শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

নির্বাচন কেমন হবে সেটা সরকার ঠিক করে দেয়

সাংবাদিকদের ইসি মাহবুব

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মাহবুব তালুকদার বলেছেন, নির্বাচনকে অর্থবহ করার জন্য এবং গণতন্ত্রকে অবারিত করার স্বার্থে নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার প্রয়োজন। নির্বাচন কেমন হবে সেটা বর্তমানে সরকার ঠিক করে দেয়। তিনি বলেন, ভোটারদের নির্বাচন বিমুখতা গণতন্ত্র বিমুখতায় পর্যবসিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। উপজেলা নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় জয়ীদের ব্যাপারে অভিমত ব্যাক্ত করে মাহবুব তালুকদার বলেছেন, বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় বিজয়ীদের ইলেকটেড না বলে সিলেকটেড বলা যেতে পারে। গতকাল নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
মাহবুব তালুকদার লিখিত বক্তব্যে বলেন, কয়েক দিন যাবৎ কয়েকজন সাংবাদিক জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন সম্পর্কে আমার কাছে প্রশ্ন রাখছেন। কিন্তু একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আমার নতুন করে বলার কিছু নেই। জাতীয় নির্বাচন কেমন হয়েছে, প্রতিটি বিবেকমান মানুষের কাছে এ প্রশ্নের উত্তর আছে। জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে যাদের স্বার্থ জড়িত, তারা কখনো এর সঠিক উত্তর দিতে পারবেন না বা দেবেন না। জাতীয় নির্বাচন কেবল রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতার বদল নয়, এতে গণতন্ত্র কতটা সমুন্নত হলো, তা-ও বিবেচনাযোগ্য।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে মাহবুব তালুকদার বলেন, এবারের উপজেলা নির্বাচনকে আমি অপরূপ নির্বাচন বলতে চাই। আইনে রাজনৈতিক নির্বাচনের কথা বলা হলেও বাস্তবে এর মাথাটা নির্বাচিত হচ্ছে দলীয় প্রতীকে এবং দেহটুকু নির্বাচিত হচ্ছে নির্দলীয়ভাবে। এই নির্বাচনের স্বরূপটি তাহলে কেমন দাঁড়ায়? অন্যদিকে এই নির্বাচনে অধিকাংশ বিরোধী রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেনি। এ জন্য উপজেলা নির্বাচনের জৌলুশ নেই। একতরফা নির্বাচনের কারণে ভোটাররাও কেউ ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার বিষয়ে আগ্রহী নয়। এহেন নির্বাচনবিমুখতা গণতন্ত্রবিমুখতায় পর্যবসিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই অবস্থা গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত।
উপজেলা নির্বাচনে শতাধিক প্রার্থীর বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হওয়ার বিষয়ে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, আজকাল বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত কথাটা বেশ চালু হয়েছে। আমি এর অর্থ বুঝি না। আমার মতে, নির্বাচন মানেই হচ্ছে একাধিকের মধ্যে বাছাই। তাই যা প্রতিদ্ব›িদ্বতা নয়, তা নির্বাচন হয় কী করে? ইংরেজিতে প্রতিদ্ব›িদ্বতাহীনদের ইলেকটেড না বলে সিলেকটেড বলা যেতে পারে কি? এবারের উপজেলা নির্বাচনের চারটি ধাপে শতাধিক ব্যক্তি চেয়ারম্যান পদে আসীন হয়েছেন। পরবর্তী সময়ে আরও ৫০ জন সম্ভবত বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় পদে আসীন হবেন। প্রতিদ্ব›িদ্বতাহীনভাবে জনপ্রতিনিধির পদে আসীন হওয়ার রেওয়াজ গণতন্ত্রের জন্য সুসংবাদ নয়।
মাহবুব তালুকদার বলেন, কিছুদিন পূর্বে একজন সংসদ সদস্য, যিনি সাবেক একজন মন্ত্রীও বটে, তিনি সংসদে বলেছেন, নির্বাচনকে যথাযথ মর্যাদায় ফিরিয়ে আনতে হবে। তার ভাষ্যমতে প্রশ্ন থেকে যায়, এই নির্বাচন মর্যাদা হারাল কবে? জাতীয় নির্বাচনের সময়, নাকি উপজেলা নির্বাচনের সময়? এ জন্য কে বা কারা দায়ী, তা তিনি সুনির্দিষ্টভাবে বলেননি। তবে তাঁর এই বোধেদয় নিশ্চয়ই নির্বাচনসংশ্লিষ্ট সবাই অনুপ্রাণিত করবে। মর্যাদাহীন নির্বাচন করে কেউ খুশি হতে পারে না।
নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার প্রয়োজন ইল্লেখ করে মাহবুব তালুকদার বলেন, নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার নির্বাচন কমিশনের কাজ নয়, রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়। স্থানীয় নির্বাচন কী পদ্ধতিতে কতখানি উন্মুক্ত হবে, সেটা বর্তমানে সরকার ঠিক করে দেয়। ভবিষ্যতে অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য, বিশ্বাসযোগ্য, আইনানুগ ও উন্মুক্ত নির্বাচন হলে এবং সব প্রার্থীর সমান সুযোগ নিশ্চিত হলে, সব দল তাতে অংশগ্রহণ করবে বলে আশা করা যায়। নির্বাচন ব্যবস্থাপনার পদ্ধতি পরিবর্তন করে নির্বাচন কখন হবে, কীভাবে হবে এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের কাছে ন্যস্ত হলে, ভোটারদের উপস্থিতির জন্য আর হা-হুতাশ করতে হবে না। বিষয়টি ভেবে দেখা প্রয়োজন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Habibur Nabi Sohel ১৯ মার্চ, ২০১৯, ১:৫৫ এএম says : 0
আমাদের টাকা দিয়ে আজ আমাদের বোকা বানানো হচ্ছে। আমরা জনগণ কিছুই করতে পারছি না। আর এই টাকা নির্বাচন কমিশন খাচ্ছে বড় বড় রাগব-বোয়াল খাচ্ছে
Total Reply(0)
Aren Nishan ১৯ মার্চ, ২০১৯, ২:০২ এএম says : 0
আপনিতো সত্য কথা গুলাই বলেন কিন্তু আমার কাছে মনে হয় নির্বাচনকে গ্রহনযোগ্যতা দিতেই আপনি ক্রুটি কিছু বলেদেন যাতে সহজে জনগনের ভোটের অধিকার বিহীন নির্বাচন সফলতা পায়। পারলে আপনি নির্বাচন কমিশন থেকে পদত্যাগ করুন,,কারন উল্লেখ করুন-নির্বাচনে ভোট জনগনের সম্পৃক্তা নেই।
Total Reply(0)
Jabed Kaiser ১৯ মার্চ, ২০১৯, ২:০৭ এএম says : 0
পবিত্র সংবিধান থেকে নির্বাচন সংক্রান্ত এবং নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত যত গুলো ধারা, উপধারা আছে সব ই বাদ দিয়ে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন দ্রুত বিলুপ্ত করা হোক। তাতে জনগণ ও শান্তি পাবে, সরকার ও স্বস্তি পাবে।
Total Reply(0)
Abul kashem ১৯ মার্চ, ২০১৯, ২:০৯ এএম says : 0
মাহাবুব সাব আপনি এই পয্যন্ত যা বল্লেন কি কাযে আসলো জাতি আপার কি দরকার বিরুদিতা করার আপনি ভালো মানুষ আপনি কেনো এখন ওপদে আচেন আপনি সরে জান না কেনো তারা যা করার করুক জাতি দেখুক আপনার বিরুদিতা করার দর কার নাই সময় আসবে এক দিন
Total Reply(0)
Rafiul Islam Noor ১৯ মার্চ, ২০১৯, ২:১০ এএম says : 0
এসব আজাইরা কথা বলে কোন লাভ আছে????? এতই যদি বিবেকে বাধত তবে, এমন গৃহপালিত ইসি না থেকে পদত্যাগ করতে পারতেন।
Total Reply(0)
মোহাম্মাদ আলী খোকন ১০ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৪:১৬ এএম says : 0
নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পার্থীদের (মেম্বার) এস এস সি, চেয়ারম্যান (এইচ এস সি) পাস হতে হবে,এতে করে দেশ এগিয়ে যাবে
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন