এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুনশী
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
আত্মিক ইবাদতের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ উপসর্গ হচ্ছে ‘ইখলাস’। মহান রাব্বুল আলামিন প্রিয় বান্দাদেরকে এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন।
আল-কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে, “যারা একান্তভাবে দীনকে আল্লাহর জন্য নিবেদন করে।” (সূরা আ’রাফ : আয়াত-২৯) এই আয়াতের মাঝে পরিপূর্ণ ইখলাসের স্বরূপ তুলে ধরা হয়েছে। আমরা জানি ধর্মীয় জীবনের শ্রেষ্ঠতম বিশেষত্ব হচ্ছে এই যে, তা মানুষের অন্তরকে উপলক্ষ করে বিস্তৃতি লাভ করে। এর যাবতীয় আচার-আচরণ ও কর্মকা- শুধুমাত্র এক টুকরা গোশতের সাথে সম্পৃক্ত। আকায়েদ সংক্রান্ত হোক অথবা ইবাদত, আখলাক সংক্রান্ত হোক অথবা ব্যবহারিক জীবন সংক্রান্ত হোক মূলত মানবিক কর্মকা-ের প্রত্যেকটি অংশে এর দৃষ্টি শুধুমাত্র একটি আয়নার ওপর পতিত হয়। এই বিশেষত্বকে রাসূলুল্লাহ (সা.) একটি বিখ্যাত হাদিসে এভাবে ব্যক্ত করেছেন, “জেনে রেখ, মানবদেহে এমন একটি গোশতের টুকরা আছে যদি তা ভালো থাকে তাহলে সমগ্র দেহই ভালো বলে বিবেচিত হয়, আর সেই টুকরাটি যদি বিনষ্ট হয়ে যায় তাহলে সমগ্র দেহই নষ্ট হয়ে যায়। সাবধান সে টুকরাটি হচ্ছে, ‘কলব’ বা ‘অন্তর’। (সহিহ বুখারি : কিতাবুল ঈমান। সহিহ মুসলিম : হালাল গ্রহণ ও সন্দেহযুক্ত বস্তু বর্জন অধ্যায়) মানুষের ভালো এবং মন্দ উভয় শ্রেণীর কর্মকা-ের মূল বুনিয়াদ হচ্ছে অন্তরের অনুপ্রেরণা ও উদ্দীপনা। কেননা, ধর্মীয় জীবনের সকল ইমারত এই ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত আছে। তবে ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে এই, যে কোনো কাজই করা হোক না কেন এর উৎসাহ ও উদ্দীপনা যেন দুনিয়ার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সাথে সম্পৃত্ত না থাকে এবং এর দ্বারা লোক দেখানো মনোভাব, আন্তরিকতা, উপকার লাভের প্রত্যাশা, প্রভাব-প্রতিপত্তির বিকাশ, বিনিময় লাভের উদগ্র কামনা না হয়; বরং এর দ্বারা একমাত্র আল্লাহপাকের নির্দেশাবলী প্রতিপালন করা এবং আল্লাহপাকের সন্তুষ্টি ও খোশনুদী অর্জন করার লক্ষ্য সুদৃঢ় হয়। এই একান্ত দৃঢ়চিত্ততার নামই হচ্ছে ইখলাস। মহান আল্লাহপাক রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে লক্ষ্য করে ইরশাদ করেছেন, “আপনি একান্তভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে ইবাদত-বন্দেগী করুন। কেননা একান্ত আত্মনিবেদিত ধর্ম শুধুমাত্র আল্লাহর জন্যই নিবেদিত।” (সূরা যুমার, রুকু-১) এই আয়াতের দ্বারা প্রতিপাদ্য মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে এই যে, আল্লাহপাকের ইবাদত-বন্দেগীর মাঝে একমাত্র আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো বস্তুকে যেন শরিক করা না হয়। চাই সে বস্তুটি পাথর হোক, মাটির তৈরি মূর্তি হোক, আসমান-জমিনের কোনো মাখলুক হোক অথবা অন্তর লোকের কম্পিত কোনো ভ্রান্ত উদ্দেশ্য হোক। মোটকথা ইবাদত-বন্দেগীকে খালেসভাবে আল্লাহপাকের প্রতি নিবেদন করতে হবে। এ কারণে মানুষের নফসানি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসম্ভূত কর্মকা-কে মূর্তি পূজা হিসেবে কোরআনুল কারীমে সাব্যস্ত করা হয়েছে। ইরশাদ হচ্ছে, “আপনি কি দেখেননি, যে তার নফসানি খাহেশকে উপাস্য হিসেবে গ্রহণ করেছে।” (সূরা ফুরকান : রুক-৪)
তাই ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হচ্ছে এই যে, মানুষের যাবতীয় কাজকর্ম যেন জাহেরি এবং বাতেনি সকল প্রকার মূর্তি পূজার ছোঁয়াচ হতে মুক্ত ও পবিত্র থাকে। মহান আল্লাহপাক কোরআনুল কারীমের ভাষায় রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে এই ঘোষণা প্রদান করার জন্য হুকুম করেছেন। ইরশাদ হচ্ছে, “বলে দিন যে, আমাকে হুকুম দেয়া হয়েছে যেন আমি ইবাদত-বন্দেগীকে খালেসভাবে আল্লাহপাকের জন্য নিবেদন করি এবং আমাকে এ নির্দেশও প্রদান করা হয়েছে যেন আমি প্রথম অনুগত হিসেবে বরিত হই। বলে দিন, যদি আমি আল্লাহপাকের নাফরমানি করি তাহলে অবশ্যই এক বৃহৎ দিনের শাস্তি আমাকে পরিবেষ্টন করবে এবং এ কথাও বলে দিন যে, আমি সুনির্দিষ্টভাবে একমাত্র আল্লাহর জন্য ইবাদত-বন্দেগী করি। সুতরাং তোমরাও হে কাফেরগণ! নিজেদের খাহেশ মোতাবেক যার ইচ্ছা ইবাদত কর।” (সূরা যুমার : রুকু-২) কোরআনুল কারীমের সাতটি স্থানে এই আয়াত এসেছে, “আনুগত্য প্রকাশ ও ইবাদত-বন্দেগীকে আল্লাহরই জন্য নিবেদন কর।” এই আয়াতের দ্বারা বোঝা যায় যে, প্রত্যেক ইবাদত এবং আমলের প্রথম রোকন হচ্ছে ইখলাস। বা একান্তভাবে আল্লাহর জন্য নিবেদিত হওয়া। এর মাঝে কোনো প্রকার জাহেরি ও বাতেনি মূর্তি পূজার প্রভাব এবং খাহেশাতে নফসানির সংগ্রহ থাকতে পারবে না। বস্তুত তা যেন সর্বশ্রেষ্ঠ ও মহীয়ান আল্লাহপাকের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই নিবেদিত হয়। এই আত্মনিবেদনের মাঝে প্রতিষ্ঠিত হবে অন্তরের পরিচ্ছন্নতা ও পবিত্রতার রূপরেখা।
আম্বিয়ায়ে কেরাম নিজেদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য এবং দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ পরিচালনার সময় এই ঘোষণা প্রদান করেছেন যে, আমরা যা কিছু করছি এর মাঝে জাগতিক প্রত্যাশা পূরণ ও বিনিময় লাভের উদগ্র বাসনার স্থান নেই। আল-কোরআনে সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করা হয়েছে, “আমি এ কাজের বিনিময়ে তোমাদের নিকট কোনো মজদুরী লাভের প্রত্যাশী নই; বরং আমার মজদুরী সেই মহান সত্তার নিকট গচ্ছিত আছে যিনি সারা মাখলুকাতের প্রতিপালক”। (সূরা শুআরা : রুকু-৬)
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন হযরত নূহ (আ.)-এর জবান হতেও একই ঘোষণা জারি করেছিলেন। আল-কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে, “হে আমার কাওম! আমি এই কাজের বিনিময়ে তোমাদের নিকট কোনোই পারিশ্রমিক চাই না। আমার সার্বিক পারিশ্রমিক আল্লাহপাকের নিকট গচ্ছিত।” (সূরা হুদ : রুকু-৩)
এমনিভাবে রাসূলুল্লাহ (সা.)-ও অবিশ্বাসী কাফেরদেরকে সম্বোধন করে বলেছেন, “আমি তোমাদের নিকট কোনোই পারিশ্রমিক চাই না। আমার পারিশ্রমিক একমাত্র আল্লাহর কাছেই গচ্ছিত আছে। আল্লাহপাক সবকিছুর প্রত্যক্ষদর্শী।” (সূরা সাবা : রুকু-৬) এই আয়াতের মর্ম হচ্ছে এই যে, আল্লাহপাক সকল কাজ এবং সকল উদ্দেশ্য সম্পর্কে পরিপূর্ণ অবহিত। তিনি জানেন আমার প্রতিটি চেষ্টা ও তদবির সর্বোতভাবে জাগতিক উদ্দেশ্য মুক্ত এবং পরিপূর্ণরূপে আল্লাহর ইচ্ছার ওপর উৎসর্গীকৃত। অপর এক আয়াতে আল্লাহপাক রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জবানে ঘোষণা জারি করেছেন, “আমি এ কাজের বিনিময়ে তোমাদের নিকট কোনো রকম প্রতিফল চাই না। কিন্তু আমি আত্মীয় ও রক্ত সম্পর্কিত লোকদের ভালোবাসার সম্পর্ককে অক্ষুণœ রাখি।” (সূরা শুরা : রুকু-৩) অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ (সা.) এই নির্মল ও পবিত্র এবং আবিলতামুক্ত দিকনির্দেশনার দ্বারা পৃথিবীবাসীর মাঝে মঙ্গলকর যে হেদায়েত প্রদান করেছেন এর দ্বারা প্রভাবিত প্রতিটি ব্যক্তিসত্তার উচিত নিজেদের আমলকে খালেসভাবে আল্লাহর জন্য নিবেদন করা। এহেন আত্মিক ও ব্যবহারিক পবিত্রতার মাধ্যমে জাগতিক আত্মীয়তা ও রক্ত সম্পর্কের অধিকারসমূহ সুষ্ঠুভাবে আদায় করা সম্ভব হয় এবং এর মাধ্যমেই মহব্বত ও ভালোবাসা পরস্পরের মাঝে দৃঢ় হতে দৃঢ়তর পর্যায়ে উপনীত হয়।
একই সমার্থবোধক আয়াত আল-কোরআনের সূরা ফুরকানেও আছে। ইরশাদ হচ্ছে, “বলে দিন, আমি তোমাদের পথ প্রদর্শনের বিনিময়ে তোমাদের নিকট হতে কোনোই বিনিময় চাই না। সুতরাং যে চায় সে যেন আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের পথ অবলম্বন করে।” (সূরা ফুরকান : রুকু-৫) এই আয়াতের মূল নির্যাস হচ্ছে এই যে, আমার শ্রান্তি, ক্লান্তি ও পরিশ্রমের মজদুরি কেবলমাত্র আল্লাহপাকই প্রদান করবেন। এর বিনিময়ে তোমাদের দিক হতে কোনো কিছুই আদায় করতে হবে না। এবং তোমাদের উচিত সত্যকে গ্রহণ করে নিজেদের জীবনকে সার্থক করে গড়ে তোলা।
বাস্তব দুনিয়ার যাবতীয় কর্মকা-ের কামিয়াবী ও সফলতা মূলত ইখলাসের ওপর নির্ভরশীল। কোনো লোক যত বড় মঙ্গল কর্মই করুক না কেন কিন্তু এর মাঝে তার ব্যক্তিগত আকাক্সক্ষার বাস্তবায়ন, লোক দেখানো মনোবৃত্তি এবং প্রভাব ও প্রতিপত্তির বিকাশ প্রকটিত হয়ে উঠলে এসব কাজের মূল্যমান মানুষের দৃষ্টিতে অবনমিত হয়ে পড়ে। অনুরূপভাবে রূহানী জগতে আল্লাহপাকের নিকটও এর দ্বারা কোনো প্রকার শুভফল লাভ করার সম্ভাবনা থাকে না। কেননা, যে কাজ আল্লাহর উদ্দেশ্যে পরিসাধিত হয় না সেসব কাজের সাথে আল্লাহপাকের রহমত ও বরকত সমভাবে যুক্ত থাকে না। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে এই যে, প্রতিটি কাজ হবে উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের দিক থেকে এতই মুক্ত ও পবিত্র যেখানে ব্যক্তিগত বা সামাজিক পর্যায়ের প্রভাব-প্রতিপত্তি ও বিনিময় লাভের সংস্পর্শ থাকবে না। এমনি করেই ব্যক্তি পর্যায়ে মানুষ পূর্ণ আন্তরিকতার সাথে যাবতীয় দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হয় এবং নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের পথ লাভে ধন্য হয়।
আমরা যেসব কাজ নিষ্পন্ন করি সেগুলোর দুটো দিক রয়েছে। একটি হচ্ছে বস্তু বা উপাদানভিত্তিক, যা আমাদের প্রকাশ্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের দ্বারা এবং চলাফেরা ও পদক্ষেপ দ্বারা পরিস্ফুট হবে। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে রূহানী বা আত্মিক আশা-আকাক্সক্ষার দ্বারা বিস্তৃত ও পরিসমাপ্ত। প্রতিটি কাজের উদ্দেশ্যে অভ্যন্তরীণ দিক থেকে বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে এর স্থায়িত্ব ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। দীন ও দুনিয়ার যাবতীয় কাজকর্ম অন্তরের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলনের দ্বারা নির্ণীত হয়। মানব জীবনের যাবতীয় কর্মকা- এই ইতিহাসের প্রত্যক্ষ সাক্ষী হয়ে রয়েছে। এ জন্য ইখলাস ছাড়া ইসলামের কোনো ইবাদতই কবুল হয় না। একইভাবে ইখলাসবিহীন নৈতিক ও ব্যবহারিক কাজ ইবাদত হিসেবে পরিগণিত হয় না। এ জন্য প্রতিটি কাজ আরম্ভ করার পূর্বে আমাদের উচিত নিজেদের নিয়ত ও উদ্দেশ্যকে খালেস করে নেয়া এবং যাবতীয় আবিলতা হতে বিমুক্ত রাখা।
তৌরাত এবং কোরআনুল কারীম উভয় গ্রন্থেই হযরত আদম (আ.)-এর দুই ছেলে হাবিল এবং কাবিলের ঘটনা বিবৃত আছে। উভয় ছেলেই আল্লাহপাকের সন্নিধানে নিজেদের উৎপাদিত ফল ও ফসলের কোরবানি পেশ করেছিল, কিন্তু আল্লাহপাক তাদের একজনের কোরবানি কবুল করলেন এবং একই সঙ্গে নিজের চিরস্থায়ী বিধানকে এভাবে প্রতিপন্ন করেছেন। আল-কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে, “আল্লাহ মুত্তাকিদের কোরবানি কবুল করে থাকেন।” (সূরা মায়েদাহ : রুকু-৫)
প্রকৃতপক্ষে মুত্তাকি বলতে তাদেরকেই বুঝতে হবে যারা অন্তরের একাগ্রতাসহ আল্লাহপাকের সন্তুষ্টি অর্জনের নিমিত্ত কর্ম সম্পাদন করে। তাদের কাজ ও আমল কবুল কর হয় এবং দুনিয়া ও আখেরাতে তাদের কামিয়াবী অর্জিত হয়। এ শ্রেণীর লোকেরাই আল্লাহর বন্ধু হিসেবে বরিত হয় এবং পৃথিবীর বুকে তাদের যাবতীয় কর্মকা- প্রশংসিত হয় এবং এরই ফাঁকে তাদের যে প্রচার ও প্রসার ঘটে তা চিরস্থায়ী জীবনের পাদপীঠ রচনা করে। দেশ ও জাতির তারাই হয় শুভাকাক্সক্ষী এবং বংশ পরম্পরায় মানব জাতি তাদের কর্মানুষ্ঠানের মাঝে মুক্তি ও নিষ্কৃৃতির পথ খুঁজে পায়।
হযরত মূসা (আ.)-এর আমলে ফেরাউনের অনুসারীরা একজন পয়গাম্বর এবং জাদুকরের মাঝে পার্থক্য নির্ণয় করতে পারেনি। উভয়ের দিক থেকেই তারা অতি প্রাকৃত ও অস্বাভাবিক কর্মকা-ের প্রতিফলন প্রত্যক্ষ করেছে। অথচ এই দুই শ্রেণীর কাজকর্মের মাঝে রয়েছে বিরাট এক ব্যবধান। এক শ্রেণীর কাজের উদ্দেশ্য জাদুকরী বিদ্যা প্রকাশ করা এবং তামাশা দেখানো। আর অপর শ্রেণীর উদ্দেশ্য ছিল দেশ ও জাতির আখলাকী ও রূহানী জিন্দেগীকে পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন করা। এ জন্য আল- কোরআনে এই ফয়সালা প্রদান করা হয়েছে, “জাদুকর যা কিছুই উপস্থাপন করুক না কেন এতে তার সফলতা অর্জনের কোনোই সম্ভাবনা নেই।” (সূরা ত্বাহা : রুকু-৩)
এতে করে দুনিয়াবাসী দেখতে পেয়েছে যে, প্রকৃত মু’জিযা ও কারামতের সামনে জাদুকরগণ কতটা হেয় ও অপাঙ্ক্তেয় বিবেচিত হয়েছে এবং একই সাথে হযরত মূসা (আ.)-এর সত্যসম্ভূত মুজিযাসমূহ দেশ ও জাতির সামনে এনে দিয়েছে এক নতুন শরিয়ত ও জীবন প্রবাহ। এমনি করেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এক নতুন সালতানাত যা ভূপৃষ্ঠে বহুকাল পর্যন্ত কায়েম ছিল।
মোটকথা প্রতিটি কাজের আসল রূপরেখা অভ্যন্তরীণভাবে অন্তরের মণিকোঠায় প্রতিফলিত হয়ে ওঠে। এ জন্য প্রতিটি কাজের পূর্বে নিয়ত ও উদ্দেশ্যকে যাচাই করে নেয়া দরকার। এই বিস্তৃত আলোচনা অনুধাবন করার পর এ কথা বুঝতে মোটেই কষ্টসাধ্য হবে না যে, ইসলাম সকল শ্রেণীর ইবাদতের জন্য ইখলাস ও নিয়তের পরিশুদ্ধির ওপর কেন এতখানি গুরুত্বারোপ করেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন