যাংকের আওতার বাইরে বড় লেনদেনের সেবা চালু করতে যাচ্ছে নগদ। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মতো একই ধরনের সেবা হলেও নগদের কার্যক্রম পরিচালিত হবে পোস্টাল অ্যাক্ট অনুসারে। ফলে প্রযুক্তি ব্যবহার করে সহজে যেসব মানি লন্ডারিং হয়ে থাকে সেগুলো বন্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপের বাইরে থাকবে প্রতিষ্ঠানটি।

সূত্র মতে, প্রচলিত ব্যবস্থায় একজন গ্রাহক দিনে দুই বারে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা উত্তোলন এবং ১৫ হাজার টাকা জমা করতে পারে। লিমিট বা সীমা নির্ধারনের ফলে মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে অপরাধমূলক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রনে সাফল্য আসে। তবে তৃতীয় পক্ষদ্বারা পরিচালিত ‘নগদ’ সেবায় একজন গ্রাহক দিনে সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা ১০ বারে জমা ও উত্তোলন করতে পারবে। একবারে সর্বোচ্চ লিমিট হবে ৫০ হাজার টাকা। সেন্ড মানি বা টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রেও বাড়তি ধরনের সুবিধা ভোগ করবে এই সেবা।

২০১৭ সালের আগে মোবাইলের মাধ্যমে লেনদেন বা এমএফএস লেনদেনে সীমা নির্ধারিত ছিল ২৫ হাজার টাকা। ফলে একটি নির্দিষ্ট চক্র নানান অসাধু উপায়ে এই মাধ্যমটি ব্যবহার করে মানি লন্ডারিং এর মত অপরাধে জড়িয়ে পড়ছিল। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে মোবাইলের মাধ্যমে লেনদেনের সীমা বা লিমিট নির্ধারণ করে দেয়। নগদ-এ এই সীমার বাইরে লেনদেনের সুযোগ থাকায় অসাধু চক্রের মাধ্যমে মানি লন্ডারিং এবং অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকান্ডে এই সেবার অপব্যবহারের ঝুঁকি দেখছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাছাড়া বিদেশ থেকে অবৈধ পথে রেমিটেন্স আসার পথ সুগম করবে বলে মতামত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এই সেবা নিয়ে কাজ করা একটি ব্যাংকের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা বলেন, ‘একই ধরনের সেবায় একেক প্রতিষ্ঠানের জন্য একেক ধরনের সেবা নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে এবং সুষ্ঠু ব্যবসায়িক পরিবেশকেও ক্ষতিগ্রস্থ করবে। দেশের বিপুল সংখ্যক নিম্নআয়ের মানুষের আর্থিক অর্ন্তভুক্তিতে অবদান রাখা দ্রুত বর্ধনশীল এমএফএস খাতকে ও ক্ষতিগ্রস্থ করবে। লেনদেনের অতিরিক্ত সীমার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, সারা পৃথীবিতেই অর্থনৈতিক লেনদেন করে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোকে এন্টি মানি লন্ডারিং বিধি বিধান মেনে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের অধীনে পরিচালিত বাংলাদেশ পোস্ট অফিস প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে রেগুলেটেড নয় উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, অর্থ লেনদেনের প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘নগদ’ এর ব্যতিক্রম হওয়া উচিত নয়। এই চ্যানেলের লেনদেন বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত¡বধানেই হওয়া উচিৎ।

থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিসের হেড অব কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, ‘নগদ’ বাংলাদেশ ব্যাংকের অনাপত্তি পত্র (নো অবজেকশন লেটার) নিয়ে বাংলাদেশ পোস্টাল অ্যাক্ট অনুসারে পরিচালিত হচ্ছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট ডিপার্টমেন্ট এর জেনারেল ম্যানেজার লীলা রশীদ জানান, তারা ‘নগদ’ এর জন্য এ ধরনের কোন অনাপত্তি পত্র বা লাইসেন্স ইস্যু করেনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন