ইতিহাসের সর্বাধিক সংখ্যক যানবাহন পারাপারের পরেও দেশের প্রধান ফেরি সেক্টরগুলোতে দেড় সহশ্রাধীক যানবাহন আটকা পড়ে আছে। হাজার যাত্রীর দূর্ভোগের সীমা নেই। ঢাকা থেকে পাটুরয়া ও শিমুলিয়া ঘাট এসে যাত্রীবাহী যানবাহনগুলোকে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। পদ্মার প্রবল শ্রোতে মাওয়া সেক্টরে ‘মিডিয়াম টাইপ’ ফেরিগুরো লৌহজং চ্যানেলে রাতেরবেলা অতিক্রম করতে পাড়ছে না। পদ্মার পাটুরিয়া ও মাওয়া সেক্টরেই উজানের বালু মশ্রিত ঘোলা পানির প্রবল শ্রোতে ফেরি চলাচল যেমনি বাধাগ্রস্থ হচ্ছে, তেমনি তা ঝুকিপূর্ণ।
বিআইডব্লিউটিসি’র ৫০টি ফেরির মধ্যে ৪৯টি যুদ্ধকালীন তৎপড়তায় দিনরাত যানবাহন পারপার করছে আরিচা, মাওয়া, শরিয়তপুর, ভোলা এবং লাহারহাট সেক্টরে। এরপরেও যানবাহনের কমতি নেই। নিম্নচাপজনিত দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারনে বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত মাওয়া, চাঁদপুরÑশরিয়দপুর এবং ভোলা ও লক্ষীপুর সেক্টরে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় যে যানযটের সৃষ্টি হয়, তার রেশ এখনো অব্যাহত রয়েছে।
শণিবার সকাল ৬টার পূর্ববর্তি ২৪ঘন্টায় দেশের ইতিহাসে সর্বাধীক সংখ্যক ১৭হাজার ১২৭টি যানবাহন পারপার করেছে বিআইডব্লিউটিসি’র ফেরি বহর। কিন্তু এরপরেও অপেক্ষমান ছিল দেড় সহশ্রাধীক যানবাহন। এসময়ে আরিচা সেক্টরের পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটে ২০টি ফেরির মাধ্যমে দশ সহশ্রাধীক যানবাহন পারাপারের পরেও অপেক্ষমান ছিল আরে ৫শতাধীক। অপরদিকে মাওয়া সেক্টরের শিমুলিয়াÑকাঠালবাড়ি এবং মঙ্গলমাঝীর ঘাট রুটেও ১৮টির মধ্যে ১৭টি ফেরি আরো ১০হাজার ৮৩টি যানবাহন পারাপার করলেও শিমুলিয়া ঘাটে ৫শতাধীক পারাপারের অপেক্ষায় ছিল। মাওয়া সেক্টরে ‘ডাম্ব ফেরি-রনীগঞ্জ’ বন্ধ রয়েছে যান্ত্রিক ত্র“টির কারনে।
চাঁদপুরÑশরিয়তপুর সেক্টরে ৫টি কে-টাইপ ফেরি গত ২৪ঘন্টায় ৫৫৯টি যানবাহান পারাপারের পরে অপেক্ষায় ছিল আরো সোয়া ২শ যানবাহন। অপরদিকে ট্টগ্রামের সাথে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের সংক্ষিপ্ত সড়ক পথের ভোলাÑল²ীপুর সেক্টরে ২৬৭টি যানবাহন পারাপার হলেও অপেক্ষায় ছিল ২৪২টি। ২৮কিলোমিটার দীর্ঘ দেশের সর্বাধীক দুরত্বের এ ফেরি সেক্টরে মাত্র ৩টি কে-টাইপ ফেরি চলাচল করায় পারাপারকৃত যানবাহনের প্রায় সমসংখ্যকই প্রতিনিয়ত অপেক্ষায় থাকছে। উপরন্তু এ ফেরি সেক্টরের ল²ীপুর প্রান্তের ‘রহমতখালী চ্যানেল’র মুখে নব্যতা সংকটে ফেরি চলাচল জোয়ারের ওপর নির্ভরশীল।
ঐ একই মহাসড়কের ভোলা ও বরিশালের মধ্যবর্তি লাহারহাট-ভেদুরিয়া সেক্টরে শনিবার সকালের পূর্ববর্তি ২৪ঘন্টায় প্রায় ৪শ যানবাহন পারপার হলেও অপেক্ষমান ছিল আরো প্রায় সোয়াশ । এসেক্টরে ৪টি ‘ইউটিলিটি টাইপ ১’ ফেরি যানবাহন পারাপার করছে।
এদিকে ঈদ উল আজহাকে সামনে রেখে দেশের সব ফেরি সেক্টরেই সোমবার সকাল পর্যন্ত যানবাহনের চাপ থাকবে বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিসি’র চেয়ারম্যনÑঅতিরিক্ত সচিব প্রনয় কান্তি বিশ্বাস। তবে যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় সংস্থা যুদ্ধকালীন তৎপড়তায় কাজ করছে বলে জানান তিনি। তার মতে, সংস্থার বহরের ৫০টি ফেরিই সচল রাখার লক্ষে কাজ করে যাচ্ছে কারিগড়ি বিভাগ। তবে যাত্রীবাহী সেক্টরে নৌযান সংকটের কথা স্বীকার করে তিনি জানান, নির্মানাধীন দুটি নতুন নৌযান গত জুনে সরবারহের কথা থাকলেও নির্মাতা ব্যার্থ হয়েছে। উপরন্তু ‘পিএস মাহসুদ’ জাহাজটি বিকল হয়ে পড়ায় সংকট কিছুটা বেড়েছে। ‘পিএস অস্ট্রিচ’ জাহাজটি যাত্রী পরিবহন থেকে সরিয়ে আগের একজন মন্ত্রী বিনা দরপত্রে বেসরকারী খাতে ইজারা দেয়ার কথাও স্বীকার করেন তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন