ভারতের বিরোধী দলগুলো সম্মিলিতভাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে একটা সম্মিলিত আগ্রাসী প্রচারণা শুরু করেছে। তাদের ভাষায় সামরিক বাহিনীকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহারের জন্য মোদি যে তৎপরতা শুরু করেছেন, তার বিরুদ্ধে প্রচারণায় নেমেছেন তারা। সামরিক বাহিনীর তৎপরতাকে ব্যবহার করে জাতীয়তাবাদী মনোভাব উসকে দিয়ে সাধারণ নির্বাচনে সুফল পেতে চেষ্টা করছেন মোদি। পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গি গ্রুপ জয়শ-ই-মোহাম্মদ (জেইএম) ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে আত্মঘাতী হামলা চালায় এবং এতে ভারতীয় প্যারামিলিটারি বাহিনীর ৪০ সদস্য নিহত হয়। এই ঘটনায় ভারতে যে উগ্র জাতীয়তাবাদ ছড়িয়ে পড়েছে, সেটাকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করতে গেলে উল্টা প্রতিক্রিয়া হতে পারে। জরিপকারীরা বলছেন জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মোদির ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ভুল করছে বিরোধী দলগুলো। তাদের আরও মৌলিক বিষয়গুলোর দিকে নজর দেয়া উচিত, যেমন কর্মসংস্থানের অভাব এবং কৃষকদের দুর্দশা। ভোটাররা এই বিষয়গুলো নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং এগুলোর কারণেই তিনটি রাজ্যের নির্বাচনে হেরে গেছে বিজেপি। কিন্তু পাকিস্তানের উত্তরপূর্বাঞ্চলে ২৬ ফেব্রুয়ারি ভারত যে বিমান হামলা চালায়, তার সাফল্য নিয়ে প্রবল সন্দেহ তৈরি হওয়ায় মোদির অবস্থানকে এখন নড়বড়ে মনে করছে বিরোধী দলগুলো। সরকারের দাবি এবং তাদের আচরণ সবই এখন সন্দেহজনক হয়ে পড়েছে। প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস পার্টি বলেছে যে অধিকাংশ বিরোধী দল – বর্তমানে ২০টির মতো বিরোধী দল রয়েছে – তারা সবাই বিজেপির এই মতের বিরোধী যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা চালানোর জন্য ভারতের মোদির মতো নেতা প্রয়োজন। কংগ্রেসের মুখপাত্র সঞ্জয় ঝা বলেছেন, “আমরা যেটা দেখছি, সেটা হলো সরকার নিজেদের ব্যর্থতা থেকে জনগণের মনোযোগ অন্যদিকে ফেরানোর চেষ্টা করছে। কারণ তিনটি রাজ্যের নির্বাচনে তারা হেরে গেছে এবং জনগণের মনোভাব এখন তাদের বিপক্ষে”। জরিপ পরিচালনাকারীরা বলেছেন যে, আত্মঘাতী বোমা হামলার জবাবে ভারত যে আগ্রাসী ভূমিকা রেখেছে, সেটা মোদি এবং বিজেপির অবস্থানকে শক্তিশালী করবে। মোদিকে ভোটাররা সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষম দৃঢ়চেতা হিসেবে দেখছে। একমাত্র সমস্যা যেটা হতে পারে, সেটা হলো সরকারের দাবি যদি মিথ্যা প্রমাণিত হয়। সরকার দাবি করেছে যে তাদের হামলায় বিপুল সংখ্যক মুসলিম জঙ্গি নিহত হয়েছে। রয়টার্স স্যাটেলাইট ইমেজ পর্যালোচনা করে বলেছে যে, যে সব মাদ্রাসা এবং এতদসংলগ্ন স্থাপনায় আঘাত হানার দাবি করেছে ভারত, সেগুলো ধ্বংস হয়নি। অন্যদিকে নিজেদের দাবির স্বপক্ষে প্রমাণ দেখাতেও অস্বীকার করছে মোদির সরকার। কংগ্রেসের ঝা বলেন, “আমরা বিজেপির ব্যর্থতাগুলো তুলে ধরবো – তাদের আমলে কতজন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য নিহত হয়েছে, জঙ্গিবাদের উত্থান হয়েছে, এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি নিয়ে কেউ কথা বলছে না, যেভাবে মোদি কাশ্মীরকে সঙ্কট থেকে উদ্ধারে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন”। এসএএম।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন