শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

গণভবনে ফের সংলাপের কথা এবং ...

অর্থহীন তাই যাবে না বিএনপি

ফারুক হোসাইন | প্রকাশের সময় : ১৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট চুরি হয়েছে অভিযোগ করে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি ও তাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। একইসাথে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে পুনঃনির্বাচনের দাবি করেছে রাজপথের প্রধান এই বিরোধী জোট।
দাবি আদায়ে জাতীয় সংলাপসহ তিন কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। যদিও সংলাপের কথা বলার পরপরই গত রোববার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন নির্বাচনের আগে যে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপ করেছিলেন আবারও তাদেরকে চিঠি দিয়ে ডাকবেন প্রধানমন্ত্রী। তবে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সংলাপের বিষয়ে এবার তেমন আগ্রহী নয় বিএনপি। সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা বা বিষয় ছাড়া সংলাপে অংশ নেয়ার কোন প্রয়োজনীয়তাও মনে করেন না দলটির নেতারা। তারা মনে করেন, অতীতে সরকারের কথায় আস্থা সংলাপে অংশ নিয়ে তা প্রহসনে পরিণত হয়েছে। এবার আর এধরণের লোক দেখানে এবং অর্থহীন কোন সংলাপে যাবে না বিএনপি। সংলাপ করতে হলে আগে এজেন্ডা জানাতে হবে। আর সেই এজেন্ডা অবশ্যই হতে হবে পুনঃনির্বাচন এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের বিষয়ে। অন্যত্থায় সংলাপে বসার কোন প্রয়োজন দেখেন না বিএনপি নেতারা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের এজেন্ডা একটাই এই নির্বাচন বাতিল করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। অন্যত্থায় আগের মত সংলাপ হলে সেটা অর্থবহ হবেনা। নির্বাচন কেন্দ্রীক এজেন্ডা থাকলেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সংলাপে যাবে। যে কোন সংলাপেই আমাদের মূল এজেন্ডা বর্তমান নির্বাচন বাতিল করতে হবে। অযোগ্য এ নির্বাচন কমিশন বাতিল করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকার গঠন করতে হবে।
নির্বাচনের আগে গত ১ নভেম্বর ও ৭ নভেম্বর দুই দফা প্রধানমন্ত্রীর সাথে সংলাপে অংশ নেয় বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা। ওই সংলাপে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল, আলোচনা করে নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দীর মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার। নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন ও নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার নিশ্চয়তা দেওয়া। বাক্, ব্যক্তি, সংবাদপত্র, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সব রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। নির্বাচনের ১০ দিন আগে থেকে বিচারিক ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন। তফসিল ঘোষণার পর থেকে সব রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রাখা এবং নতুন কোনো মামলা না দেওয়াসহ ৭ দফা দাবি জানিয়েছিল সরকার বিরোধী এই জোট। যদিও তাদের কোন দাবিই বাস্তবায়ন হয়নি বলে জানিয়েছিলেন বিএনপির নেতারা।
দলটির একাধিক নেতা বলেন, নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর ডাকা সংলাপে অংশ নিয়েছিল বিএনপি। সেসময় প্রধানমন্ত্রীর কথায় আস্থা রেখে ৭দফা দাবি জানানো হয়েছিল। সংলাপে প্রধানমন্ত্রী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা না দেয়া, গ্রেফতার বন্ধ রাখার আশ্বাস দিয়েছিলেন। মামলার তালিকা চেয়েছিলেন, বিএনপিও সেই তালিকা তার কার্যালয়ে পৌঁছে দিয়েছিল। কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হয় যখন সংলাপে তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন তখনও সারাদেশে গ্রেফতার চলছিল। এমনকি সংলাপে তিনি আশ্বাস দেয়ার পর গ্রেফতার, মামলা, ধরপাকড় আরও বেশি বেড়ে যায়। এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের যে দাবি বিএনপির ছিল তার বিপরীতে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে জাতিকে একটি জঘন্য নির্বাচন উপহার দিয়েছে সরকার ও নির্বাচন কমিশন। তাই এই সরকারের সাথে আর কোন সংলাপের বিষয়ে আগ্রহী নয় তারা। বরং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজ, পেশাজীবী, শিক্ষার্থী বিদেশী বন্ধুরাষ্ট্রদের নিয়ে জাতীয় সংলাপের আয়োজন করতে চান তারা। একইসাথে এই সংলাপে ৩০ ডিসেম্বরের ভোট ডাকাতির সার্বিক চিত্রও জাতির সামনে তুলে ধরবেন তারা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সংলাপ এখন হতে পারে একটা গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে। একটা সংলাপে (নির্বাচনের আগে) তো কোন ফলাফল হয়নি। বরং দেশ আরও রাজনৈতিকভাবে কয়েক ধাপ নিচে নেমে গেছে। ওই সংলাপের কারণে দেশের গণতন্ত্র, নির্বাচনী প্রক্রিয়াতে কোন সুফল আসেনি। এরপর আরেকটি সংলাপের উদ্দেশ্য কী সেটা তো আমাদের জানা নেই। তিনি বলেন, দেশে সংবিধান আছে, সেখানেই মৌলিক অধিকার, ভোটাধিকার, বাক্ স্বাধীনতা, আইনের শাসনের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সেটা না মেনে সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নিয়ে যতবারই সংলাপ হোক না কেন এটা কোন কাজে আসবে না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ৩০ ডিসেম্বর যেহেতু মানুষের ভোটে কোন সরকার নির্বাচিত হয়নি। তাই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। তাছাড়া অন্য কোন বিষয়ে আলোচনার সুযোগ নাই।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সংলাপ হলো সরকারের একটি চালাকি মাত্র। জনগণ যেহেতু তাদের ভোট দিতে পারেনি, তাদের ক্ষোভ রয়েছে, এজন্য সরকার তাদের ক্ষোভকে ভিন্নপথে প্রবাহিত করতে সংলাপের নামে কালক্ষেপণের কৌশল নিতে চায়। কিন্তু এধরণের সংলাপে কোন অর্জন হবে না।
আরেক ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের যে নির্বাচন হয়েছে সেটি ইতিহাসের জঘন্যতম একটি নির্বাচন। এই নির্বাচন বাদ দিয়ে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের বিষয়ে যদি আলোচনা বা সংলাপের কথা বলা হয় তাহলে বিএনপি সেটিকে স্বাগত জানাবে। অন্যত্থায় কোন আলোচনার প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না। #

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (14)
Mohammed Kowaj Ali khan ১৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৯ এএম says : 0
আপনারা জানেন কি যেমন কুকুর তেমন মুগুর রাখতে হয়। ওই যে জাতীয় বেঈমানের দল ওদেরকে মুগুর দিয়ে পিটান দেখবেন সব ঠিক। ভাগিবে। ইনশাআল্লাহ।
Total Reply(0)
Mohammed ১৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৫২ এএম says : 0
মির্জা ফখরুল বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আবার সংলাপে অবশ্যই ‘নির্বাচন বাতিলের’ বিষয়টি এজেন্ডা হিসেবে থাকতে হবে।এজেন্ডা জানলে সংলাপে যাওয়ার বিষয়টি তাঁরা বিবেচনা করবেন। আরে বাব্বা, এ দেখি এক নিধিরাম সর্দার - ঢাল নেই, তলোয়ার নেই, আছে শুধু কথার এটম বোম !
Total Reply(0)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৫৩ এএম says : 1
আমি একটা জিনিষ বুঝলাম না,বিএনপিকে তো সংলাপে ডাকাই হয়নি ! যাওয়া না যাওয়ার প্রশ্ন তো পরে,বলা হয়েছে নির্বাচনের আগে যাদের সাথে সংলাপ হয়েছে,তাহলে নির্বাচনের আগে সংলাপ হয়েছে ঐক্যফ্রন্টের সাথে বিএনপির সাথে তো হয়নি সুতরাং ফকরুল সাহেব শর্ত দিচ্ছেন কেন?????
Total Reply(0)
Nadeem Nawaz ১৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৫৩ এএম says : 0
নির্দলীয় সরকারের অধীনে পুনরায় নির্বাচন চাই। যদিও তা বাস্তব হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নাই ।
Total Reply(0)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৫৪ এএম says : 0
ভয়াবহ ও প্রতারণাপূর্ণ নির্বাচন দেখেছি। অন্তত ৯৫ ভাগ কেন্দ্রেই রাতে ৩০-৫০ ভাগ ভোট সিল মেরে রাখা হয়েছিল। এরপরেও দিনভর সিল মেরে, জালভোট দিয়ে নির্বাচনকে কলঙ্কিত করা হয়েছে। সরকার বৈধতা চাচ্ছে। বিরোধী দলের দাবী যৌক্তিক যে, তারা নির্বাচন বাতিলের শর্তেই সংলাপে অংশ নিবে। সংলাপ অর্থহীন, সমাধানের কোনরূপ পথ নয় বলেই আমরা দেখেছি। ঐক্যফ্রন্ট আগের সংলাপে প্রতারিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তাদের সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস দিয়েও রাখেনি। আন্দোলনই মুক্তি আনতে পারবে।
Total Reply(0)
Mir Md Mofazzal Hossain ১৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৫৪ এএম says : 0
আগামী পাঁচ বছর শুধু আলোচনা/সংলাপ চলবে, তারপর পুনরায় নির্বাচন। রাজনীতি আর রাজপথে নয়, আলোচনার টেবিলে থাকবে।
Total Reply(0)
Mansur Hossain Chaklader ১৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৫৪ এএম says : 0
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সংলাপে না গিয়ে, চা, বিস্কুট ও খানাপিনা থেকে বঞ্চিত হওয়ার মতো বোকামি করবেন বলে মনে হয় না।
Total Reply(0)
Himu mama ১৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৫৫ এএম says : 0
আবার নির্বাচন হবে ঐ সংলাপ হবে না। তবে নির্বাচন হবে আবার পাঁচ বছর পর।
Total Reply(0)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৫৫ এএম says : 0
নিশ্চয়ই, তারা এজেন্ডা নির্ধারণ না করলে, সংলাপে গিয়ে কোনো লাভ হবেনা।সুতরাং, আগে এজেন্ডা নির্ধারণ হোক তারপর চিন্তা অংশ নেয়া বা না নেয়ার।
Total Reply(0)
রিপন ১৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৫৫ এএম says : 0
এজেন্ডা একটাই আর সেটা হতে হবে নির্বাচন বাতিল করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠান । তবেই কেবল বিএনপির যাওয়া উচিৎ অন্যথায় নয়
Total Reply(0)
শরীফ সাহেদি ১৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৫৬ এএম says : 1
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আবার সংলাপে অবশ্যই ‘নির্বাচন বাতিলের’ বিষয়টি এজেন্ডা হিসেবে থাকতে হবে। এ দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।!!!!!!! মাথা নস্টকি আমার ? নাকি মির্জা সাহেবের ????????
Total Reply(0)
Nazmul Kabir ১৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৫৬ এএম says : 0
এখন যে নির্বাচন কমিশন আছে, যার অধীনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হলো; সারা বিশ্বের সবাই দেখেছে কতটা অযোগ্য এই নির্বাচন কমিশন। তাদের কোনো যোগ্যতাই নেই সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনা করার। সুতরাং তাদের অধীনে নির্বাচন করার কোনো প্রশ্নই নেই।
Total Reply(0)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৫৬ এএম says : 0
ড. কামাল সংলাপকে স্বাগত জানিয়েছেন তারই ধারাবাহিকতায় জনাব ফকরুল জানিয়েছেন সংলাপের এজেন্ডা ঠিক করতে এবং সেই এজেন্ডায় ‘নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে পূন: নির্বাচন’ প্রসংগ যোগ করতে । সংলাপের ফাদে যেন নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলার বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে না যায় ।
Total Reply(0)
Md. Mofazzal Hossain ১৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:১২ পিএম says : 0
This is the playing of Sangalp & Sanglap". This will never fruitful accept struggle/fighting against a dictator leader. In this universe no dictator government transformed their power without any fighting against mass people. They want a lot of flesh and blood.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন