শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহিলা

ভোকেশনাল ট্রেনিং অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন নারী উদ্যোক্তা

প্রকাশের সময় : ৭ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

গত ২৪ মে হোটেল সোনারগাঁওয়ে বাংলাদেশের প্রথম প্রতিষ্ঠিত রোটারী ক্লাব অব ঢাকার উদ্যোগে এবং মেডরেক্স ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় বাংলাদেশের তিনজন নারী উদ্যোক্তাকে ২০১৫ সালে পশুপালন, কৃষি ও শিক্ষায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। তারা হলেন- পশুপালনে নুরুন্নাহার বেগম (পাবনা), কৃষিতে নিভারানী বিশ্বাস (যশোর) ও শিক্ষায় আঞ্জুমান আরা বেগম (ঢাকা)। 

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত শ্রীলংকার হাইকমিশনার ইয়োসোজা গুনাসেকেরা, বিশেষ অতিথি ভারতের ডা. অনন্তকুমার (ইউরোল-জিস্ট) যিনি বিশ্বের ৩০০০ লোকের কিডনী ট্রান্সপ্লান্ট করে যাদের সুস্থ করে তুলেছে। এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মেডরেক্স লাইফ সাইন্স লি: এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ হাসানসহ আরো ৫০ জন রোটারিয়ান ও যারা নিজেদের পেশাগত কাজের বাইরে রোটারী ক্লাবের মাধ্যমে সমাজসেবামূলক কাজ করে সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
আজকের পুরস্কারপ্রাপ্ত নারীদের মধ্যে পশুপালনে নুরুন্নাহার বেগম পাবনা জেলা থেকে মনোনীত হয়েছেন। যার শুরুটা ২০০০ সালে ১টি মাত্র গরু দিয়ে বর্তমানে এর সংখ্যা ১৩৬টি যা নুরুন্নাহার ডেইরি ফার্ম নামে পরিচিত। তার আগে তিনি ২০০১ সালে কৃষি কাজের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করেন। পাশাপাশি কৃষিভিত্তিক অনেক কাজ করে বাড়তি আয়ের পথ বের করেন। তার লিচু বাগানের লিচু সারাদেশে বিক্রি হয়। উৎপাদিত অর্থ দিয়ে তিনি চার ছেলেকে মানুষ করেছেন এবং সাখাওয়াত মেমোরিয়াল হাসপাতালের মাধ্যমে সমাজসেবা করেন শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধীদের। তিনি প্রথম বাংলাদেশে বায়োগ্যাস প্লান্টের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে তা ঘর-গৃহস্থালী ও ডেইরি ফার্মের বৈদ্যুতিক চাহিদা পূরণ করেন। তার এই অবদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর স্বর্ণপদকসহ বেশ কিছু জাতীয় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তাকে সম্মাননা প্রদান করেছে।
কৃষিতে নিভারানী বিশ্বাস যশোর জেলা থেকে মনোনীত হয়েছেন। তিনি ২০০২ সালে ঘরের আঙ্গিনায় নানা ধরনের সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হয়ে বর্তমানে ৬০০০ খেজুর গাছ লাগিয়ে এর ফল ও রস বিক্রি করেছেন প্রতি বছর। এর মাধ্যমে নিভারানী নিজে সচ্ছলতার মুখ দেখছেন পাশাপাশি অন্যদের অনুপ্রেরণার পথ হয়ে সবাইকে সহযোগিতা করেছেন। মানুষ করেছেন নিজের ছেলেমেয়েদের। যার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর স্বর্ণপদক।
শিক্ষায় ঢাকা থেকে আঞ্জুমানআরা বেগম মনোনীত হয়েছেন। এসএসসি পাস করার পর বিয়ে তারপর পড়াশুনা পাশাপাশি বিভিন্ন দৈনিকে কন্ট্রিবিউটসহ কুকিং করে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা থেকে ২০১০ সাল থেকে কাঁচা দেশীয় ফল থেকে তৈরি জুস (কাঁচা আমের বোরহানী) বাজারের বিক্রি করে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টার পাশাপাশি তিনি গত সাড়ে তিন বছর যাবৎ ১টি রংধনু একাডেমি নামে সংস্কৃতিক কর্মকা- শেখানোর প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এই প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা বর্তমানে ২০০০-এর বেশি প্রাইজ পেয়েছে। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক পুরস্কার ৩০টি, জাতীয় পর্যায়ে ২০০-র উপরে ও বাকিগুলো বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে পেয়েছে। আঞ্জুমান আরা নিজেও রচনা লেখায় ৬ বার প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন। তাছাড়া ছবি আঁকা আবৃত্তি ও কুকিংয়ে বহুবার পুরস্কার পেয়েছেন।
রোটারী ক্লাব ও মেডরেক্স লাইফ ফাউন্ডেশনগুলো যদি প্রতি বছর এই ধরনের আয়ের অব্যাহত রাখে তাহলে নারীরাও এদেশে অনেক উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে।
য় মরিয়ম হোসেন

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন