বুধবার ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

প্রস্তুত হচ্ছে ইজতেমা মাঠ

স্বেচ্ছাশ্রমে চলছে প্যান্ডেল তৈরির কাজ

মো: হেদায়েত উল্লাহ, টঙ্গী থেকে | প্রকাশের সময় : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম | আপডেট : ১২:১১ এএম, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমাবেশ বিশ্ব ইজতেমা শুরু হচ্ছে আগামী শুক্রবার থেকে। বাদ ফজর আ’ম বয়ানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ১৬ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে প্রথম ২দিন মাওলারা যোবায়ের অনুসারীদের ইজতেমা। আর সাদ অনুসারীদের ১৭ ফেব্রুয়ারি শুরু করে ১৮ ফেব্রুয়ারি আখেরী মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হবে এবারের বিশ্ব ইজতেমার।
ইজতেমা আয়োজ কমিটির শীর্ষ মুরুব্বীরা বলেছেন, ইজতেমা মাঠের সকল কাজ দু’একদিনের মধ্যেই মুসল্লিদের জন্য সম্পন্ন করা হবে। এবারের ইজতেমায় নিরাপত্তায় ১০ হাজারের বেশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকবে।
গতকাল সোমবার টঙ্গীর তুরাগ তীরে ইজতেমা ময়দানে গিয়ে দেখা যায়, হাজার হাজার দ্বীনি মুসল্লি ও শিক্ষার্থী স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে ইজতেমা ময়দানের বিশাল সামিয়ানা টাঙ্গানোসহ যাবতীয় আনুসঙ্গিক কাজ করছেন। প্রতিদিন ঢাকা ও গাজীপুরসহ আশপাশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা দল বেঁধে ইজতেমা ময়দানে এসে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিত্বে বিশাল প্যান্ডেলের কাজ করছেন। ইতিমধ্যেই ইজতেমা ময়দানের সামিয়ানার কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। জেলা অনুযায়ী বিভিন্ন খিত্তায় মুসল্লিরা অবস্থান করবেন। এবারের বিশ্ব ইজতেমায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মুসল্লির সমাগম ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে। মুসল্লি­দের যাতায়াতসহ ময়দানে সুযোগ-সুবিধার লক্ষ্যে তুরাগ নদীতে সেনাবাহিনী ভাসমান সেতুর কাজ করছে। এখানে সবকিছুই হয়ে থাকে বিশ্ব তবলিগ জামায়াতের সর্বোচ্চ মজলিশে সূরার নির্দেশনা অনুযায়ী।
ইজতেমার ময়দান জুড়ে টাঙানো হচ্ছে চটের সামিয়ানা। বিদ্যুতের তার, গ্যাসের লাইন ও পানির পাইপ টানার কাজও চলছে একই সাথে। বিশ্ব ইজতেমা সফল ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন এবং দ্বীনের মেহনত কায়েমের লক্ষ্যে মুসল্লিরা দলে দলে ভাগ হয়ে ইজতেমার মাঠে কাজ করছেন। এছাড়াও প্রতি বছরের মতো স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ইজতেমা মাঠে প্রস্ততিমূলক কাজ করছেন। ওজু গোসলের স্থান ও টয়লেট পরিস্কার পরিছন্নসহ নানা কাজ করছে জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর ও সিটি কর্পোরেশন। এপর্যন্ত প্যান্ডেলের বেশিরভাগ কাজ হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইজতেমার আয়োজক কর্তৃপক্ষ। জেলা অনুযায়ী ভাগ করা হচ্ছে খিত্তা। বিদেশি মেহমানদের জন্য ময়দানের উত্তর পশ্চিম পাশে তৈরি করা হচ্ছে টিনসেডের আলাদা থাকার জায়গা। মাঠে গিয়ে দেখা যায় অধিকাংশ চটের ছাউনি এখনো বাকি রয়েছে। তবে বাঁশের খুটি পুতা হয়ে গেছে। মাঠের দক্ষিণ পূর্ব দিকে ট্রাক ভর্তি করে নতুন চটের বান্ডেল আসছে এবং মুসল্লিরা তা ট্রাক থেকে নামিয়ে মাঠে ছামিয়ার জন্য কাজ করছেন। মাঠের পূর্ব পাশে বিভিন্ন মাদরাসার শিক্ষার্থীরা বালু দিয়ে মাঠ ভরাটের কাজ করতে দেখা গেছে। বিদেশী মুসল্লিদের জন্য নির্মাণ করা হয়ে টিনের ঘর। বিদেশী মেহমানদের কামরার দক্ষিণ পূর্ব পাশে মূল মঞ্চের কাজ করা হচ্ছে। তুরাগ নদী পারাপারের সুবিধার্থে সেনাবাহিনী অস্থায়ী সেতু নির্মাণ করছেন। যাতে করে মুসল্লিরা এপার ওপার সেতুবন্ধন তৈরি করতে পারেন।
গাজীপুর জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর সোমবার বিশ্ব ইজতেমার মাঠ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, অন্যান্য বারের মতো এবারও সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ, আনসার ও সাদা পোশাকে ১০ হাজারের বেশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আগত মুসল্লি­দের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে থাকবে সিসি ক্যামেরা এবং পুলিশ ও র‌্যাবের পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। ইতোমধ্যে মাঠের চতুরদিকে পর্যবেক্ষণ টাওয়ার তৈরি করা হয়েছে। অন্যান্য বছরের চেয়ে নিরাপত্তা আরো বেশি জোরদার করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন এবার যাতায়াতের সুবিধার্থে বাংলাদেশ রেলওয়ে ১৩৮ টি ট্রেনের ব্যবস্থা করবে এবং বিআরটিসি ৩০০ বাস সার্ভিস সেবা দিবে। মুসল্লিদের পয়ঃনিষ্কাশন এর জন্য ৮ হাজার পাকা টয়লেট ও ১ এক হাজার অস্থায়ী টয়লেট এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওজু গোসলের জন্যও সুব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্যান্য বারের চেয়ে এবছর সিসি ক্যামেরাও বৃদ্ধি করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক আরো বলেন এ পযর্ন্ত প্যান্ডেল তৈরির কাজ ৭০ শতাংশ হয়েছে। আগামী দু’একদিনের মধ্যেই সকল কাজ শেষ করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন