৬ বছর বয়সী এক কন্যা শিশুর টনসিল অপারেশনের পর মৃত জেনেও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ অমানবিকভাবে মৃত শিশুর পিতার কাছ থেকে অপারেশন বাবদ সাড়ে ১১ হাজার টাকা বুঝে নিয়ে উিন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র রেফার্ড করেছে । ঘটনাটি ঘটেছে বগুড়া শহরের মালেকা নার্সিং হোমে। সোমবার রাতে এই ঘটনার কথা জেনে বিক্ষুদ্ধ লোকজন ক্লিনিকে হামলা চালায় । পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে ।
মর্মান্তিক এই ঘটনার বিবরণে জানা যায় , বগুড়ার পাশ্ববর্তি সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার নলকার কায়েম গ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেনীর পড়–য়া ছাত্রী হুমায়রা আক্তার (৬) এর গলার টনসিল চিকিৎসার জন্য বগুড়ায় আসে তার বাবা মা । দালাল মারফত সোমবার সকালে তার বাবা কৃষক হারুনুর রশিদ ও মা সাহেদা এবং মামা আলমগীর তালুকদার মালেকা নার্সিং হোমে ভর্তি করে । বিকালে টনসিল অপারেশনের জন্য তাকে ক্লিনিকের অপারেশন থিয়েটারে নেয় একজন এনেসথিষ্ট তাকে অজ্ঞান করে । আধা ঘন্টা পর কন্ট্রাক্টে কল করে আনা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ এম সাইদুর রহমান শিশুটির টনসিল অপারেশন শেষ করে স্বজনদের জানান , অপারেশন সাকসেসফুল । অপারেশনের পর শিশু হুমায়রাকে জেনারেল বেডে এনে রাখার পর তার শ্বাস প্রশ্বাস বন্ধ দেখে বাবা মাও অপর স্বজনরা উদ্বিগ্ন বোধ করেন । বারবার ডাক্তার ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে জানালে তাদের আশ্বস্ত করে বলা হয় , সব ঠিক আছে , অপারেশনের বিল জমা দিন। তবে বিল নেওয়ার পর শিশুটির অবস্থা খারাপ এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিরাজগঞ্জের খাজা এনায়েতপুর মেডিকেলে নিতে হবে মর্মে রেফার্ড করা হয় । এই ঘটনায় হতভম্ব হুমায়রার বাবা মা ও মামা তাকে নিয়ে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে গেলে সেখানকার চিকিৎসকরা জানায় , এখানে এসছেন কেন দ্রুত জিয়া মেডিকেলে যান । হুমায়রাকে জিয়া মেডিকেলে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসকরা বলেন , মেয়েটিতো অনেক আগেই মারা গেছে ।
এরপর শিশুটিকে পুনরায় মালেকা নার্সিং হোমে ফিরিয়ে এনে তার বাবা মা কান্না কাটি করে অভিযোগ করতে থাকে তাদের মেয়েকে মেরে ফেলা হয়েছে । এতে লোকজন জড়ো হয়ে প্রতিবাদ করতে করতে ১১ টার পর বিক্ষুদ্ধ লোকজন কিøনিকে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করতে থাকে । খুজতে থাকে ডাক্তার নার্সদের । ভয়ে ডাক্তার , নার্স কর্মচারিরা বাতি নিভিয়ে গোপনে ক্লিনিক ত্যাগ করেণ । খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়šত্রনে আনে । পুলিশ কে এনেসথেসিয়ার কাজ করেছে তা’ জানতে চেয়েও জানতে পারেনি । মাঝরাতে অবশ্য ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মাধ্যমে একটা রফাদফা আপোষ মিমাংসার কাজ সেরে নিয়েছে বলে শোনা গেছে ।
এই ঘটনায় মামলা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মঙ্গলবার বগুড়ার সদর থানার ওসি বদিউজ্জামান বলেন কেউ মামলা করতে আসেনি । মামলা করলে পুলিশী আইনী পদক্ষেপ নিতে অগ্রসর হবে । একই কথা বলেছেন বগুড়ার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডাঃ সামির হোসেন মিশু । তিনি বলেন , ক্ষতিগ্রস্থ বা সংক্ষুব্ধরা অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনার পর থেকে ডাঃ সাইদুর রহমান মোবাইল বন্ধ রাখায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন