নরসিংদীতে পাষণ্ড ছেলের হাতে ফজলুল করিম (৫৫) নামে পিতা খুনের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার সকালে শহরের চৌয়ালা নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ফজলুল করীম চৌয়ালা এলাকার লাল মাহমুদের ছেলে। এ ঘটনায় নিহতের বড় ছেলে মাসুম মিয়া (২৮) আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবৎ নিহত ফজলুল করীম চৌয়ালা মার্কেটে মুদি মালের ব্যবসা করতো। আর তা দিয়েই ফজলুল করীম তিন ছেলে ও তিন মেয়েকে নিয়ে তার সংসার চলতো। কিন্তু গত প্রায় ৬ বছর আগে নিহতের প্রথম পক্ষের স্ত্রী মারা গেলে তিনি আবার বিয়ে করেন। কিন্তু তাতে বাধা দেয় নিহতের মেঝো ছেলে মাসুম মিয়া। মাসুম চাইতো তার বাবা ফজলুর করীম যেন তার সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা করে দেয়। কিন্তু ফজলুর করীম তা করতে চায়নি। এই নিয়ে মাসুম প্রায়ই তার সৎ মায়ের উপর নির্যাতন করতো। তার নির্যাতনের মাত্রা সইতে না পেরে ফজলুল করীম তার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীকে প্রায় ৭ মাস তার বাবার বাড়িতে রাখে। পরবর্তীতে মাসুম কিছুটা শান্ত হলে তিনি তার স্ত্রীকে বাপের বাড়ি থেকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসে। কিছুদিন যেতে না যেতেই মাসুম আবার তার সৎ মায়ের উপর অত্যাচার শুরু করে মাছুম। এই নিয়ে তার পিতার সাথে গত প্রায় দেড় বছর আগে বাগবিতন্ডা হলে মাসুম তার বাবার মাথায় আঘাত করেন। গুরুতর অবস্থায় ফজলুল করীমের বাড়ির লোকজন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখান থেকে সুস্থ হয়ে আসলে ফজলুল করীম তার ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। কারাগারে বেশ কিছুদিন থাকার পরে তার স্ত্রী (পরিবারের) অনুরোধে তিনি তার ছেলেকে জেল থেকে বের করেন। জেল থেকে বের হয়ে কিছু দিন যেতে না যেতেই সে আবার তার আগের রূপ ধারন করে। প্রায়ই তার সৎ মায়ের সাথে ঝগড়া করতো। পরবর্তীতে গত প্রায় পনের দিন আগে ফজলুর করীমের শ্বশুর অসুস্থ হয়ে পড়লে তার স্ত্রী তার বাবার বাড়িতে যায়। তখন থেকে তিনি সেখানেই থাকতেন। কিন্তু ফোনে সব সময়ই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যোগাযোগ ছিলো। ফজলুল করীমের স্ত্রী স্বপ্না তার সৎ ছেলে মাসুমের ভয়ে তাকে প্রায়ই বলতো আমি যখন বাড়িতে নেই আপনি বাড়িতে থাকবেন না। আপনি দোকানে বা অন্য কোথাও থাকেন । ফজলুর করীমও প্রান ভয়ে এমনই করতো। কিন্তু তার মেয়ের জামাই বিদেশ থেকে আসার কথা ছিলো শুক্রবার দুপুরে। তাই তিনি সকালে বাড়িতে যান নিজে তৈরি হয়ে মেয়ের জামাইকে আনতে হবে। কিন্তু তার আর যাওয়া হলো না। তিনি যখন বাড়ি থেকে বের হয়ে অটোতে উঠবেন ঠিক তখন তার পাষন্ড ছেলে মাসুম পেছন থেকে সাবল দিয়ে তার ঘাড়ে ােকপ দেয়। আর ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন