গত কয়েক বছর ধরেই ঈদুল আযহার নামাজের পূর্বে কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে দাঁড়িয়ে কথা বলতেন এরশাদ। সবার কাছে দোয়া চাইতেন। গতবারও দোয়া চেয়েছেন, ‘বলেছেন এটাই হয়তো আমার শেষ, আসা আর হয়তো কোনদিন এভাবে আপনাদের মাঝে আসতে পারবো না’। অবশেষে তার কথাই ঠিক হলো। ওভাবে আর এবার ঈদের নামাজে মাঠে আসতে পারছেন না তিনি। ঈদের পূর্বে একই মাঠে আসছেন, কিন্তু একেবারেই অন্যভাবে। নিরব, নিস্তব্ধ হয়ে। কারও সাথে কথাও বলতে পারবেন না, দোয়া চাওয়া কিংবা কোলাকুলিও করতে পারবেন না। শেষ বিদায় নিতে আসছেন তিনি’। -কথাগুলো বললেন এরশাদ ভক্ত রমিছ উদ্দিন নামের এক ষাটোর্ধ ব্যক্তি। গতকাল বিকেলে কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠের পাশে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলছিলেন তিনি।
কাল মঙ্গলবার হেলিকপ্টারে করে সাবেক এই রাষ্ট্রপতির নিথর দেহ রংপুরে নেয়া হবে। বাদ জোহর রংপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে তার চতুর্থ জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে রংপুরের সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে। প্রিয় নেতা এরশাদকে দেখতে এবং শেষ বিদায় জানাতে অধীর আগ্রহে আছেন রংপুরের এরশাদ ভক্তরা। দলীয় নেতা-কমী ও সমর্থক ছাড়াও সাধারণ মানুষ শেষবারের মত প্রিয় নেতাকে এক নজর দেখে শেষ বিদায় আর শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত। ইতিমধ্যে রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে জানাজার নামাজ এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতার জন্য সব ধরণের প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছে। প্যান্ডেল নির্মাণ, মাইক সংযোগ স্থাপন, মাঠ পরিষ্কারসহ সবকিছুই প্রায় সম্পন্ন করা হয়েছে। এখন শুধু প্রিয় মানুষটির জন্য প্রতীক্ষা। এর আগে গত রোববার সকালে তার মৃত্যুর পর দুপুর থেকেই রংপুরসহ পার্শ্ববর্তী জেলার প্রতিটি গ্রামে-গঞ্জে বিরামহীনভাবে চলছে তার মৃত্যুর সংবাদ প্রচার। শোক প্রকাশ করে চলছে জানাজায় অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে চলছে মাইকিং।
পাড়া-মহল্লার মসজিদ মাদরাসাগুলোতে এরশাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে চলছে দোয়া মাহফিল ও কোরআন খতম। জাতীয় পার্টির দলীয় কাযালয়সহ নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডে মাইকে কোরআন তেলায়াত প্রচারের পাশাপাশি শোক প্রকাশ করে ব্যানার-ফেস্টুন সাটানো হয়েছে রাস্তায় রাস্তায়।
দাফন নিয়ে বিতর্ক থাকলেও তৃণমূলের নেতা-কর্মীসহ রংপুরবাসী চাইছেন রংপুরেই হোক এরশাদের শেষ ঠিকানা। রংপুরের ‘ছাওয়াল’ রংপুরেই থাকবে এটাই এরশাদ প্রিয় রংপুরবাসীর চাওয়া। ## হালিম আনছারী, রংপুর। ১৫-০৭-১৯
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন