রাউজানে গত দুই দিনের প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে রাস্তাঘাট ঘরবাড়ী ডুবে গছে। আজ (১৩ জুলাই) শনিবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম রাঙ্গামাটি সড়কের রাউজান অংশে গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। এছাড়া জনগুরুত্বপূর্ণ অদুদিয়া সড়ক, মাওলানা দুস্ত মোহাম্মদ সড়ক, হাফেজ বজলুর রহমান সড়ক, শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বেবি সড়ক, বেরুলিয়া সড়ক, লেলেংগাড়া সড়ক, হলদিয়া ভিলেজ সড়ক সহ গুরুত্বপূর্ণ শতাধিক সড়কে যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। শুক্রবার বিকাল থেকে সারারাতের বৃষ্টিতে হালদা নদী সহ সর্তা ও ডাবুয়া খালের পাহাড়ী ঢল বৃদ্ধি পাওয়ায় রাউজানের বিভিন্ন স্থানে বন্যা দেখা দিয়েছে। জানা গেছে ডাবুয়া খালের কান্দিপাড়া এলাকা ও পৌর সভার ৪নং ওয়ার্ড এলাকায় বেড়িবাধঁ ভেঙ্গে গিয়ে পানি ঢুকে পড়ে বিভিন্ন এলাকায়। এতে করে সড়ক ও বাড়ী ঘরে মুহুর্তের মধ্যে পানি ডুকে পড়ে।
এদিকে চট্টগ্রাম রাঙ্গামাটি সড়কের বেরুলিয়া, আবছার কোম্পানির ঘাটা, দায়রা ঘাটা, জানালী হাট, কুন্ডেশ্বরী ও জলিল নগর বাসস্টেশন এলাকায় কোন স্থানে কোমর সমান, কোন স্থানে হাটু সমান পানির তীব্রতায় গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। অটো রিকশা, বাস, হাইস, ট্রাক চলাচল বন্ধের সুযোগে চা›েঁদর গাড়ি জীপ ও ভ্যান যুগে যাত্রী সাধারন বারতি ভাড়া দিয়ে চলাচল করছেন। এদিকে শনিবার দুপুর ১২টা নাগাদ সর্তা খালের আমিরহাট ব্রীজের মধ্যেখানে একটি পিলারের সাথে উপর থেকে ভেসে আসা বড় একটি তুলা গাছ আটকে গেলে খালের পানির তীব্রতা উপরদিকে বেড়েগিয়ে গর্জনীয়া হলদিয়া ভিলেজ সড়কে খেজুর তল এলাকায় রাস্তা ভেঙ্গে পানি গড়িয়ে পড়ে।
এদিকে সরেজমিন দেখাযায়, সর্তা ব্রিজের তুলা গাছটি সরানোর জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) এসিল্যান্ড এহেছান মুরাদ, প্রকল্প কর্মকর্তা নিয়াজ মোরশেদ, ইঞ্জিনিয়ার কামাল উদ্দিন, হলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম সহ স্থানীয়রা প্রাণপন চেষ্টা চালিয়েও তুলা গাছটি সরাতে পারেননি। পরে এসিল্যান্ড রাউজান ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মকর্তাকে ফোন করে এটি সড়াতে তাদের সহযোগিতা কামনা করেন। এদিকে রাউজানের হলদিয়া, ডাবুয়া, চিকদাইর, নোয়াজিশপুর, গহিরা, বিনাজুরী, পূর্বগুজরা, পশ্চিমগুজরা, কদলপুর, রাউজান, নোয়াপাড়া, বাগোয়ান, উরকিরচর, পাহাড়তলী ইউনিয়ন সহ রাউজান পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন বাড়ী, গ্রাম, বাজার, দোকান, সরকারী অফিস, মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল কলেজ, মন্দির সহ বিভিন্ন স্থাপনা বন্যার কবলে পড়েছে। প্রবল বন্যার কারনে এক গ্রামের সাথে অন্য গ্রামের যোগাযোগ একেবারে বন্ধ হয়েগেছে। রাউজানের আমন বীজতলা, মাছের প্রজেক্ট, মুরগির খামার, গরুর খামার হুমকির মুখে পড়েছে।
এদিকে রাউজানের সাংসদ এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি ও রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এহেছানুল হায়দার বাবুল সার্বক্ষনিক বন্যার খোজঁ খবর নিচ্ছেন। পাশাপাশি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্থদের যাতে দ্রুত সরিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসা হয়। এবং তাদের সব ধরনের সহযোগিতার নির্দেশ প্রদান করেন। এদিকে হলদিয়া, ডাবুয়া, চিকদাইর, নোয়াজিশপুর, গহিরা, বিনাজুরী ও পৌরসভার ৪,৫,৬,৭,৮ নম্বর ওয়ার্ডগুলো এখনো পানির নিচে। পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের বেশ কয়েকটি বাড়ী ও ঘরে পানি ডুকে পড়েছে। একই অবস্থা ৫নং ওয়ার্ডের ফিতর মোহাম্মদ চৌধুরী বাড়ীতেও। বৃষ্টি বন্ধ না হলে বন্যা আরো ভয়াবহ রুপ নিবে বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন উপজেলার প্রকল্প কর্মকর্তা নিয়াজ মোরশেদ।
এদিকে শুক্রবার প্রবল ¯্রােতে চিকদাইরের কয়েকটি সড়কে পিচ ঢালাই উঠেগিয়ে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছিল। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নোয়াজিশপুর অদুদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে পানি ডুকে পড়েছে। সর্তাখালের নিম্মাংশে বেড়িবাধের কয়েক জায়গায় ভেঙ্গে যাওয়ায় নোয়াজিশপুর ও গহিরা ইউনিয়ন এলাকায় পানির তীব্রতা বেড়েছে। তবে প্রবল বন্যায় বিকাল ৩টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমান কত তা জানাতে পারেননি প্রকল্প কর্মকর্তা নিয়াজ মোর্শেদ। তিনি জানান বন্যা ও বৃষ্টি কমে গেলে এলাকার ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট নিয়ে বলা যাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান আসলে কত।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন