লক্ষীপুরের মেঘনার তীর রক্ষা বেড়িবাঁধে আবারো ধস দেখা দিয়েছে। শুস্ক মৌসুমেও বাঁধের ধস দেখা দেওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বাঁধের প্রায় ১শ মিটারে ধস নামে। এর আগে গতকাল রাত থেকে ভয়াবহ ধস দেখা দেয়। স্থানীয়দের অভিযোগ গত দেড় বছরে তীর রক্ষা বাঁধের অন্তত আটবার ধস নেমেছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু না হওয়ায় বাঁধের দুপাশের এলাকায় অব্যাহতভাবে ভাঙছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, উক্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে স্থানীয় এমপির দুর্বল নজরদারি এবং দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে আর্থিক ভাগবন্টন ও অনিয়মের মধ্য দিয়ে নিম্নমানের কাজ করায় বার বার বাঁধে ধস নামছে।
২০১৪ সালে মেঘনানদীর তীর রক্ষা বাঁধের জন্য ১শ ৯৮ কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয় সরকার। বরাদ্ধকৃত টাকায় কমলনগরে ১ কিলোমিটার, রামগতির আলেকজান্ডারে সাড়ে ৩ কিলোমিটার ও রামগতিরহাট মাছঘাট এলাকায় ১ কিলোমিটার বাঁধ হওয়ার কথা। ২০১৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনীর তত্তাবধানে আলেকজান্ডার এলাকায় ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করে সাড়ে ৩ কিলোমিটার সফলভাবে বাস্তবায়ন করে। এদিকে ওই বরাদ্ধের ৪৮ কোটি টাকায় কমলনগর উপজেলায় ১ কিলোমিটার কাজ পায় নারায়নগঞ্জের ডকইয়ার্ড ইনিঞ্জনিয়ারিং লিমিটেড। অর্থ বরাদ্ধের ২ বছর পর ২০১৬ সালের শুরুর দিকে প্রতিষ্ঠানটি ওয়েস্টার্ণ ইঞ্জিনিয়ারিংকে দিয়ে কাজ শুরু করে। ওই বছর নিম্নমানের বালু ও জিওব্যাগ দিয়ে কাজ শুরু করায় স্থানীয়দের চাপের মুখে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে ও যথাযথভাবে কাজ করার দাবিতে মানববন্ধন করে স্থানীয়রা।
সাহেবেরহাট এলাকার ছিদ্দিক মেম্বার, আবু মাঝি, ধনুমাঝিসহ অসংখ্য লোক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের জনপ্রতিনিধিরা ভোট আসলে নদী দিয়ে ভোটের প্রচার প্রচারণা শুরু করে। বিজয়ের পর নদীর নামে বরাদ্ধ এনে কাজ না করে নেতাকর্মীদের মাঝে টাকা ভাগভাটোয়ার করে নেয় বলে তারা জানান। যার বাস্তবতা আজকের মেঘনা নদীর বাঁধের এ দৃশ্য। কাজ শেষ হওয়ার আগেই ভেঙে পড়েছে। উপক‚লের প্রায় অর্ধলাখ মানুষের চরম আতঙ্কে দিন কাটছে। লক্ষীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী মুহাম্মদ মুচা বলেন, পানি কমতে শুরু করায় নদীর ভাঙন বেড়েছে। এর প্রভাব তীর রক্ষাবাঁধে পড়েছে। বাঁধ ধসের পর পরই সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। ভাঙন প্রতিরোধে ১ কিলোমিটার বাঁধ যথেষ্ট নয়। আরো সাড়ে ১৫ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। আগামী মাসের মধ্যে এটি অনুমোদন হবে বলে আশা প্রকাশ করছি। স্থানীয় এমপি মো. আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, মেঘনার তীর রক্ষা বাঁধে ধসের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করবো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন