উত্তর : আপনার মা যা বলছেন তাই ঠিক। আপনার মামার বক্তব্য ও আচরণ ঠিক নয়। এ দেশে একটি কথা চালু আছে- বোনেরা ওয়ারিশ নিলে বাবার বাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়। এ কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও অবাস্তব। অন্য ধর্মের বুলি। আসলে বোনদের ওয়ারিশ না দিলে সময়ে এ বাড়িটি ধ্বংস হয়ে যায়। প্রকাশ্যে ধ্বংস না হলেও এর মানুষগুলো শান্তিহীন জীবন-যাপন করে। নৈতিকভাবে ধ্বংস হয়। আর বড় ধ্বংসটি থাকে আখেরাতে। ওয়ারিশ না দিয়ে কিংবা নির্দোষ উপায়ে মাফ না করিয়ে কোনো লোক আখেরাতে নাজাত পাবে না। তা সে যত বড় নামাজি বা পরহেজগারই হোক। এ মামলায় আমাদের দেশের শতকরা ৯০ ভাগের চেয়েও বেশি মানুষ পরকালে ধরা খাবে বলে আমার ভয় হয়। কারণ, বান্দার হক আল্লাহ নিজে ক্ষমা করবেন না। যতক্ষণ বান্দা ক্ষমা না করে। নতুবা এর বদলে নিজে সওয়াব দিয়ে কিংবা তার গুনাহ নিয়ে এর বিনিময় শেষ করতে হবে। যার ফলে জান্নাতি লোক জাহান্নামি সাব্যস্ত হয়ে যেতে পারে। আপনার মা’কে তার শরিয়তসম্মত পাওনার অর্ধেক দিলেও মামা দায়মুক্ত হবেন না। পুরোটাই দিতে হবে। দেয়া সম্ভব না হলে কেন সম্ভব নয়, তা ভালোভাবে বুঝিয়ে শুনিয়ে মা ছাড় দিলে মামা কিছু কমে রেহাই পেতে পারেন। জোর করে কোনোটাই সম্ভব নয়। আপনার মা আইনগত উপায়ে নিজে সম্পত্তি কাগজপত্রে ও দখলসূত্রে বুঝে নিয়ে আরামসে ভোগ দখল করতে পারেন। এতে তার কোনো গুনাহ বা অপরাধ হবে না। মামাকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করার কারণে সওয়াব হতে পারে। বাবার বাড়িটি ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য তিনি প্রশংসিত হতে পারেন। সব নারীর জন্য এ মাসআলা প্রযোজ্য। সারা দেশের সব মা বোন যদি এ বিষয়ে সতর্ক ও সোচ্চার হন, তাহলে বহু বাপ-চাচা ও ভাই-ভাতিজারা বান্দার হক মারার গজব থেকে রক্ষা পেতে পারে।
সূত্র : জামেউল ফাতাওয়া, ইসলামী ফিক্হ ও ফাতাওয়া বিশ্বকোষ।
উত্তর দিয়েছেন : আল্লামা মুফতি উবায়দুর রহমান খান নদভী
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন