এক
মহান আল্লাহ তাআলা হজের আয়াত অবর্তীর্ণ করে বলেছেন, যারা হজের নিয়ত করবে তারা যেন পাপাচার ও অশ্লীলতায় লিপ্ত না হয় এবং ঝগড়া না করে। আমার জানা মতে অন্য কোনো ইবাদতের ব্যাপারে আয়াত অবতীর্ণ করে আল্লাহ তাআলা এভাবে ঝগড়া না করার উপদেশ দেননি। এখন এটাই আফসোসের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেই পবিত্র হজকে আল্লাহ তাআলা ঝগড়ামুক্ত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন সেই হজেই সবচেয়ে বেশি ঝগড়া চলে! তাও দুনিয়াবী কোনো বিষয় নিয়ে নয়, নামায নিয়ে। হজের মৌসুমে মিনা, মুজদালেফায়, আরাফার তাবুতে, কিংবা হোটেলে হোটেলে নামায নিয়ে অনকাঙ্খিত তর্ক-বিতর্ক চলে। কখনো তা মারামারি এবং হাতাহাতির পর্যায়ে পর্যন্ত চলে যায়, (নাউযুবিল্লাহ)। অথচ এসবের কোনো দরকার ছিল না, কোনো মাসআলায় যদি কারও কাছে বিশেষ কোনো মাযহাবের ইমামের মত গ্রহণযোগ্য মনে হয় তাহলে তিনি ঐ মত অনুযায়ী চুপচাপ আমল করলেই পারেন। কিন্তু তা না করে নিজে যা বুঝেছেন সেটাকে অন্যের ওপর চাপিয়ে দেয়ার অসুস্থ মহড়া এবং প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হন। ইমাম আবু হানীফা রহ. এবং হানাফী মাযহাব নিয়ে অনেকের মন্তব্যের ঢঙ দেখে মনে হয় জগতে হানাফীদের মতো খারাপ মানুষ আর নেই এবং ইমাম আবু হানীফা রহ. ইহজগতের সবচেয়ে মূর্খ ইনসান!! জানি না, এসব উস্কানিমূলক কথা ও কাজে আমাদের ওই ভাইদের কী লাভ হয়! যাই হোক, এ প্রবন্ধে হজের সফরে হাদীসের আলোকে হানাফী মাযহাবের নামায কীভাবে আদায় করা হবে, সে ব্যাপারে কিঞ্চিত আলোকপাত করা হবে ইনশা আল্লাহ।
হজের সফরে নামাযের বিধান
হজের সফরে নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে কসর নামায পড়ার ব্যাপারে কারও কোনো আপত্তি নেই। যেমন কেউ নিজ এলাকা থেকে হজের উদ্দেশ্য বের হওয়ার পর বিমানে, জিদ্দা এয়ারপোর্টে, মক্কা-মদিনা যাওয়ার পথে এবং ১৫ দিনের কমে মদিনায় অবস্থান করলে সর্বসম্মতিক্রমে কসর নামায পড়বে। এসব জায়গায় নামায কসর করা না করা নিয়ে কোনো তর্ক-বিতর্ক হয় না। তবে তিন জায়গায় তিনটি মাসআলা নিয়ে তাবুতে তাবুতে কিংবা হোটেলে অনেক বেশি ঝগড়া হয়। তা হলোÑ
১. মিনা আরাফায় হাজী সাহেব কসর নামায পড়বেন নাকি পুরো নামায?
২. আরাফাহর মাঠে কেউ যদি তাবুতে একা অথবা নিজেরা জামাত করে নামায পড়ে তাহলে তারা কি যোহর-আসর একসাথে পড়বে নাকি যোহরকে যোহরের ওয়াক্তে এবং আসরকে আসরের ওয়াক্তে পড়বে?
৩. মক্কা শরীফে যদি কেউ ১৫ দিন বা তার ঊর্ধ্বে থাকার নিয়ত করে মুকীম হন, এরপর তিনি হোটেলে নিজের মাল সামানা রেখে মদিনায় যান তাহলে মদিনা থেকে মক্কায় ফিরে এসে তিনি কোন্ নামায পড়বেন? কসর নাকি ইতমাম?
এই তিনটি মাসআলা নিয়ে হাজী সাহেবদের মাঝে অনেক বেশি তর্ক-বিতর্ক হয়। নি¤েœ হাদীস ও ফিকহের আলোকে তা তুলে ধরা হলো :
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন