শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুবাইফেরত বাংলাদেশ বিমানের কার্গো ফ্লাইট থেকে ১২ কেজে স্বর্ণ উদ্ধার করেছে শুল্ক গোয়েন্দারা। উদ্ধারকৃত স্বর্ণের বাজার মূল্য ৮ কোটি টাকা। দেশে চোরাই পথে যে স্বর্ণ আসে তার একটি বড় চালান ভারতে চলে যায়। কারণ ওই দেশের মানুষের স্বর্ণের প্রতি আগ্রহ ও চাহিদা বেশি। এই স্বর্ণের বিনিময়ে অস্ত্র ও মাদকের লেনদেন হয়। এ সব কারণে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারায়। শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর সূত্রে এ সব তথ্য জানা গেছে।
শুল্ক গোয়েন্দার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম বলেন, স্বর্ণের বারগুলো পাচারের উদ্দেশ্যে আনা হয়েছিল। এ পর্যন্ত পাচারকারী কাউকে শনাক্ত করা যায়নি কিংবা কেউ আটক হননি।
তিনি জানান, দুবাই থেকে আসা বাংলাদেশ বিমানের কার্গো ফ্লাইট বিজি-৪১৪৮-এর কার্গো হোল থেকে ১২ কেজি স্বর্ণ উদ্ধার করে জব্দ করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, প্রায় প্রতিদিনই অবৈধভাবে বিদেশ থেকে আসা স্বর্ণ উদ্ধার হচ্ছে- ঢাকা-চট্টগ্রাম ও সিলেট বিমানবন্দরে। কাস্টমস ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলেছেন, যত স্বর্ণ ধরা পড়ছে, তার কয়েক গুণ বেশি স্বর্ণ পাচার হয়ে যাচ্ছে। তবে সময়ের সাথে পাচার কমবেশি হলেও তা পুরোপুরি বন্ধ করা যাচ্ছে না। এসব চালান সাধারণত দুবাই, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া থেকে আসে।
কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আব্দুর রউফ গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, অবতরণের পর উড়োজাহাজের ভেতরে রামেজিং বা বিশেষ তল্লাশির জন্য প্রবেশ করেন শুল্ক গোয়েন্দারা। এসময় কার্গো হোল্ডের মাঝখানে তিনটি প্যাকেট খুলে ১০৪টি স্বর্ণবার পাওয়া যায়। দেশে চোরাই পথে যে স্বর্ণ আসে তার একটি বড় চালান পাশের দেশে চলে যায়। কারণ ওই দেশের মানুষের স্বর্ণের প্রতি আগ্রহ ও চাহিদা বেশি। এই স্বর্ণের বিনিময়ে অস্ত্র ও মাদকের লেনদেন হয়। এ কারণে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারায়।
তিনি আরো বলেন, রোববার রাত সোয়া ৯টায় দুবাই থেকে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট নম্বর বিজি-৪১৪৮ থেকে এসব স্বর্ণের বার জব্দ করা হয়। তবে এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, দেশে প্রতি বছর স্বর্ণের চাহিদা ১৬ থেকে ২৬ টন। এ ঘটনায় একটি বিভাগীয় মামলা এবং একটি ফৌজদারী মামলা করা হয়েছে। উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরে (২০২১-২০২২) কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এখন পর্যন্ত ৬৬ দশমিক ৯৬ কেজি স্বর্ণ আটক করেছে যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৪৭ কোটি টাকা। গত ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ১৭৪ দশমিক ৪৯ কেজি এবং ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ১৮০ দশমিক ৩৫ কেজি স্বর্ণ কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর আটক করে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন