মহাসড়কে বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লক্কর ঝক্কর তিন চাকার যানবাহনের সংখ্যা। ঈদের ছুটি শেষে অনেকে নিজ নিজ কর্মস্থলে ফিরছেন। এজন্য ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বেড়েছে লোকসমাগম। বাড়তি যাত্রী পরিবহনে মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সিএনজি ও ব্যাটারি চালিত রিকশা ও অটোরিকশা।
গতকাল দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দি থেকে পদুয়ার বাজার বিশ^রোড পর্যন্ত বেপরোয়াভাবে চলাচল করতে দেখা গেছে এসব যানবাহন। অথচ মহাসড়কে ওভারটেকিং ও পাল্লা দেওয়ায় দুর্ঘটনার শঙ্কা বাড়ছে। একই চিত্র কুমিল্লা-সিলেট ও কুমিল্লা-নোয়াখালী সড়কেও। জেলার প্রতিটি সড়কেই অবাধে চলাচল করছে এসব যানবাহন। আইনের তোয়াক্কা করছেন না চালকরা। কোথাও কোথাও প্রশাসনকে ম্যানেজও করছেন তারা। জানা গেছে, সরকার ২০১৭ সালে দেশের ২২টি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করে। সরকারি নিষেধাজ্ঞার মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম, কুমিল্লা-সিলেট ও কুমিল্লা-নোয়াখালী সড়কও রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা জারির পর কিছুদিন মহাসড়কে এসব যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। পরে আবারও চলাচল শুরু হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কথা হয় অটোরিকশার চালক খলিল বাদশার সঙ্গে। তিনি দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আগে পুলিশ বেশি ঝামেলা করত। তখন কয়েকদিন পর পর মহাসড়কে গাড়ি নিয়ে উঠতাম। এখন তেমন সমস্যা হয় না। কোনো কিছু হলে সমিতির নেতারা তো আছেনই। ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ মনিরুল ইসলাম দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে মহাসড়কে দায়িত্ব পালন করছেন।
কুমিল্লা বারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, কুমিল্লা দাউদকান্দি, শহীদনগর, হাসানপুর, বারপাড়া, গৌরীপুর, রায়পুর, দৌলতপুর, ইলিয়টগঞ্জ, গোমতা, কুটুুম্বপুর, নুরীতলা, মাধাইয়া, কোরের পাড়, চান্দিনায় সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকা। কুমিল্লা-সিলেট ও কুমিল্লা-নোয়াখালী সড়কে বিভিন্ন সময় অনেক দুর্ঘটনা ঘটে।
এদিকে বৃষ্টিতে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। ঈদের ছুটির পর গত তিন দিনে শুধুমাত্র কুমিল্লায় নয়টি দুর্ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে মাত্র কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে তিনটি দুর্ঘটনায় অর্ধশত যাত্রী আহত হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক রিকশা-ভ্যান ও তিন চাকার চালক জানান, গাড়ি না চালালে সংসার চালাবো কিভাবে। তাই ইচ্ছা না থাকলেও মহাসড়কে চালাতে হয়। মহাসড়কে চলাচল নিষেধ থাকলেও পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলতে হয়।
এ বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, মহাসড়কে তিন চাকার ও অবৈধ যানবাহন চলাচলের কোনো সুযোগ নেই। নিয়মিত চেকপোস্ট বসিয়ে চেক করা হচ্ছে। তিন চাকার অথবা অবৈধ যানবাহন দেখা গেলেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আমাদের যে পরিমাণের লোকজন থাকার কথা সে পরিমাণে লোকজন নেই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন