১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণীত হয়। এই সংবিধানে পার্লামেন্টে আসন সংখ্যা রাখা হয় ৩০০টি। এখনও পার্লামেন্টের আসন সংখ্যা ৩০০টি। ১৯৭০ সালে পাকিস্তান জুড়ে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় সেটি ছিল গণপরিষদ গঠণের নির্বাচন। সেই গণপরিষদ পাকিস্তানের শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করবে। পাকিস্তানের শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করা হয়নি। কারণ তার আগেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। পাকিস্তানের গণপরিষদে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) থেকে যারা নির্বাচিত হন তারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাংলাদেশের গণপরিষদের সদস্য হন। এই গণপরিষদ সদস্যরাই ১৯৭২ এর সংবিধান প্রণয়ন করেন এবং সেই সংবিধান মোতাবেক ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল এবং প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ঐ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে সরকার দলীয়রা পায় ২৯৩টি আসন। আর বিরোধী দল পায় ৭টি আসন। কি আশ্চর্য্য ব্যাপার, এবার ২০১৮ সালেও বিরোধী দল পেয়েছে ৭টি আসন। ২টি আসনে ভোট গ্রহণ স্থগিত রয়েছে। অবশিষ্ট সব আসন সরকারী দল পেয়েছে।
আমি এখানে নির্বাচন কালে জাতীয় পার্টিকেও সরকারী দল হিসাবেই বিবেচনা করেছি। কেমন নির্বাচন হয়েছে, কিভাবে নির্বাচন হয়েছে, কিভাবে প্রশাসন নৌকা এবং লাঙ্গলকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে সে সব ঘটনা এখন বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের মুখে মুখে শোনা যায়। কারণ, এবারের নির্বাচন উপলক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য কয়েক কোটি লোক নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় চলে যায়। যেভাবে আওয়ামী লীগ নৌকা নিয়ে জিতেছে সেভাবেই জাতীয় পার্টিও লাঙ্গল নিয়ে জিতেছে।
জয়লাভের পর জাতীয় পার্টির পার্লামেন্টারি পার্টির সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় যে, জাতীয় পার্টি সরকারে থাকবে। বিরোধী দলে থাকবে না। সরকারে থেকে মন্ত্রীও হবেন। এ প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির নেতারা বলেন যে, মহাজোটে থেকে তারা একসাথে ইলেকশন করেছেন। ইলেকশনের পরে তারা আলাদা হবেন কেন? এই দাবি করেছিলেন রওশন এরশাদ, জিএম কাদের, রুহুল আমি হাওলাদার ও মশিউর রহমান রাঙ্গা সহ দলের সমস্ত নব নির্বাচিত এমপি। সেইদিন সভায় এরশাদ ছিলেন না।
জাতীয় পার্টির এই সিদ্ধান্ত সরকারের জন্য খুব বিব্রতকর ছিল। কারণ, বিএনপির ৫ জন সদস্য শপথ নেবে না। আর জাতীয় পার্টিও সরকারে থাকবে। তাহলে বাংলাদেশের একাদশ পার্লামেন্টে বিরোধী দল কই? এই পার্লামেন্টে কি কোনো বিরোধী দল থাকবে না? এটি সরকারের জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর হবে। আমার তাই ধারণা, সরকারই জাতীয় পার্টির নেতাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে যে, তাদেরকে বিরোধী দলে থাকতেই হবে। না হলে বিরোধী দল পাওয়া যাবে কোথায়? সরকারের এই প্রবল চাপের মুখে পরদিন এরশাদ নিজে স্বাক্ষর করে বিবৃতি জারি করেন যে, জাতীয় পার্টির ২২জন সদস্য বিরোধী দল হিসাবে অবস্থান গ্রহণ করবে। যেহেতু জাতীয় পার্টির ২২জন সদস্য রয়েছে তাই তারা হবে প্রধান বিরোধী দল। এরশাদ হবেন বিরোধী দলীয় নেতা। আর তার ভাই জিএম কাদের হবেন বিরোধী দলীয় উপনেতা। বর্তমান প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা হবেন চিফ হুইফ।
দেশের অভ্যন্তরে পত্রপত্রিকা এবং রেডিও-টেলিভিশনে এই ইলেকশনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। বিদেশী পত্র পত্রিকা এবং টেলিভিশন চ্যানেলেও বাংলাদেশের সদ্য অনুষ্ঠিত নির্বাচন নিয়েও বিভিন্ন এ্যাঙ্গেলে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। দেশের মধ্যে যেমন এই নির্বাচন নিয়ে দু’ ধরণের মত দেখা দিয়েছে বিদেশেও তেমনি এই নির্বাচন নিয়ে দু’ধরণের মতামত পাওয়া যাচ্ছে। তবে এবার বিদেশী মতামতের ধরণ এবং পক্ষ পাল্টে গেছে। দেখা যাচ্ছে যে, গণচীন, ভারত, ইরান, পাকিস্তান এবং ওআইসির কয়েকটি দেশ এই নির্বাচনে বিজয়ের জন্য আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে। এই দেশগুলির মধ্যে একমাত্র ভারত ছাড়া অবশিষ্ট দেশগুলি অতীতে বিএনপির প্রতি দুর্বল ছিল বলে জাতীয় পারসেপশন ছিল। কিন্তু এবার তারা আওয়ামী লীগের দিকে দুর্বলতা প্রকাশ করেছে। আরও অবাক ব্যাপার হলো, বাঘে-গরুতে এবার মনে হয় একঘাটে পানি খেয়েছে। অর্থাৎ চীন এবং ভারত এই সরকারকে সমর্থন করেছে। এটি দেখে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের ভ্রু কুঞ্চিত হয়েছে। অপরপক্ষে আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী সরকার সম্পর্কে পশ্চিমা দুনিয়ার যে মনোভাব ছিল এবারও সেই মনোভাবের কোনো ব্যতিক্রম দেখা যায়নি। বরং এবার নির্বাচনী প্রতিক্রিয়া দেখাতে গিয়ে তারা পূর্বের তুলনায় আরও কিছু কঠোর মনোভাব দেখিয়েছে।
॥দুই॥
আমি যেহেতু ইলেকশন উপলক্ষে বগুড়া তথা উত্তরবঙ্গে গিয়েছিলাম তাই অনেকে আমাকে আমার ইলেকশন অভিজ্ঞতা সম্পর্কে লিখতে বলেছেন। আমি তাদেরকেও বলেছি, আর নিজেকেও বলেছি যে, এবারের ইলেকশন সম্পর্কে আমার নতুন করে কিছু বলার নাই। দেশের ১৭ কোটি মানুষ নির্বাচন দেখেছে। আমিও তাদের একজন । হাটে ঘাটে মাঠে যেখানেই গেছি সেখানেই শুনেছি ভোটের আলোচনা। এখনও সেই আলোচনা চলছে। সুতরাং নির্বাচন নিয়ে আমি কোনো পোস্ট মর্টেম করবো না। তবে প্রাসঙ্গিক কয়েকটি বিষয় নিয়ে মনে হয় কিছু কথা বলতেই হবে।
ইলেকশন করার জন্য ঢাকা থেকে আমি আত্মীয়স্বজনসহ সপরিবারে রওয়ানা হই ২৬ ডিসেম্বর বুধবার সকালে। নাস্তা না করেই বের হই। আমরা এলেঙ্গা রিসোর্টে নাস্তা করার জন্য নামি। তখন আমরা একটা ফোন পাই। বলা হয় যে, আপনারা ফিরে যান। খামাখা কষ্ট করে এতদূর এসে কি লাভ? তবুও আমরা ভাবলাম, যখন এলেঙ্গা পর্যন্ত এসেই পড়েছি তখন গন্তব্যে যাওয়াই ভাল। আমরা দুপুরে বগুড়া পৌঁছলাম এবং এক ঘনিষ্ট আত্মীয়ের বাসায় দুপুরের খাওয়া দাওয়া সারলাম। বিকেলে উঠলাম নাজ গার্ডেনে।
নাজ গার্ডেন উত্তরবঙ্গের অন্যতম অভিজাত হোটেল হওয়া সত্ত্বেও লবিতে এবং বাগানে কর্মী বাহিনী গিজ গিজ করছিলো। তবে ঢাকা থেকে গাজীপুর হয়ে টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ এবং বগুড়ায় এলাম। সারা রাস্তায় ধানের শীষের কোনো পোস্টার নাই। নৌকার পোস্টারে এই শত শত কিলোমিটার পথ সয়লাব। মাঝে মাঝে কিছু লাঙ্গলের পোস্টার সমগ্র পথে৩/৪ জায়গায় সংক্ষিপ্ত যাত্রা বিরতি করি। ডাব, কোকাকোলা, দই এবং চা খাওয়ার জন্য। সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলি। জানা যায় যে, ধানের শীষের পোস্টার ঠিকই ছিল, কিন্তু সন্ধ্যা থেকেই সব ছিঁড়ে নিয়ে গেছে। বগুড়ার ৭টি আসনের মধ্যে শুধু মাত্র বগুড়া-১ এ মির্জা ফখরুলের হাতে গোনা কয়েকটি পোস্টার চোখে পড়ে। পরদিন মহাস্থান হয়ে শিবগঞ্জ যাই এবং ট্যাংরা হয়ে বগুড়া শহরে ফিরি। বলা হয়েছিল যে, মহাস্থান থেকে শিবগঞ্জ ট্যাংরা, বিহার, ফকিরপাড়া, ভাসুবিহার প্রভৃতি এলাকায় ধানের শীষের অন্তত ১ লক্ষ পোস্টার টাঙানো হয়েছিল। সব ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। ঢাকা থেকে গাজীপুর, হাটিকুমরুল, বগুড়া, শিবগঞ্জ, গাইবান্ধা এবং নওগাঁ পর্যন্ত কোথাও ধানের শীষের পোস্টার নাই। নির্বাচনের ফলাফল সম্পর্কে এর মধ্যেই একটি ধারণা হয়ে গিয়েছিল। ৩১ শে ডিসেম্বর ঢাকা ফিরি।
॥তিন॥
এখন জাতীয় সংসদে গণফোরামের দ্ইু সদস্যের শপথ গ্রহণকে কেন্দ্র করে ঐক্যফ্রন্টের অভ্যন্তরে ভাঙনের সানাই বেঁজে উঠেছে, বলে গত রবিবার ৬ জানুয়ারি পত্রপত্রিকায় খবর বেরিয়েছিল। অথচ নির্বাচনের পর ঐ নির্বাচনের সমালোচনা করে যতগুলো বক্তৃতা-বিবৃতি এসেছে তার মধ্যে সবচেয়ে কঠোর সমালোচনা ছিল ড. কামাল হোসেনের। ২রা জানুয়ারি বুধবার কামাল হোসেন মারাত্মক একটি বিবৃতি দেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি নতুন সরকারকে স্বীকৃতি না দেয়ার আহ্বান জানান জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এই শীর্ষ নেতা। গত মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ আহ্বান জানান। ড. কামাল বলেন, প্রহসনের এ নির্বাচনে জনগণের মতামতের কোনো প্রতিফলনই ঘটেনি। এটিকে সরকারের একটি ‘পাতানো নির্বাচন’ বলে দাবি করেন।
তিনি বলেন, ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ এ নির্বাচনকে বৈধতা দিয়ে নিজের গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা। আমি আশা করি জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের জনগণের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এ ‘ভোট ডাকাতি’র নির্বাচনকে কোনোভাবেই স্বীকৃতি দেবে না। ড. কামাল আরো বলেন, আমরা ৩০ ডিসেম্বরই পাতানো এ নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে নতুন করে তফসিল ঘোষণা ও পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছি। ঐক্যফ্রন্টের অন্য নেতাদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে নতুন করে নির্বাচন পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও তিনি।
সেই কামাল হোসেন সম্পর্কে রবিবারের বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় যখন নেতিবাচক খবর এসেছিল তখন আমি ব্যক্তিগতভাবে মর্মাহত হয়েছিলাম। আরও মর্মাহত হয়েছিলাম এই কারণে যে, ইংরেজি ডেইলি স্টার, বাংলা দৈনিক সংবাদ, অন লাইন বাংলা ট্রিবিউনসহ একাধিক পত্রপত্রিকায় এই খবর এসেছিল। এছাড়া শনিবার রাতের প্রায় সব কটি টেলিভিশনের স্ক্রলে ঐ খবরটি এসেছিল। ঐসব খবরে ড. কামাল হোসেনের বরাত দিয়ে বলা হয় যে, গণফোরাম থেকে যে দুই ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তাদের শপথ গ্রহণের ব্যাপারে তার মনোভাব ইতিবাচক। পক্ষান্তরে বিএনপির তরফ থেকে যে ৫ ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তাদের ব্যাপারে বিএনপির স্পষ্ট অবস্থান এই যে, তারা কোনো অবস্থাতেই শপথ নেবেন না। এটি নিয়ে দল দুটির মধ্যে ভাঙ্গনের সুর লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ৬ জানুয়ারি রবিবার ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার তার প্রথম পৃষ্ঠায় প্রধান সংবাদের শিরোনাম করেছে, ‘Crack in Oikya ?/ Gonoforum
MPs-elect likely to take oath’. বাংলা অনুবাদ, “ঐক্যফ্রন্টে ফাটল? গণফোরামের নির্বাচিত এমপিদের শপথ গ্রহণের সম্ভাবনা।” রবিবারের দৈনিক সংবাদের প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত ডাবল কলাম সংবাদের শিরোনাম, ‘ঐক্যফ্রন্টে ভাঙনের আলামত/ গণফোরামের দুই বিজয়ী প্রার্থীর শপথ নেয়ার ইঙ্গিত, শরিকদের মধ্যে মতভেদ।’ বাংলা নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের শিরোনাম, ‘ঐক্যফ্রন্টে অনৈক্য/বিএনপির যুক্তি শোনার অপেক্ষায় ড. কামাল’। বাংলা ট্রিবিউনে অবশ্য বলা হয়েছে যে, ড. কামাল হোসেন এব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেননি। রবিবার তিনি বিএনপির তরফ থেকে শপথ গ্রহণ না করার পক্ষের যুক্তিসমূহ শুনবেন। যদি বিএনপির যুক্তি গ্রহণযোগ্য হয় তাহলে তিনি তার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবেন। এই ভাষ্য লেখার শেষ পর্যায়ে খবর পাওয়া গেল যে, ঐসব খবর ভিত্তিহীন। বরং বাস্তব বিষয় হলো সম্পূর্ণ বিপরীত। ঐ দুইজন অর্থাৎ সুলতান মনসুর এবং মোকাব্বির খান শপথ গ্রহণ করছেন না। শুধু তাই নয়, সুলতান মনসুর এবং মোকাব্বির ছাড়াও বিএনপির ৫ জন সদস্য- মোট ৭ জনের একজনও শপথ গ্রহণ করছেন না। এব্যাপারে ৬ তারিখ রবিবার বিকালে অন লাইন পত্রিকায় যে খবর বেরিয়েছে সেটি নিম্নরূপঃ
সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত সদস্যরা। রোববার দুপুরে ড. কামালের চেম্বারে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক শেষ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্টু এসব কথা বলেন। গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেছেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কেউ শপথ নিচ্ছেন না, ফ্রন্ট ভাঙবেও না। তিনি বলেন, ড. কামালের বক্তব্য কতিপয় মিডিয়ায় ভুলভাবে এসেছে। তার সংশোধনীর জন্য ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে প্রেস রিলিজ দেয়া হয়েছে। তিনি জানান, ড. কামাল কখনো বলেন নি গণফোরামের দুই জন শপথ নেবেন। এসময় কামালের ‘ইতিবাচক’ মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুললে মন্টু বলেন, ইতিবাচকতা মানে এই নয় যে শপথ নেবেন। ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে আগামী পরশু নতুন কর্মসূচি দেয়ার কথাও জানান মন্টু। তিনি বলেন, আগামী পরশু আমরা আবার বসবো। এবং সেদিন সিদ্ধান্ত হবে নতুন কর্মসূচি সম্পর্কে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তখন মন্টুর পাশে থাকা আ স ম আব্দুর রব বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ভাঙার কোনো প্রশ্ন আসে না। জণগণের স্বার্থে গণতন্ত্র রক্ষায় যে ঐক্যফ্রন্ট গঠন করা হয়েছে তা স্থায়ী থাকবে। ঐক্যফ্রন্ট ভাঙছে না বলে বারবার জোর দিয়ে বলেন রব। তাকে পাশে থেকে সমর্থন দেন মন্টু।
॥চার॥
এখন আওয়ামী লীগ পৌনে ৩০০ আসন নিয়ে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত। আগামী ৫ বছর তারা ক্ষমতায় থাকবে। শেখ হাসিনা আরও ৫ বছর প্রধান মন্ত্রী থাকবেন। এখন তাঁর পলিটিশিয়ান থেকে স্টেটস ম্যান হওয়ার সময়। জাতীয় পার্টি গৃহপালিত দল। বিএনপি মার্জিনালাইজড। জামায়াতে ইসলামী ক্রাস্ড। দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং মৌলিক অধিকারের সুবাতাস বইয়ে দেওয়ার একক দায়িত্ব এবং ক্ষমতা রয়েছে শুধু মাত্র শেখ হাসিনার। ৫ বছর এই সুর্বণ সুযোগের পূর্ণ সদ্ব্যবহার তিনি করবেন বলে সকলের বিশ্বাস। তাহলে বিগত ১০ বছরের ইতিহাস চাপা পড়ে যাবে এবং নতুন ইতিহাস লেখা হবে। যেখানে একটি গণতান্ত্রিক এবং মুক্ত স্বাধীন দেশের ইতিহাস নতুন করে লেখা যেতে পারে। দেশবাসীর আশা, শেখ হাসিনা সেই সুযোগ গ্রহণ করবেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন