মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ বলেছেন, রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিতে অস্বীকার করলে মিয়ানমারকে তাদের নিজেদের ভ‚খন্ডে আলাদা রাষ্ট্র গঠন করতে দিতে হবে। মালয়েশিয়া কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চায় না। তবে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সঙ্ঘটিত মিয়ানমারের গণহত্যায় মালয়েশিয়া চুপ থাকতে পারে না। গত শুক্রবার তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে মুসলিম বিশে^র বিশিষ্ট নেতা মাহাথির মোহাম্মদ রোহিঙ্গা সঙ্কট, ফিলিস্তিন সমস্যা এবং এখন চীনের জিনজিয়াং প্রদেশ নামে পরিচিত পূর্ব তুর্কিস্তানে উইঘুর মুসলিমদের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন।
তিনি বলেন, মিয়ানমার অনেকগুলো রাজ্যের সমন্বয়ে গঠিত। ব্রিটিশরা চেয়েছিল মিয়ানমারকে একসঙ্গে শাসন করতে। সেজন্যই অনেকগুলো রাজ্যকে এক করে বার্মা রাষ্ট্র গঠন করা হয়। তিনি বলেন, এখন হয় রেহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেয়া উচিত, নয় তাদের ভ‚খন্ডে তাদেরকে আলাদা রাষ্ট্র গঠন করতে দিতে হবে।
রোহিঙ্গা সমস্যা বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) সিদ্ধান্ত বিষয়ে মাহাথির বলেন, আইসিজের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সবাইকে সম্মত হবে। ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পরিকল্পিত ও কাঠামোগত সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সাত লাখ ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ। জাতিগত নিধনের ভয়াবহতায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বড় অংশটি বাংলাদেশে পালিয়ে এলেও জাতিসংঘের হিসাবে চার লাখেরও বেশি মানুষ এখনও মিয়ানমারে রয়ে গেছে। জাতিসংঘ দেশটিতে রোহিঙ্গাবিরোধী সামরিক অভিযানকে ‘জাতিগত নিধন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
চীনে উইঘুর মুসলিমদের ওপর নিপীড়ন নিয়ে মাহাথির বলেন, মালয়েশিয়া সবসময়ই আলোচনা ও আইনের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চেয়ে এসেছে। আমাদের চীনকে বলা উচিত যে, তারা আপনাদের নাগরিক। ধর্ম আলাদা হওয়ার কারণে তাদের সাথে আচরণ আলাদা করবেন না।
মাহাথির বলেন, সেখানে সহিংসতার আশ্রয় নিলে পরিস্থিতি চীনের হাতে চলে যাবে। সে অজুহাতে তারা দমন চালাবে। যখন আপনি সহিংসতার আশ্রয় নিবেন, তখন সবকিছু অনেক কঠিন হয়ে যাবে। কারণ সহিংসতার মাধ্যমে কোনো কিছু অর্জনের নজির অনেক কম।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন