জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সি ইউনিটের প্রকাশিত ফলাফলে ব্যাপক গরমিল পাওয়া গেছে। প্রকাশিত ফলের তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আগের প্রকাশিত ফলাফল থেকে ২৯ জনকে বাদ দিয়ে নতুন প্রকাশিত তালিকায় ২৭ জনকে যোগ করা হয়েছে।
জানা যায়, বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ভর্তির জন্য নির্বাচিত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। কিন্তু দুপুরের দিকে কলা ও মানবিকী অনুষদভুক্ত ‘সি’ ইউনিটের ফল তুলে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেমসয় কারণ হিসেবে বলা হয়, ফলাফলের বিভাগভিত্তিক আসন সংখ্যার হিসাবে গরমিল থাকায় ফল তুলে নেওয়া হয়েছে।’
পরে আগের ও পরের প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রথম প্রকাশিত তালিকা থেকে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে মেয়ে শাখা থেকে সারাওয়াত মাহাজাবিন, তামান্না পারভীন ও বৃষ্টি সরকারকে বাদ দেওয়া হয়েছে। একইভাবে মানবিকের মেয়ে শাখা থেকে সুরাইয়া আক্তার রাত্রি ও দীপিকা মন্ডল। মানবিকের ছেলে শাখা থেকে মো. মাহাফুজ্জামান, অনুপম রায়, নাদু মিয়া ও সজলকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিজ্ঞান মেয়ে শাখা থেকে আসমা আক্তার, জারীন তাসনিম ও মেহজাবিন আফরোজ। বিজ্ঞান ছেলে শাখা থেকে মো. আনোয়ারুল আজিম, আজহারুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল নোমান, মো. রাফিজ খান, রেজা মো. সাজিদুল করিম শুভ, মো. সিরাজুস সালেকীন, মো. আবির ও আজমাইন আকিল আবিদকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে নতুন প্রকাশিত ফলাফলের তালিকায় ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে মেয়ে শাখায় নাদিয়া ইসলাম, শাহরিন জাওয়া রিফাত ও মওদুনা তানজিম খানকে যোগ করা হয়েছে। এভাবে মানবিকের মেয়ে শাখায় সুমাইয়া আক্তার ও নুসরাত জাহান অন্তরা। মানবিকের ছেলে শাখায় মো. এনায়েতুর রহমান ও মো. রুবেল মিয়া। বিজ্ঞান মেয়ে শাখায় স্বর্ণালী আক্তার, ফাতেমা-তুজ জোহরা ও দিশা সরকার। বিজ্ঞান ছেলে শাখায় আহমেদ তানভীর রিফাত, মো. মাসুদ রানা, জায়েদ হোসেন আলিফ, আব্দুর রহমান খান সার্জিল, মো. বিল্লাল হোসেন তুহিন, অলোক দাস ও ইমতিয়াজ ইকবালকে যোগ করা হয়।
এছাড়া ইউনিটে ইংরেজি বিভাগের জন্য আলাদা করে ফল প্রকাশ করা হয়। এই বিভাগের আগে প্রকাশিত ফলের তালিকার ছেলে শাখা থেকে মো. এনায়েতুর রহমান, মো. আতিক শাহরিয়ার অন্তর, শাহরিয়ার ইকবাল চৌধুরী রাজ, মো. রুবেল মিয়া, মো. সুলেমান সিদ্দিক, রিফাত আল আজাদ, সাকিন আহমেদ সিজান, রুদ্র তাপস চৌধুরী ও জুবায়ের আহমেদকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে মো. আনোয়ারুল আজিম, আজহারুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল নোমান, মো. রাফিজ খান, রেজা মো. সাজিদুল করিম শুভ, মো, সিরাজুস সালেকীন, মো. আবির, আজমাইন আকিল আবিদ, মাহিদুল হক তানভীর ও জুবায়ের বিন আরিফকে যোগ করা হয়েছে।
ফলাফলের এই তালিকায় গরমিলের ব্যাপারে কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন মোজাম্মেল হক-এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই গরমিলের বিষয়টি আগে শুনি নাই। ওয়েবসাইটে ফল প্রকাশের আগে আমরা যাচাই করেছিলাম। কিন্তু যাচাই প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগেই ওয়েবসাইটে ফল প্রকাশ করা হয়। এই দায় আমাদের নয়।
ফলাফলের এই অবস্থার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের কি হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে মোজাম্মেল হক বলেন, এ দায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়। ভুল হতেই পারে, সেজন্য কেউ কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে বিশ্ববিদ্যালয় কেন তার দায় নেবে?’ বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে জাবি ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ দিদার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন বেখেয়ালিপনা শুধু দায়িত্বের অবহেলাই নয়, ভর্তি কার্যক্রমে সচ্ছতাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে।
এই বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে ফোন দিলে তার একান্ত সচিব জানান তিনি চোখের ডাক্তার দেখাতে হাসপাতালে আছেন।
আর প্রো-ভিসি (শিক্ষা) মো. নরুল আলম এবং ডেপুটি রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) ও ভর্তি পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব আবু হাসান এর মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন