নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে লক্ষ্মীপুরের রামগতির মেঘনা নদীতে জেলেরা মাছ ধরছে। এ নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের তৎপরতা থাকলেও তা যেন আশানুরূপ কাজে আসছে না। বলা চলে, নদীতে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পাহারা দিচ্ছে জেলেরা। ফলে ইলিশ রক্ষায় সরকারের পদক্ষেপ পন্ড হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
যদিও নিষেধাজ্ঞার ১৯ দিনে ৩০ জেলেকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৫ জেলেকে জরিমানা ও কারাদন্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। নদীতে যাওয়া এসব জেলে জেল-জরিমানাকে ছোট বিষয় বলে মনে করেন। জেলেরা বলছেন, তারা আশানুরূপ খাদ্য সহায়তা পাচ্ছেন না। সরকারি যে সহায়তা বরাদ্দ আসছে, তা নিয়েও জনপ্রতিনিধিরা স্বজনপ্রীতি করছেন। টাকার বিনিময়ে তারা অন্য পেশার ব্যক্তিদের খাদ্য সহায়তা তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করছেন। মহাজনের ঋণের টাকা পরিশোধ ও পরিবারের সদস্যদের মুখে খাবার তুলে দিতে বাধ্য হয়েই জেলেরা নদীতে যাচ্ছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর লক্ষ্মীপুরের রামগতি থেকে চাঁদপুরের ষাটনল পর্যন্ত মেঘনায় সকল প্রজাতির মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে মাছ শিকারে যাচ্ছে জেলেরা। ভোলা, নোয়াখালী ও রামগতির জেলেরা নদীতে ইলিশ শিকার করছে। এতে রামগতি উপজেলা প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ ও কোস্টগার্ড অভিযান চালিয়ে ৩০ জেলেকে আটক করে।
এর মধ্যে তিন জেলেকে অর্থদন্ড, ২২ জনকে ২০ দিন ও এক মাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়। অপর পাঁচ জেলের বয়স কম হওয়ায় মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রফিকুল হকের ভ্রাম্যমাণ আদালত এসব দন্ড দেন। রামগতি উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, জেলেদের সচেতন করতে ব্যাপকভাবে প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছি। অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গত ১৯ দিনে আটক ৩০ জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে জেল-জরিমানা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশের ভরা প্রজনন মৌসুম। টানা ২২ দিন লক্ষীপুরের রামগতি থেকে চাঁদপুরের ষাটনল পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার মেঘনায় এলাকায় সকল প্রজাতির মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। এ সময় মাছ শিকার, পরিবহন, মজুত, বাজারজাতকরণ ও বিক্রি নিষিদ্ধ। এ আইন অমান্য করলে জেল-জরিমানা এবং উভয় দন্ডের বিধান রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন