রাজধানী ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণকাজ চলছে। বিশাল এ কর্মের অগ্রগতি ৬১ শতাংশের বেশি। চলতি বছরের অক্টোবর মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টার্মিনালের আংশিক উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। কর্তৃপক্ষের প্রত্যাশা, নির্দিষ্ট সময়েই উদ্বোধন হবে নতুন এ টার্মিনাল। মূল কাজের চুক্তির বাইরে অতিরিক্ত বোর্ডিং ব্রিজ যুক্ত হবে। এতে করে অতিরিক্ত ২০০ কোটি টাকা ব্যয় বাড়বে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ টার্মিনালের নির্মাণকাজ সম্পন্ন করার নির্ধারিত সময় ছিল ২০২৪ সাল। কিন্তু, অক্টোবরে একাংশের উদ্বোধনের জন্য কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। পাশাপাশি নতুন সংযুক্ত হওয়া কাজের জন্য অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ, যন্ত্রপাতির ব্যবহার বাড়ানো হয়েছে। এজন্য অতিরিক্ত ২০০ কোটি টাকা ব্যয় করতে হবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে (বেবিচক)।
জানতে চাইলে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ারভাইস মার্শাল এম মুফিদুর রহমান বলেন, যে অতিরিক্ত ব্যয়ের কথা বলা হচ্ছে, এটা আসলে থার্ড টার্মিনালের প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজের জন্য কোনো অতিরিক্ত টাকা লাগবে না। এটা প্রথম কথা। এখানে অতিরিক্ত টাকা যেটা লাগছে, সেটা আমরা থার্ড টার্মিনালে কিছু অতিরিক্ত কাজ সংযুক্ত করেছি বলে। যেটাকে এডিশনাল স্কোপ বলে। এর ভেতরে আগে বোর্ডিং ব্রিজ হওয়ার কথা ছিল ১২টি, এখন বোর্ডিং গেট হবে ২৬টি সংখ্যায় ৫৪টি। এটার জন্য যে অবকাঠামো হবে, যে যন্ত্রপাতি লাগবে এগুলোর জন্য যে খরচটা হবে, সে খরচটাও চেষ্টা করেছিলাম আগের টাকার মধ্যেই সম্পন্ন করতে। কিন্তু বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী এই টাকা অতিরিক্ত লাগবে। কারণ এটা আগের টাকায় করা যাবে না। এটার জন্য জাইকার অনুমোদন লাগবে। জাইকা যদি অনুমোদন দেয়, তাহলে ওই কাজটা হবে। এটার জন্য ব্যয় বাড়বে। আর না হলে, চুক্তিতে যে টাকা আছে সে টাকার মধ্যেই কাজ সম্পন্ন হবে।
তৃতীয় টার্মিনালের আংশিক উদ্বোধন অক্টোবরেই হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, অক্টোবরে উদ্বোধন করা সম্ভব হবে। সে লক্ষ্যেই কাজ এগোচ্ছে।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বলেন, অক্টোবরে মোট প্রকল্পের ৯০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হবে। এরপর সফট ওপেনিং (আংশিক উদ্বোধন) হবে। প্রধানমন্ত্রী সেটি উদ্বোধন করবেন। সফট ওপেনিং বলা হচ্ছে এ কারণে, টার্মিনালের কাজ আসলে অ্যাকমোডেশনের মতো না যে, কাজ শেষ করলাম এরপর উঠে গেলাম। এখানে অবকাঠামোর কাজ শেষ হবে, তারপর টার্মিনাল চালু হবে। এবং পর্যায়ক্রমে আস্তে আস্তে এর ব্যবহার শুরু হবে।
২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) বৈঠকে প্রথমে ১৩ হাজার ৬১০ দশমিক ৪৭ কোটি টাকার প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে একটি পৃথক আমদানি-রফতানি কার্গো হাউস স্থাপন ও নতুন ভিভিআইপি টার্মিনাল প্রকল্প কাজের কিছু অংশ বর্ধিত করায় মোট প্রকল্প ব্যয় বেড়ে ২১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা করা হয়। ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন। নির্মাণকাজের ব্যয়ে সরকারি কোষাগার থেকে যাবে ৫ হাজার কোটি টাকা। আর, বাদ-বাকি অর্থ দিচ্ছে জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা জাইকা। টার্মিনালের নির্মাণকাজ করছে জাপানের মিতসুবিশি ও ফুজিতা এবং কোরিয়ার স্যামসাং।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন