ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনকে সামনে নিয়ে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর সাথে দ্বিতীয় দফায় ডাকসু নিয়ে মতবিনিময় করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
গতকাল সোমবার বিশ^বিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনের ভিসি কার্যালয় সংলগ্ন আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল রুমে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভা শেষে ভিসি অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা সংবাদ সম্মেলন করেন।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামন। এসময় প্রো-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সামাদ, প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানীসহ বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষগণ উপস্থিত ছিলেন। এসময় ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের দুই গ্রুপ, জাসদ ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ, ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্রমৈত্রী, বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী, ছাত্র আন্দোলনসহ ১৪টি ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও বিশ^বিদ্যালয় শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণও উপস্থিত ছিলেন।
এসময় নির্বাচনে বিভিন্ন হলের মধ্যে ভোট কেন্দ্র করার দাবি জানান ছাত্রলীগ ও জাসদ ছাত্রলীগ। অন্যদিকে হলের বাহিওে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন একাডেমিক ভবনে ভোট কেন্দ্র করার দাবি জানান ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, ছাত্র ফেডারেশনসহ অন্যান্য সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এসময় অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলো ভোটের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের জন্য ভোট কেন্দ্রগুলো সিসিটিভির আওতায় আনারও দাবি জানান।
তবে আলোচনা সভায় বিতর্কের কেন্দ্র বিন্দুতে ছিল আসন্ন নির্বাচনে ভোটার ও প্রার্থীদের বয়স নিয়ে মতবিরোধ। সভায় ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারা বয়সের বিষয়ে ত্রিশ বছরের মধ্যে যে কেউ প্রার্থী হতে পারবেন বলে দাবি জানান। জানা যায়, যারা দ্বিতীয়বারের মতো মাস্টার্স করছে তারা ডাকসু এবং হল সংসদের ফি দেয় এদেরকে ভোটার করার দাবি জানান ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দি। সান্ধ্যকালীন ছাত্রদেরও ভোটার করার দাবি জানান।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, চাকরির বয়সের (৩০) সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভোটার করা হোক। কিন্তু ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন দ্বিমত পোষণ করে শুধুমাত্র নিয়মিত শিক্ষার্থীদেরই ভোটারও প্রার্থী করার দাবি জানান।
সভা শেষে ভিসি অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, সভায় গঠনতন্ত্র ও আচরণ বিধি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গঠনতন্ত্র নিয়ে যে সুপারিশ করা হয়েছে তা সিন্ডিকেট সভায় ওঠবে। আমরা এবং আমাদের সিন্ডিকেট সদস্যরা একটা বিষয়ে একমত যে, যারা ভোট দিতে পারবে তারা যেন প্রার্থী হতে পারবে। এসময় তিনি বলেন, আগামী মার্চেই ডাকসু নির্বাচন হবে সে লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছি।
ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসাইন বলেন, ছাত্রদলসহ সকল ছাত্র সংগঠনের পক্ষে থেকে মধুর ক্যান্টিন, আবাসিক হলগুলোতে সহাবস্থানের দাবি করা হয়েছে। ভোটার এবং প্রার্থীতার ক্ষেত্রে যারা ডাকসুর ফি প্রদান করে সবাইক সুযোগ দিতে হবে। এখানে কোন প্রতিবন্ধকতা করা যাবে না।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, এখন ডিজিটাল যুগে দুর্নীতি করার সুযোগ নেই। বিশ^বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম হল কেন্দ্রীক তাই ভোট কেন্দ্র হলে মধ্যে করা হোক। তিনি আরও বলেন, ক্যাম্পাসে সহাবস্থান আছে কিন্তু ছাত্রদলকে ইতিবাচক ধারায় আসতে হবে। তাহলে তারা সহাবস্থান করতে পারবেন।
ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দি বলেন, ভোট কেন্দ্র ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবনে আনার জন্য প্রশাসনের কাছে অধিকাংশ ছাত্র সংগঠন দাবি জানিয়েছেন। আমরাও একই দাবি জানিয়েছি। একই সঙ্গে, যারা ডাকসু ও হল সংসদের জন্য ফি দেন তাদেরকে ভোটার ও প্রার্থী করার দাবি জানানো হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন