শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহিলা

শ্রমজীবী নারীদের জীবনগাঁথা

প্রকাশের সময় : ৩ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শ্রমজীবী নারীরা তাদের এই শ্রমের বিনিময়ে যা পায় তা দিয়ে তাদের কেউ কেউ তাদের বৃদ্ধ মাতা-পিতার সংসারের খরচ যোগাড় করে এবং অনেকেই তাদের ছেলে-মেয়েদের স্কুলের পড়ালেখার খরচ যোগায়। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের অভাবী এলাকার নারী শ্রমিকের সংখ্যা ৯৩ লক্ষাধিক এর মধ্যে ক্ষেত মজুরের সংখ্যা প্রায় ৩০ লক্ষাধিক। ক্ষুদ্র শ্রমের আওতায় আরো ১০ লক্ষ নারীরা নিজেদের শ্রমে দরিদ্রমুক্ত পরিবার গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে।
উত্তরাঞ্চলের বিশেষ করে রোমারি উলিপুর, চিলমারি উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে এসে বিভিন্ন জেলা, শহরে উন্নয়ন প্রকল্পসহ অট্টালিকা নির্মাণে নারীরা যোগাড় দিচ্ছে। তাদের অভিযোগ তারা পুরুষ শ্রমিকদের সমান শ্রম দিলেও তাদের মজুরি কম। অভাবের সংসারের হাল ধরতেই তারা বেরিয়েছে কাজের জন্য। বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার তথ্যানুযায়ী উত্তরাঞ্চলে ভূমিহীন পরিবারের সংখ্যা প্রায় ২ কোটিরও বেশি। এই সব পরিবারগুলো প্রায় সারা বৎসর ধরেই অভাব- অনটনের সাথে লড়াই করে আসছে। বাংলাদেশে প্রতি বছর পদ্মা, মেঘনা, যুমনা, তিস্তা নদ-নদীর অপ্রতিরোধ্য ভাঙনে ১২ থেকে ১৫ হাজার পরিবার হচ্ছে গৃহহারা, সহায়-সম্পদ হারিয়ে তারা আজ বা¯ুÍহারা এমনকি উত্তরাঞ্চলের অভাবি এলাকায় এমন কোন কর্মসংস্থানের কোন সুযোগ সৃষ্টি হয়নি। এ সকল গৃহহারা বাড়িঘর ভূমিহীন মানুষ কৃষি কাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করে চলছে। ওখানে প্রতি বছরই ৬ মাস এলাকার মানুষের কোন কাজকর্ম থাকে না। মঙ্গার সাথে লড়াই করে এক দিন ছিল যে দিন উত্তরাঞ্চলের কৃষি শ্রমিক হিসেবে আদিবাসী নারীদের প্রভাব ছিল কিন্তু অভাব-অনটনের নিষ্ঠুরতা এক সময় সকল শ্রেণীর নারীরা ফসলের মাঠে নামে। আজ তারা শহরে, গ্রামেগঞ্জে, কল-কারখানায়, মাঠে ঘাটে ৩০ লক্ষাধিক নারী এখন শ্রম দিচ্ছে।
নারী শ্রমিকের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। ইমারত নির্মাণ, ইট, পাথর ভাঙা ছাড়াও বিভিন্ন শ্রমের কাজে এরা নিয়োজিত। কিন্তু আজকাল নারী শ্রমিকের সংখ্যা বাড়লেও সে পরিমাণে নারীদের শ্রমের মজুরি বাড়ছে না। দেখা যায়, কোন কোন জায়গায় পুরুষ শ্রমিক মজুরি যা পায় তার চেয়ে অর্ধেক পরিমাণ মজুরি নারী শ্রমিক পাচ্ছে। সদর উপজেলায় ১০০০ নারী শ্রমিক বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত। এদের অনেকেরই স্বামী, সন্তান থাকলেও একমাত্র পরিবারের সচ্ছলতা আনার জন্য ঘরবাড়ি ছেড়ে আসছে। আজকাল নারীরা ঘরের বাইরে কাজ করতে গেলে নানা ধরনের হয়রানির শিকার হয়। এমনও অভিযোগ রয়েছে নিয়মিত কাজ দেয়া সত্ত্বেও আপত্তিকর প্রস্তাব দেয়, প্রতিষ্ঠানের এক ধরনের বড় অফিসারেরা। আবার অনেকের বসতবাড়ি ও সব কিছু নদী ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে পেটের দায়ে কাজ করছে। কিন্তু কোন কোন জায়গায় একই কাজে একজন পুরুষ শ্রমিককে প্রতিদিন ৮০-৯০ টাকা হাজিরা দেয়া হলেও নারীদেরকে দেয়া হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। সাধারণ নারী শ্রমিক শহরাঞ্চলে অথবা গ্রামাঞ্চলের নারী শ্রমিকরা জানায় নারীদের কোন শ্রমিক সংগঠন নেই। এই সবের প্রতিবাদ করতে তারা সাহস পায় না।
য় নাহার ইসলাম

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন