বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যবসা বাণিজ্য

রেমিট্যান্সে নগদ প্রণোদনা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

প্রবাসী আয়ের আহরণ বাড়াতে রফতানির মতো রেমিট্যান্সে নগদ প্রণোদনা দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। সম্প্রতি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এ-সংক্রান্ত একটি সুপারিশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চিঠি দিয়েছে। বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দাবি, যে হারে বিদেশে জনশক্তি রফতানির বেড়েছে সে অনুযায়ী রেমিট্যান্স বাড়েনি। এর মূল কারণ বৈধ চ্যানেলের তুলনায় অবৈধ চ্যানেলে ডলারের বিনিময় হার বেশি। তাই রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে রফতানির মতো এ খাতেও নির্ধারিত হারে প্রণোদনা দেয়া প্রয়োজন।

বাংলাদেশ ব্যাংকে দেয়া মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে বিশ্বের ১৬৫টি দেশে এক কোটিরও বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মরত রয়েছেন। ২০০৯ সালে ৪ লাখ ৭৫ হাজার কর্মী বিদেশে যান। গত বছর গেছেন ১০ লাখের বেশি। বিদেশে যে পরিমাণ কর্মসংস্থান হচ্ছে, বৈধ রেমিট্যান্স প্রবাহে তা পুরোপুরি প্রতিফলিত হচ্ছে না। ব্যাংকের চেয়ে অবৈধ চ্যানেলে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার কিছুটা বেশি থাকায় সামান্য লাভের আশায় অনেকে সেদিকে যাচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতে রফতানির মতো করে রেমিট্যান্সে নগদ প্রণোদনা দেয়া যেতে পারে।

পাশাপাশি বেশি রেমিট্যান্স আসে-এমন দেশে ব্যাংকের কালেকশন বুথ বাড়ানো এবং ছুটিসহ সপ্তাহের যেকোনো দিন রেমিট্যান্স পাঠানোর পর দ্রæত তা সুবিধাভোগীর কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা, বিদেশি এজেন্সির সঙ্গে মূল ব্যাংকের নিয়মিত হিসাব সমন্বয় এবং রেমিট্যান্স আহরণে উদীয়মান ফ্রান্স, মিসর, লিবিয়া, লেবানন, মরিশাস ও গ্রিসের মতো দেশে ব্যাংকের এজেন্সি বাড়ানো উচিত বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। চিঠিতে মালদ্বীপে ক্রমবর্ধমান হারে জনশক্তি রফতানি বাড়লেও দেশটি থেকে রেমিট্যান্স কমার কারণ বের করারও অনুরোধ করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, নগদ সহায়তা বা প্রণোদনার বিষয়টির সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। তবে রফতানির মতো নগদ সহায়তা দেয়ার পক্ষে নয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কেননা এমন হলে একশ্রেণির দুষ্টচক্র উল্টো দেশ থেকে হুন্ডি করে ডলার বাইরে নিয়ে ব্যাংকিং চ্যানেলে আবার দেশে এনে প্রণোদনা নেবে। তবে প্রবাসীদের অর্থ বৈধ চ্যানেলে দেশে আনতে বন্ডে বিনিয়োগে সর্বোচ্চ সুদ এবং দ্রæততম সময়ে সুবিধাভোগীর টাকা পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করতে ব্যাংকগুলোকে বিভিন্ন নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এসব সুবিধা কীভাবে আরও বাড়ানো যায় তা ভাবা যেতে পারে।

এর আগে গত বছর রেমিট্যান্স বাড়ানোর উপায় নিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি চিঠি দিয়েছিল। চিঠিতে বলা হয়, রেমিট্যান্সে আর্থিক প্রণোদনা দেয়া যাবে না। কারণ তাতে দ্বৈত মুদ্রা বিনিময় হার হয়ে যাবে। তাই পাঠানোর খরচ কমাতে হবে। কীভাবে তা করা যায়, সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সুপারিশ করতে বলা হয়। এরপর রেমিট্যান্স আহরণকারী শীর্ষ ২০ ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বৈঠকে ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়, রেমিট্যান্স আনতে অধিকাংশ ব্যাংক চার্জ নেয় না। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক অর্থ স্থানান্তরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ৩ থেকে ৪ শতাংশ হারে চার্জ নেয়। ফলে রেমিট্যান্স পাঠানোর ব্যয় কমাতে ব্যাংকের করণীয় নেই। রেমিট্যান্সের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত চার বছরের মধ্যে দেশে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে। এ সময় রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ মার্কিন ডলার। গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ ছিল এক হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ মার্কিন ডলার। সর্বশেষ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এক হাজার ৪৯৮ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিল প্রবাসীরা। যা তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন