সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সড়ক ব্যবস্থার উন্নয়নে চলমান মেগা প্রকল্পগুলো দ্রুত সম্পন্ন করার চেষ্টা চলছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মেট্রোরেল, কর্ণফুলি টানেল ও পদ্মাসেতুর কাজ এগিয়ে চলছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ের কাজও দ্রুত এগুচ্ছে। এই কাজগুলো দ্রুত শেষ করা হবে।
গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী আরো বলেন, দেশের জাতীয় সড়কের আওতায় আরো দু’টি ফোরলেন প্রকল্প হাতে নিচ্ছে সরকার। এর একটি হচ্ছে ঢাকা-সিলেট এবং চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ফোরলেন প্রকল্প। এই বছরের জুনের আগেই কাজ শুরু করার ইচ্ছের কথা বললেন সেতুমন্ত্রী। তবে আগে ঢাকা-সিলেট। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার হয়তো একটু পরে হতে পারে। যেটা পাবলিক প্রাইভেট পাটনারশিপ এর মাধ্যমে হবে। এখানে জাপান অর্থায়নের আশ্বাস দিয়েছে। এছাড়া গাজীপুর থেকে এলেঙ্গা, এলেঙ্গা থেকে রংপুর এবং রংপুর থেকে বুড়িমারি ও পঞ্চগড়ের মধ্যে ফোর লেনের কাজ শুরু হবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের তিনটি সেতুর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে—দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতু, দ্বিতীয় মেঘনা ও দ্বিতীয় গোমতি সেতু। এই তিন সেতুর কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে, আশা করছি মে মাসের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। আগামী বাজেটের আগেই প্রধানমন্ত্রী তিনটি ব্রিজ উদ্বোধন করতে পারবেন। যে তিনটি ব্রিজের নির্মাণ ব্যয় ৭২১ কোটির টাকার মতো কমে গেছে।
মন্ত্রী বলেন, ২০১১ সালে প্রথম, ২০১৪ সালে দ্বিতীয়বার এবং ২০১৯ সালে আবারও মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলাম। মোট সাত বছর এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছি। কখনো সড়ক পরিবহন আবার কখনো যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলাম। মন্ত্রণালয়ের নামের পরিবর্তন হয়েছে, তবে কাজের পরিবর্তন হয়নি।
মন্ত্রী বলেন, দেশে কিছু যে হচ্ছে না, এমনটা নয়। বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়েছে। কোনও প্রকল্পতো থেমে নেই। আমি চ্যালেঞ্জকে এনজয় করি। হবে না বলতে পারবো না, হতে হবে।
এবার প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় মন্ত্রীদের পিএস-এপিএস নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর আগে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মন্ত্রীদের পছন্দ অনুযায়ী এসব পদে নিয়োগ দেওয়া হতো। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, মন্ত্রীদের পিএস, এপিএস নিয়োগ প্রক্রিয়াটি ভালো হয়েছে। এটি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে হয়েছে। আমার এখানেও নতুন একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে কাজ ভালো না হলে পিএমকে জানাবো বলে তাদের বলেছি।
এ সময় বাসে করে মন্ত্রীদের যাতায়াতের বিষয়ে মন্ত্রীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা তিনটি বাসে করে ৪৬ জন সাভার ও টুঙ্গিপাড়ায় গিয়েছি। এতে ঝামেলা ও জনদুর্ভোগ কমেছে। এই প্রক্রিয়ায় বাসে করে মন্ত্রীদের সচিবালয়ে আনা যায় কিনা তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন।
এদিকে সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু গতকাল সচিবালয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ওবায়দুল কাদের বলেন, জাসদ ১৪ দলের একটি দল। দলটির শীর্ষ নেতা আওযামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে দেখা করতেই পারেন। তবে আপনারা যা ধারণা করেছেন সে সব বিষয়ে নয়, অন্য দুই-তিনটি বিষয়ে আমাদের মধ্যে কথা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতেই হবে। সেজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশনা দিয়েছি। এই কাজটি প্রথমে করতে হবে। শৃঙ্খলার বিষয়টি প্রথম দিকেই করতে হবে। পরে আবার নির্বাচনের বিষয় আসবে, রাজনৈকি বিভিন্ন চাপ আসবে। এটা প্রথম রাতে বিড়াল মারার মতোই, এই বিষয়গুলো নজরদারি করতে হবে। সেটাই আমি বেছে নিয়েছি।
এসময় সাংবাদিকরা আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকের হেলমেট ছাড়া মটর সাইকেলে চড়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। সে দুঃখ প্রকাশ করে বলেছে এটা তার অসাবধানতাবশত ভুল, সে আর রিপিট করবে না। এ কথাটা খুব খোলামনে স্বীকার করেছে, এরপর তো কিছু বলতে পারি না।#
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন