শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বাংলা নববর্ষ সংখ্যা

অপসংস্কৃতির আগ্রাসন

মেহেদী হাসান পলাশ | প্রকাশের সময় : ১৪ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৮ এএম

পহেলা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষ। বাঙালির প্রাণের উৎসব নববর্ষ। এ দিনে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে বাঙালি এক প্রাণে, এক সুরে মেতে ওঠে উৎসবের আমেজে। কিন্তু নাগরিক জীবনে পহেলা বৈশাখ পালনের যে ধারা আমরা সৃষ্টি করেছি বা করছি তা আমাদের সংস্কৃতি নয়। হাজার বছরের নববর্ষ পালনের ঐতিহ্য নয়। পহেলা বৈশাখকে তরুণ-তরুণীরা উৎসবের নামে, শোভাযাত্রার নামে যেভাবে অবাধ মেলামেশার উপলক্ষ বানিয়েছে তা কোনোভাবেই মুসলিম সংস্কৃতির মধ্যে পড়ে না। পাশ্চাত্য ও ইসলাম বিরোধী শক্তিগুলো এভাবেই মুসলিম তরুণদের অবাধ উন্মত্ততার দিকে ঠেলে দিয়ে লক্ষ্যচ্যুত করে ফেলছে। এই অবাধ মেলামেশার ফলে আমাদের সমাজে নানা প্রকার অবক্ষয়, অপরাধ বাড়ছে। বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতাও। বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রতিক আত্মহত্যার ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করলে এর প্রধান কারণ হিসেবে ধরা পড়বে নারী-পুরুষের অবাধ ও অবৈধ মেলামেশা।
গত বছর পহেলা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাকিব হোসেন ও একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নাভিলা তাবাচ্ছুম ঘনিষ্ঠ হয়ে হাঁটছিলেন। বিষয়টি নিয়ে তাদের কাছে প্রশ্ন রাখা হলে কিছুটা লজ্জিত হয়ে রাকিব বলেন, ঠিক নয়; তবে আজ পহেলা বৈশাখ বলে টিভি চ্যানেলের কল্যাণে আপনারা এই সাধারণ দৃশ্য দেখে হয়তো আপত্তি করছেন। কিন্তু এই ঢাবি ক্যাম্পাস ও তার সংলগ্ন এলাকাগুলোতে বছরের বাকি ৩৬৪ দিন ২৪ ঘণ্টা তরুণ-তরুণীরা যেভাবে ঘনিষ্ঠ হয়ে বসে থাকে তা নিয়ে আপনারা কথা বলেন না কেন? বিশেষ করে সন্ধ্যার পর এই এলাকায় এমন কোনো আপত্তিকর কাজ নাই, যা হয় না। প্রশ্ন তুললে গোটা ব্যবস্থা নিয়েই প্রশ্ন তোলা উচিত। রাকিব হয়তো ঠিকই বলেছে। কিন্তু তার পরও কথা থেকে যায়।
পহেলা বৈশাখে আমরা যারা বাঙালীয়ানার প্লাবনে ভেসে যাই, মাত্র এক সপ্তাহ পরে তাদের বৈশাখ মাসের তারিখটি বলতে বললে মাথার চুল ছিঁড়তে হবে। আমাদের জাতীয় জীবনে এই একটি দিন ছাড়া বাংলা সনের কোনো ব্যবহার চোখে পড়ে না। ইরান সফরকালে এ লেখক তেহরানে ইরানীদের সাথে কথা প্রসঙ্গে ঈসায়ী তারিখের প্রসঙ্গ এলে তাদের কেউই মোবাইল না দেখে, ক্যালেন্ডার না দেখে বলতে পারেনি। ইরানে রাষ্ট্রীয়ভাবে সকল কাজে ফার্সি সন ব্যবহার করা হয়। তাদের নওরোজ বা নববর্ষ উৎসব পৃথিবী বিখ্যাত। ইতিহাস ও উৎযাপন সব বিচারেই তা বাংলা নববর্ষের থেকে অনেক উন্নত। কিন্তু সেই নওরোজ উৎসব পুরোটাই পালিত হয় ইরানী সংস্কৃতিকে ধারণ করে। এ উৎসবের যেকোনো একটি বিচ্ছিন্ন ছবি দেখলেও বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের মানুষ তাকে ইরানের নওরোজ উৎসব বলে চিহ্নিত করতে পারবে।
কিন্তু বাংলা নববর্ষে মুসলিম ছেলেরা ধুতি পরে, ললাটে তিলক এঁকে বাঙালি সেজে যেভাবে নাচগান শোভাযাত্রা করে তার ছবি দেখে বিশ্ববাসীর বোঝার উপায় থাকে না এটা বাংলাদেশের, না ভারতীয় উৎসব? কাজেই বাংলাদেশি সংস্কৃতির বিশ্বায়নের কথা বললে আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের সংস্কৃতি দিয়েই তাকে ব্রান্ডিং করতে হবে। ধুতি-তিলক দেখতে বিশ্ববাসীর বাংলাদেশে আসার প্রয়োজন নেই।
এসব কারণেই বাংলা নববর্ষ পালনের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম সম্প্রদায়, সংস্কৃতিক কর্মী ও অভিভাবকবৃন্দ। বাংলাদেশের শতকরা নব্বইভাগ জনগোষ্ঠি মুসলিম। কাজেই এদেশের নববর্ষ উৎসব উৎযাপনের রীতি ও পদ্ধতিতে সেই জনগোষ্ঠির বিশ্বাস ও আচারের প্রতিফলন থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু বাংলা নববর্ষকে ঘিরে সার্বজনীন বাঙালি সংস্কৃতির বরণ ডালায় যেভাবে পৌত্তলিকতাকে মুসলিম সমাজে, পরিবারে ও ব্যক্তি জীবনে অনুপ্রবেশ করানো হচ্ছে তাতেই তারা আপত্তি তুলেছেন। বিশেষ করে এর সাথে বাংলা নববর্ষ উৎযাপনের হাজার বছরের ঐতিহ্যের কোনো সাদৃশ্য না থাকার পরও তা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মুসলিম সমাজে অনুপ্রবেশ করানোর জোর চেষ্টাই তাদের আপত্তির মূল কারণ।
ছায়ানট শুরু থেকেই রবীন্দ্র সংস্কৃতির রঙে বাংলাদেশকে সাজাতে চেয়েছে। কিন্তু এটা পরিষ্কার যে, রবীন্দ্রনাথের রাষ্ট্রদর্শন ও সংস্কৃতিক চেতনা এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও তার সংস্কৃতিক চেতনা এক নয়। রবীন্দ্রনাথের রাষ্ট্রচিন্তা ‘এক মহাভারতের সাগর তীরে’ বিলীন হবার। তাও আবার ‘এক ধর্মরাজ্য’ মহাভারতের রাষ্ট্রভাবনা। বাংলাদেশ বলে আলাদা কোনো রাষ্ট্র বা রাজনৈতিক সত্ত্বার স্বীকৃতি নেই সেখানে। রবীন্দ্রনাথ ১৯০৫ সালের ২৫ আগস্ট বঙ্গভঙ্গ নিয়ে আয়োজিত একটি জনসভায় তাঁর ‘অবস্থা ও ব্যবস্থা’ প্রবন্ধটি পাঠ করেন। তাতে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে বঙ্গব্যবচ্ছেদের আক্ষেপে আমরা যথাসম্ভব বিলাতি জিনিস কেনা বন্ধ করিয়া দেশী জিনিস কিনিবার জন্য যে সঙ্কল্প করিয়াছি সেই সঙ্কল্পটিকে শুদ্ধভাবে, গভীরভাবে, স্থায়ী মঙ্গলের উপর স্থাপিত করিতে হইবে।--- ইহা দেশের পূজা, ইহা একটি মহান সংকল্পের নিকটে আত্মনিবেদন।’ (রবীন্দ্র রচনাবলী-৩, অবস্থা ও ব্যবস্থা, পৃষ্ঠা-৬৭১ দ্রষ্টব্য)।
বঙ্গভঙ্গের সাতদিন আগে ৯ অক্টোবর ১৯০৫ সালে কোলকাতার বাগবাজারে পশুপতি বসুর বাসভবনে রবীন্দ্রনাথ বিজয়া সম্মিলন নামে এক ভাষণে বলেন, “হে বন্ধুগণ আজ আমাদের বিজয়া সম্মিলনের দিনে হৃদয়কে একবার আমাদের এই বাংলাদেশের সর্বত্র প্রেরণ করো। আজ বাংলাদেশের সমস্ত ছায়াতরুনিবিড় গ্রামগুলির উপর এতক্ষণ যে একাদশীয় চন্দ্রমা জোৎস্ন্যাধারা অজস্ত্র ঢালিয়া দিয়াছে সেই নিস্তব্ধ সূচী রুচির সন্ধ্যাকাশে তোমাদের সম্মিলিত হৃদয়ের ‘বন্দেমাতরম’ গীতধ্বনী একপ্রান্ত হইতে আর এক প্রান্তে পরিব্যাপ্ত হইয়া যাক। একবার করজোড় করিয়া নতশিরে বিশ্বভুবনেশ্বরের কাছে প্রার্থনা করো:
বাংলার মাটি বাংলার জল
বাংলার বায়ু বাংলার ফল
পূণ্য হউক পূণ্য হউক
পূণ্য হউক হে ভগবান।”
(প্রাগুক্ত, বিজয়া সম্মিলন, পৃষ্ঠা-৭৫৯ দ্রষ্টব্য)।
রবীন্দ্রনাথের সংস্কৃতির মূল উপজীব্য হচ্ছে বেদ, পুরাণ, উপনিষদ। বেদ, পুরাণ, উপনিষদের সংস্কৃতি কখনো কোনো মুসলমানের সংস্কৃতি হতে পারে না। তাঁর ধর্মবিশ্বাস যাই-ই থাক কিন্তু তার প্রকাশে তিনি বেদ, পুরাণ ও উপনিষদের চেতনা উপমা, রূপক ও কাহিনী যেভাবে ধার করেছেন তা কোনো মুসলমানের অনুসরণীয় হতে পারে না। রবীন্দ্রনাথের বেদ ও উপনিষদের উপমা ও চেতনা এবং জাতীয়তাবাদ ও রাষ্ট্রদর্শনের চেতনার বাইরেও রবীন্দ্রনাথের আরো অনেক সৃষ্টি রয়েছে সেগুলো নিয়ে কেউ আপত্তি তোলেনি কখনো।
তবে একথা অনস্বীকার্য যে, হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বাংলাদেশের দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ স¤প্রদায়। পরধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহিষ্ণুতা প্রদর্শন ইসলামের নির্দেশ। হাজার বছর ধরে এ দেশের হিন্দু-মুসলমান পাশাপাশি বসবাস করে এই সহিষ্ণুতার বিরল নজির স্থাপন করেছে। চৈত্র সংক্রান্তি কিম্বা দুর্গাপূজার মেলায় অনেক বাঙালি মুসলিম তরুণরা অংশ নিয়ে থাকে। কিন্তু চৈত্র সংক্রান্তি বা দুর্গাপূজাকে কোনো দিন তাদের সংস্কৃতি বলে মনে করেনি। একইভাবে মুসলমানদের ঈদের মাঠের রাস্তায় হিন্দুরা মিষ্টির দোকান দিয়ে থাকে, চকবাজার থেকে ইফতারীর স্বাদ তারাও গ্রহণ করে থাকে। কিন্তু ঈদ বা রমজানকে কেউ তাদের সংস্কৃতি বলে গ্রহণ করেনি। আজও তারা শাখারী বাজার, ইসলামপুরের সাথে পহেলা বৈশাখ বা হালখাতা পালন না করে একদিন পর শত শত মাইল দূরের বাগবাজারের সাথে উদযাপন করে। এর মূল কারণ দুইটি পঞ্জিকা। মোহাম্মাদী পঞ্জিকা ও লোকনাথ পঞ্জিকা। আক্ষরিক অর্থে এ শুধু দুই পঞ্জিকার দ্ব›দ্ব নয়। এর পেছনে রয়েছে হাজার বছরের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ধর্ম বিশ্বাসের দ্ব›দ্ব। বাঙালিত্বের রাখী বেঁধে তাকে এক করার চেষ্টা আজকের মতোই চলছে বহুকাল ধরে।
আমরা চাই বাংলাদেশের মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ অন্যান্য জাতি গোষ্ঠির লোকেরা নিজ নিজ সাংস্কৃতিক ধারা বজায় রেখেই একসাথে জাতীয় উৎসবগুলো উদযাপন করে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির পরিচয় তুলে ধরবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠির বৈসাবি উদযাপনকে পর্যালোচনা করা যেতে পারে। এ তিনটি সম্প্রদায়ই পহেলা বৈশাখকে তাদের নববর্ষ হিসেবে উদযাপন করে। চাকমারা ‘বিজু’, মারমারা ‘সাংগ্রাই’, ত্রিপুরারা ‘বৈসু’ নামে একইসাথে এ উৎসব উদযাপন করে থাকে। একইসাথে পালনের সুবিধার্থে তারা তিনটি উৎসবের নামের প্রথম বর্ণ নিয়ে ‘বৈসাবি’ উৎসব নামে এক সাথে পালন করে। একই সময়ে সেখানে বসবাসরত বাঙালিরা নববর্ষ পালন করে থাকে। একই লাইনে দাঁড়িয়ে শোভা যাত্রায় শামিল হয়। তবে একই সাথে পালন করলেও উদযাপন রীতি ও আচারে তারা নিজ নিজ সংস্কৃতিকে অনুসরণ করে থাকে।
ইসলাম ধর্মে শিরক ও পৌত্তলিকতা হারাম। কিন্তু নববর্ষ উদযাপনের নামে বাঙালি সংস্কৃতির বরণ ডালায় শিরক, পৌত্তলিকতা সাজিয়ে, অপসংস্কৃতির নানা পসরা যেভাবে মুসলিম সমাজে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চলছে, এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের বিরোধিতা শুধু সেখানেই। তারা চায়, সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশের জাতীয় অনুষ্ঠানে তাদের বিশ্বাস, মূল্যবোধ ও সংস্কৃতির প্রতিফলন ঘটুক। একথা সত্য যে, সংস্কৃতি একটি প্রবাহমান ধারা। এর আদান-প্রদান খুবই স্বাভাবিক ঘটনা।
প্রশ্ন হচ্ছে, অপসংস্কৃতিক আগ্রাসন নিয়ে এই যে এত কথা বলা হলো তা রোধের উপায় কী? শুধু অপসংস্কৃতিক আগ্রাসন হচ্ছে বলে শোরগোল তুললে, প্রতিবাদ করলে, লেখালেখি করলেই কি তা রোধ করা সম্ভব? প্রকৃতপক্ষে প্রতিবাদ করে, প্রতিরোধ করে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন সর্বক্ষেত্রে বন্ধ করা সম্ভব নয়। কারণ সাংস্কৃতিক আগ্রাসন সব সময় দৃশ্যমান বা প্রত্যক্ষ হয় না। সাংস্কৃতিক আগ্রাসন বন্ধের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হচ্ছে, সুস্থ ও নিজস্ব সাংস্কৃতিক আন্দোলনকে জোরদার ও জনপ্রিয় করা। এ লক্ষ্যে কার্যকর সচেতনতা, কর্মসূচি ও প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করা। সুস্থ ও দেশীয় সাংস্কৃতিক কর্মসূচি নিজে থেকেই অপসংস্কৃতি ও বিদেশি সাংস্কৃতিক আগ্রাসন বন্ধ করে দেয়। যেমন, সমুদ্রগামী নদীতে যদি নিজস্ব পানির প্রবাহ অপ্রতুল হয়ে পড়ে তখন সহজেই সেখানে লবণাক্ত পানির প্রবাহ প্রবেশ করে। কিন্তু সে নদীতে নিজস্ব পানির সঠিক প্রবাহ থাকলে তা আপনা আপনি সমুদ্রের লবণাক্ত পানি প্রবেশে বাধা দিয়ে থাকে। প্রতিবাদ করে তা বন্ধ করা যায় না। কাজেই আমরা যদি পহেলা বৈশাখসহ সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে অনুপ্রবিষ্ট অপসাংস্কৃতিক আগ্রাসন বন্ধ করতে চাই, তাহলে নতুন প্রজন্মের কাছে জাতীয় সংস্কৃতির প্রকৃত স্বরূপ তুলে ধরে তাদের সামনে অপসংস্কৃতির মুখোশ উন্মোচন করতে হবে, পাশাপাশি সুস্থ ও দেশীয় সাংস্কৃতিক কর্মসূচিতে তাদের জড়িত করতে হবে। সাংস্কৃতিক কর্মীদের, সংগঠকদের খুঁজে বের করতে হবে সেই জাতীয় সংস্কৃতির পথ ও পদ্ধতি। নববর্ষ কীভাবে পালন করলে আমাদের ধর্ম ও সংস্কৃতি রক্ষা পায়, আবার তরুণরা তাদের আনন্দ থেকেও বঞ্চিত না হয় সে রাস্তা তাদের সামনে বের করে দেয়ার দায়িত্ব সংস্কৃতি কর্মী ও সংগঠকদের। সে কর্মসূচি এমন হতে হবে যা তরুণদের কাছে জনপ্রিয়, আকর্ষণীয় ও গ্রহণযোগ্য হবে। এটাও মনে রাখা প্রয়োজন, তারুণ্যই উৎসব, উৎসব তরুণদের জন্য, তরুণরাই উৎসবের প্রাণ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (16)
এম হোসাইন ১৪ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:৫৩ এএম says : 0
অসাধারণ লিখেছেন। অপসংস্কৃতি এবং বিজাতীয় রাহু গ্রাসের বিধ্বংশী প্রতাপ থেকে জাতিকে মুক্ত করতে দেশীয় এবং নিজস্ব সংস্কৃতি, কালচার ও ঐতিহ্য কে লালন ও সংরক্ষণ করা আবশ্যক।বিদেশি সংস্কৃতি রোধ এবং অব্যাহত রুচিহীন বেশভূষা পরিহারে নতুন প্রজন্ম দৃঢ় অঙ্গিকারবদ্ধ হোক।তাহলে জাতীয় সাংস্কৃতিক মুক্তি এবং এর বিকাশ সাধন হবে। নতুন সাজে সাজুক প্রিয় লাল সবুজের দেশ।অপসংস্কৃতির আগ্রাসন এবং এর শিকড় উৎঘাটনের প্রতিশ্রুতিতে সকলের তীব্র আওয়াজ ছড়িয়ে পড়ুক সর্বক্ষেত্রে। স্বপ্ন ভরা হৃদয় নতুন বৎসরের ছোয়ায় আরো পরিপূর্ণ ও পবিত্র হয়ে ওঠুক।
Total Reply(0)
‎HM Monirul Islam‎ ১৪ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:৫৫ এএম says : 0
সমাজ পরিবর্তন করতে চাইলে আগে নিজেকে পরিবর্তন করা দরকার। হজরত মোহাম্মাদ (স) জাহেলিয়াত এর শিকড় উপড়ে ফেলে নতুন একটি সুন্দর আদর্শ সমাজ গঠন করতে পেরেছিলেন কারন তিনি যেমন বোদ্ধা ছিলেন তেমনি যোদ্ধা ছিলেন।বর্তমান সময়ে আমরা দেখতে পারছি অপসংস্কৃতির আগ্রাসন এবং মাদকের ভয়াল ছোবলে আগামীর সুন্দর সমাজ গড়ার কারিগর যুবসমাজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।অথচ তাদের কে নিয়েই আমরা স্বপ্ন দেখছি আগামীর সুন্দর একটি সমাজ গড়ার!!!!! যতদিন আমরা আমাদের আগামীর প্রজন্ম যুবকদের মাঝে ভালো এবং মন্দের বিচার শক্তি এবং নিজেকে আদর্শিক ভাবে গড়ে ওঠার বোধ শক্তি জাগ্রত করতে না পারবো ততদিন এই অবস্থা থেকে আমরা উত্তরণ হতে পারবো বলে মনে হয় না। আর যদি এই বিচার শক্তি এবং বোধ শক্তি জাগ্রত করতে চাই তাহলে দরকার আদর্শিক লাইব্রেরি। পরিবর্তন হতে চাইলে জানতে হবে, জানতে চাইলে পড়তে হবে, যদি পড়তে চান লাইব্রেরি গড়ে তুলতে হবে....
Total Reply(0)
Ridu An ১৪ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:৫৬ এএম says : 0
জোড়াতালি দেয়া নানান সময়ে স্বার্থান্বেষী মহলের দ্বারা সংস্কার হওয়া ও নানা উপাদান সংযুক্তির বর্ষবরণের ইতিহাস বাংলা সংস্কৃতির মনন ও মানসিকতা বহন করেনা কোনভাবেই। বর্ষবরণের নামে বিজাতীয় অপসংস্কৃতির আগ্রাসন বন্ধ হওয়া জরুরী।
Total Reply(0)
Lutfur Rahman ১৪ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:৫৬ এএম says : 0
ছবির দিকে তাকালে এটাকে শোভাযাত্রা মনে হয় না,মনে হয় হিন্দুদের রথযাত্রা।হিন্দু ধর্মের আক্বীদা বিশ্বাস অনুযায়ী তাদের প্রত্যেকটি দেবতার ভিন্ন ভিন্ন বাহন রয়েছে।যেমনঃ ★লক্ষীর বাহন পেঁচা ★সরস্বতীর বাহন রাজহাঁস ★গণেশের বাহন ইঁদুর ★দুর্গার বাহন সিংহ ★মনসার বাহন সাপ ★কার্ত্তিকের বাহন ময়ূর ★মহাদেবের বাহন ষাড় ★যমরাজের বাহন কুকুর ★ইন্দ্রের বাহন হাতি ★ব্রক্ষ্মার বাহন পাতিহাঁস ★বিশ্বকর্মার বাহন ঢেকি ★শীতলার গাধা ইত্যাদি।
Total Reply(0)
Ashraful Islam ১৪ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:৫৭ এএম says : 0
অসাধারণ একটি বিশ্লেষণী লেখা
Total Reply(0)
Kaisar Rahman ১৪ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:৫৮ এএম says : 0
সকল মুসলিমদের প্রতি আমাদের ঈমানী দাবী দায়িত্ব এই পহেলা বৈশাখের নামে অপসংস্কৃতি থেকে নিজেকে দূরে রাখা উপরকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া!!
Total Reply(0)
হাফেজ রশিদ আহমদ ১৪ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:৫৯ এএম says : 0
পহেলা বৈশাখের অপকর্মের বিরেদ্ধে আল্লাহ তা'আলার কঠুর হুশিয়ারী । পহেলা বৈশাখে মঙ্গল শুভাযাত্রার নামে যে অপসংস্কৃতি আমাদের মাযে বিদ্যমান তা কোন মুসলিম দেশের সংস্কৃতি হতেই পারে না এটি হিন্দুদের পুজা-পালি ছাড়া আর কিছুই না । তার ক্ষতিকর প্রভাব যে কতটা ভয়ংকর, একটি জাতি তার সংস্কৃতি নিজের হাতে ধংশ করলে তার পরিনাম যে কতটা ভয়াবহ, সেটি বোঝাতেই মহান আল্লাহ তা'আলা ভুমিকম্পের মাধ্যমে আমাদের সতর্ক করে দিলেন । মহান আল্লাহ আমাদের অপসংস্কৃতির চর্চা বাদদিয়ে সুস্ট সংস্কৃতির বিকাশের তাওফিক দিন এবং তার গযব থেকে রক্ষা করুন । আমিন
Total Reply(0)
আব্দুল মতিন খান বাহুবলী ১৪ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:৫৯ এএম says : 0
" মাহে শা'বানের পবিত্রতা রক্ষা করুন,পহেলা বৈশাখের নামে অপসংস্কৃতি ও অশ্লীলতা বর্জন করুন "।
Total Reply(0)
খলশী হাফেজিয়া মাদরাসা ১৪ এপ্রিল, ২০১৯, ১:০০ এএম says : 0
ইসলামে পহেলা বৈশাখের নামে অপসংস্কৃতি সমর্থন করে না। অতএব, বৈশাখের ইমান বিধ্বংসী অপসংস্কৃতি থেকে দূরে থাকুন। ইসলামে অপসংস্কৃতির কোন স্থান নেই (মায়েদা৫/৫১; তিরমীযী হা/৪০৩১)।
Total Reply(0)
ডা. ময়নুল ইসলাম ১৪ এপ্রিল, ২০১৯, ১:০১ এএম says : 0
সাংঘর্ষিক। পহেলা বৈশাখের নামে বা নববর্ষ উদযাপনের নামে যুবক-যুবতী, কিশোর-কিশোরীদেরকে অশ্লীলতা ও বেহায়াপনার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। আজ থেকে কয়েক বছর আগেও এদেশের মানুষেরা যা জানত না এখন নববর্ষের নামে তা আমাদের সংস্কৃতির অংশ বানানো হচ্ছে। আসলে সংস্কৃতি কি? সংস্কৃতির সংজ্ঞা খুজলে আমরা দেখতে পাইসংস্কৃতি বলতে বোঝায়, একটা জাতির দীর্ঘদিনের জীবনাচরণের ভেতর দিয়ে যে মানবিক মূল্যবোধ…
Total Reply(0)
VP Saiful Islam ১৪ এপ্রিল, ২০১৯, ১:০১ এএম says : 0
আমার প্রথম পরিচয় আমি মুসলিম এর পরে বাংঙ্গালী। তথাকথিত বাংঙ্গালী সংস্কৃতি সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নাই, তাই মুসলিম হিসেবে আমারও নাই।আর যে নিজেকে মুসলিম হিসেবে দাবী করে তারও থাকার কথা নয় । এটা অন্য একটা ধর্মের পূজা, যা আমি মুসলিম হিসেবে পালন করা গুনাহের কাজ। আসুন পহেলা বৈশাখের নামে অপসংস্কৃতি থেকে নিজে ও নিজের পরিবারকে বিরত রাখি।
Total Reply(0)
সেখ হাসেম ১৪ এপ্রিল, ২০১৯, ১:০২ এএম says : 0
ব্যবসা বাঙালী বাংলাদেশী হিসেবে বাংলা নতুন বোৎসর এ আনন্দ উৎসব করা যায় তবে জে ভাবে চলচে এ ভাবে নয় মুসলিম এরা এইটার মোড বদল করে ঈদের মতন মডেল এ আনন্দ করার সৃস্টেম আবিস্কার করতে চেষ্টা করতে পারে বাংলা ভাষায় আমরা কথা বলে সুখ পাই তাই বাংলা নতুন বোৎসর এ উৎসব আনন্দ করা কঠিন দোশ এর কিচু নয় সভ্যতার সাথে আনন্দ করার সৃস্টেম আবিস্কার পয়োজন অভিকল ঈদের মতন
Total Reply(0)
Jamim Shah ১৪ এপ্রিল, ২০১৯, ১:০২ এএম says : 0
বাঙ্গালী যে পহেলাবৈশাখ পালন করে, এটা মূলত হিন্দুদের রীতি. ইসলামিক জ্ঞান থাকলে তারা এগুলা করতোনা.
Total Reply(0)
Kazi Taher ১৪ এপ্রিল, ২০১৯, ১:০৩ এএম says : 0
পহেলা বৈশাখের নামে অপসংস্কৃতি থেকে আমাদের সমাজের মা বোন ভাইদের কে হেফাজত করুক আমিন।
Total Reply(0)
Sajjadur Rahman Rasel ১৪ এপ্রিল, ২০১৯, ১:০৩ এএম says : 0
মঙ্গল শোভাযাত্র মুসলমানদের জন্য হারাম। পহেলা বৈশাখের নামে অপসংস্কৃতি ও বেহায়াপনাকে #না_বলুন।
Total Reply(0)
Abdullah Shahin ১৪ এপ্রিল, ২০১৯, ১:০৪ এএম says : 0
সংস্কৃতি চাই অপসংস্কৃতি বা সংস্কৃতির নামে বেহায়াপনা চাই না। সংস্কৃতি আমার জীবনের একটা অংশ। বাংলাদেশের রয়েছে একটি বিশাল ভাণ্ডারের সংস্কৃতি। দেশে অবস্থানরত মুসলমানের রয়েছে সুন্দর সাবলীল এক সংস্কৃতি, রয়েছে দেশের হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবার আলাদা নিজ গর্বের সংস্কৃতি। যে দেশের বা ব্যক্তির সংস্কৃতি যত উন্নত সেই ব্যক্তি বা দেশের সম্মান তেমন বেশি উন্নত। বাংলা ভাষা যদি আমাদের করে নিতে পারি তাহলে সন কেন নয়? বাংলা সংস্কৃতি অসম্পূর্ণ থেকে যাবে নববর্ষ ছাড়া। হাল খাতার ইতিহাস হারিয়ে যাবে যদি না আমরা আমাদের সংস্কৃতি সঠিক ভাবে লালন না করি।আমরা আমাদের দেশের ইতিহাস ভুলে যেতে পারিনা। সুন্দর সংস্কৃতিতে যারা অশ্লীলতা যোগ করছে বা করতে চাচ্ছে তাদের প্রতিহত করার জন্য অবশ্যই আমাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। আফসোস লাগে যখন দেখি পহেলা বৈশাখের নামে ফালতু কর্মকাণ্ড করা হয়। যখন দেখি নববর্ষের মূল চেতনা অশ্লীলতায় মার খাচ্ছে তখন অনেক খারাপ লাগে। যখন দেখি অনুষ্ঠানের নামে বিদেশী সংস্কৃতির জয়জয়কার হচ্ছে তখন কষ্ট লাগে মনে। ইলিশ খাওয়া, পান্তাভাত খাওয়া, পিয়াজ খাওয়া, শুকনো মরিচ খাওয়া নিতান্তই হাস্যকর। যারা বৈশাখ কি সেটা জানেনা শুধু তারাই এসব নিয়ে ব্যস্ত থাকে। আমরা আমাদের দেশীয় সন কে নিজেদের মধ্যে আরো বেশি করে প্রসার করতে হবে। আমাদের দেশের সংস্কৃতির অন্যতম একটি " পহেলা বৈশাখ " তাই আমার ফেসবুক বন্ধু ও দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন