বাহরাইনের শাহি পরিবারের এক ধনকুবের সদস্যের বিরুদ্ধে পাওনা টাকা না দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। ২৬ জন বলিউড তারকার সাথে সাক্ষাতের জন্য তার সাড়ে ৩ কোটি ডলার প্রদানের কথা ছিল। মামলাটি করেছেন মিসরীয় দালাল আহমেদ আবদেল আবদাল্লাহ আহমেদ।
লন্ডনের একটি আদালতে দায়ের করা মামলার অভিযোগে বলা হয় যে, বাহরাইনের বিলিওনেয়ার শাসকের জ্ঞাতি ভাই ও দেশের উপ-প্রধানমন্ত্রীর ভাইয়ের ছেলে শেখ হামাদ ইসা আলি আল-খলিফা প্রতিজন বলিউড তারকার সাথে সাক্ষাত করানোর জন্য উক্ত মিসরীয় দালালকে ১৫ লাখ ডলার করে দিতে সম্মত হন। প্রতি তৃতীয় সাক্ষাতের জন্য তাকে ৫ লাখ ডলার করে বোনাস দেয়ার কথা ছিল।
দালাল আহমেদ মামলার অভিযোগে বলেন, শেখ তাকে মাত্র ৩০ লাখ ডলার দিয়ে চুক্তি থেকে সরে যান। আহমেদ এ ঘটনায় চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ এনেছেন ও ২ কোটি ৯০ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
শেখ খলিফা মিস ওয়ার্ল্ড ১৯৯৪ ঐশ্বর্য রাই ও স্লামডগ মিলিওনেয়ার তারকা অনিল কাপুরসহ বলিউড তারকাদের সাথে সাক্ষাতের জন্য লাখ লাখ ডলার প্রদানের প্রতিশ্রুতির কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি স্বীকার করেন যে, তিনি এসব তারকার সাথে সাক্ষাতের ব্যাপারে খুবই আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু ব্যক্তিগত সাক্ষাতের জন্য ৩০ হাজার ডলার থেকে ৫০ হাজার ডলার দিতে হবে বলে তিনি আশা করেছিলেন।
হাইকোর্টে সাক্ষ্য প্রমাণ দেয়া এবং বলিউড তারকাদের সাক্ষাতের তার উদগ্র ইচ্ছার বিষয় ব্যাখ্যা করার জন্য বৃহস্পতিবার তাকে ডাকা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আদালতে দাখিল করা কাগজপত্রে বলা হয়েছে যে, শেখ এসব সাক্ষাতের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ দিতে রাজি হয়েছিলেন। এমনকি তা ১৫ মিনিটের সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য হলেও। প্রতি সাক্ষাতকারের জন্য ১৫ লাখ ডলার হিসেবে মাত্র ১৫ মিনিটের সংক্ষিপ্ত সাক্ষাতের জন্য তার প্রতি মিনিটের ব্যয় দাঁড়ায় ১ লাখ ডলার।
আহমেদ দাবি করেছেন যে, শেখের সাথে উপর্যুপরি ফোনে ও বাহরাইনে তার ভিলায় ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাত করে তিনি বিশদ ব্যবস্থা করেন। মঙ্গলবার আদালতে দাখিল করা কাগজপত্রে তিনি বলেন, আমি বিবাদিকে বলেছি যে, টেলিফোনে আমি শুনেছি, বলিউড তারকাদের সাথে সাক্ষাতকারের সময় হতে হবে কমপক্ষে ১৫ মিনিট এবং সর্বোচ্চ ২৫ মিনিট যদি তারা এর বেশি সময় থাকতে না চান।
শেখ এসআরকে নামে পরিচিত ও মিডিয়াতে বলিউড কিং নামে খ্যাত শাহরুখ খানসহ ৪ বলিউড তারকার সাথে সাক্ষাত করেন। বাকিরা হলেন আদিত্য রায় কাপুর, সালমান খান ও রনবীর সিং।
আহমেদের আইনজীবীরা বলেন, শেখ ১৬ জানুয়ারি নগদ ৪ লাখ ডলার নিয়ে মুম্বাইয়ের একটি পাঁচতারা হোটেলে শাহরুখ খানের সাথে সাক্ষাত করেন। দু’দিন পর তিনি আহমেদকে বাকি অর্থ একটি ডার্ক গ্রে স্যামসোনাইট স্যুটকেসে করে ৬ লাখ পাউন্ড ও ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার নগদ প্রদান করেন। আদালতে প্রমাণ হিসেবে স্যুটকেসের ছবি দাখিল করা হয়।
এ সাক্ষাতের পর তিনি আহমেদকে মেসেজ পাটান এ বলে যে, প্রিয় ভাই, এ সাক্ষাতের ব্যবস্থা ও আমাকে খুশি করার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ। তোমার জন্য সব সময় ভালোবাসা ভাই। নতুন সাক্ষাতের যোগাযোগের সাফল্য কামনা করি। বৃহস্পতিবার দেখা হবে। এইচ।
আহমেদ জবাব দেন, আপনাকে সব সময় স্বাগত প্রিয় ভাই। আমি আপনাকে খুশি করার জন্য সব সময় চেষ্টা চালাব ইন শা আল্লাহ। সুপারস্টার সালমান খানের সাথে সাক্ষাত নিশ্চিত করতে সব চেষ্টাই করব। শাহরুখ খানের সাথে সাক্ষাতের মত আপনার এ স্বপ্নও পূরণ হবে।
আহমেদের আইনজীবীরা বলেন, এসব বিষয়ে ব্যাপক ছবি রয়েছে। তিনি তাদের হ্যারডস থেকে নিজের কিনে আনা উপহার তাদের দিয়েছেন। এ চুক্তি তিক্ততায় রূপ নেয় যখন দেখা গেল যে, এসব সাক্ষাতের জন্য শেখ কী বিপুল অর্থ ব্যয় করেছেন। আহমেদ বলেন, এসব সাক্ষাতের খরচ ছিল বিপুল। যেহেতু তিনি মুম্বাইর সেন্ট রেজিস হোটেলের ১৬ তলার অর্ধেকটাই ভাড়া করেছিলেন। আমি তার জন্য প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুট বুক করেছিলাম। সব মিলিয়ে হোটেলের ১০টি বা ১১টি রুম আমি বুক করেছিলাম।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন