চট্টগ্রামে পৃথক দু’টি অভিযানে ৭০০টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়েছে। ৭১ কেজির বেশি ওজনের এ স্বর্ণের দাম প্রায় ৩১ কোটি টাকা। গতকাল রোববার মাত্র দুই ঘণ্টার ব্যবধানে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও নগরীর সিআরবি এলাকায় এ দু’টি চালান ধরা পড়ে। মীরসরাইয়ে জিপ থেকে উদ্ধার করা হয় ৬০০টি স্বর্ণের বার। নগরীতে প্রাইভেট কারে পাওয়া যায় আরও ১০০টি। এ সময় একটি জিপ, একটি কারসহ চারজনকে পাকড়াও করা হয়েছে।
বিদেশ থেকে চোরাপথে এসব স্বর্ণের বার এসেছে বিষয়টি নিশ্চিত হলেও এর নেপথ্যে কারা তা তাৎক্ষণিক জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে আকাশপথে বড় কোন চালান চট্টগ্রামে খালাস হয়েছে। আর ওই চালান থেকেই স্বর্ণের বারগুলো ঢাকায় নেয়া হচ্ছিল। দুপুর পৌনে ১টায় মিরসরাই উপজেলার উত্তর সোনাপাহাড় এলাকায় একটি জিপে তল্লাশি চালায় জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ। জিপের পেছনের সিটের নিচে তেলের ট্যাংকের ওপর বিশেষ বাক্স বানিয়ে সেখানে স্বর্ণের বারগুলো নেওয়া হয়েছিল। বাক্সে ৬০টি প্যাকেট পাওয়া গেছে। প্রতিটি প্যাকেটে ১০টি করে স্বর্ণের বার ছিল। একটি স্বর্ণের বারের ওজন ১০ তোলা।
আটককৃতরা হলো- চুয়াডাঙা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা পৌরসভার আজমপুর গ্রামের মৃত শহীদুল ইসলামের ছেলে রাকিব (৩৪) এবং একই এলাকার মোবারক পাড়া গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে করিম খান কালু (৩৪)। এ সময় তাদের ব্যবহৃত সাদা রঙের একটি জিপ (চট্ট-মেট্টো ঘ ১৮-২১৪৪) জব্দ করা হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মশিউদ্দৌলা রেজা জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জিপটি আটক করা হয়। পরে সেখানে তল্লাশি চালিয়ে বিশেষ ব্যবস্থায় লুকানো স্বর্ণের চালানটি জব্দ করা হয়। উদ্ধারকৃত স্বর্ণের আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ২৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা বলেও জানান তিনি। এছাড়াও তাদের কাজ থেকে ৬টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হেয়ছে। আটকৃকতদের জিজ্ঞাসাবাদ ও এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এর দুই ঘণ্টা আগে নগরীর কোতোয়ালী থানার সিআরবি এলাকায় একটি প্রাইভেট কারে তল্লাশি চালিয়ে ১০০ পিস স্বর্ণের বার উদ্ধার করে গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো- লাভু শাহা ওরফে প্রলয় কুমার শাহা (৫৯) ও মো. বিলাল হোসেন ওরফে কাদের (২৮)। লাভু শাহা নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর থানার ১৫ নং ওয়ার্ডের সুতার পাড়া নিতাই গঞ্জের মৃত পরেশ চন্দ্র শাহার পুত্র। কাদের শরীয়তপুর জেলার ডামুডা থানার ছোট শিদলপুরা গ্রামের হাশেম সওদাগরের পুত্র। তার বাসা রাজধানীর বাড্ডা মোল্লা বাড়ি আদর্শ নগরে।
নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (বন্দর) এস এম মোস্তাইন হোসেন বলেন, স্বর্ণের বারগুলো নিয়ে তারা নারায়ণগঞ্জ হয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। বিশেষ বেল্টে রাখা স্বর্ণের বার প্রলয় কুমার শাহার কোমরে বাঁধা ছিল।
এর আগেও তারা চট্টগ্রাম থেকে স্বর্ণ নিয়ে ঢাকায় বিভিন্ন জুয়েলারীতে সরবরাহ দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন। এসব স্বর্ণের কোন বৈধ কাগজপত্র তারা দেখাতে পারেনি। এরা স্বর্ণ চোরাচালন চক্রের সাথে জড়িত উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিস্তারিত তথ্য জানতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এ ব্যাপারে কোতোয়ালী থানায় মামলা হয়েছে। উদ্ধারকৃত স্বর্ণের দাম ৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। উল্লেখ্য এর আগেও চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় নেয়ার পথে বেশ কয়েকবার স্বর্ণের চালান ধরা পড়ে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন