শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

ফিরছে চিরচেনা রূপে

ওভারলোডিংয়ে ঝুঁঁকিতে চার লেন বৃষ্টিতে সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দক

মুন্সী কামাল আতাতুর্ক মিসেল | প্রকাশের সময় : ২৮ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০০ এএম

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে মেরামতের কাজ চলছে। ছবিটি গতকালের -ইনকিলাব


সেই চিরচেনা রূপে ফিরে যাচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। কিছু দূর পরপর খানাখন্দ। হেলেদুলে চলছে গাড়ি। মালবাহী বাহনের অসামঞ্জস্য, অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল কারণে মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় বর্তমানে উঁচু-নিচু হওয়ায় যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলছে।

সড়ক ও জনপদ সূত্র জানায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভারবহন ক্ষমতা ২০২৩ পর্যন্ত ধরা আছে। তবে ওভারলোডিংয়ের কারণে এখনই ঝুঁঁকিতে পড়েছে চার লেন। দুই বছরের মাথায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এর বিভিন্ন অংশ। এছাড়া বৃষ্টিতেও মহাসড়কটির অনেক জায়গা নষ্ট হয়ে গেছে। এজন্য চার লেন রক্ষায় নতুন প্রকল্প নেয়া হয়েছে। প্রকল্প সমাপ্তি প্রতিবেদনে (পিসিআর) এ সুপারিশ করা হয়।

প্রকল্প সমাপ্ত হওয়ার পর সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতরে পিসিআর জমা দেয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ভারতের কনসালটিং ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস ও বাংলাদেশের ডেভ কনসালট্যান্ট লিমিটেড। এতে বলা হয়, মহাসড়কটির নকশা প্রণয়নে সম্মিলিত আদর্শ এক্সেল (ভারবহন ক্ষমতা) বা ইএসএ ধরা হয়েছে ৯ কোটি ৮০ লাখ। যা ২০২৩ সালে অতিক্রম করার কথা রয়েছে। তবে ২০১৬ সালে চার লেনটিতে ট্রাফিক সমীক্ষা ও এক্সেল লোড সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়। এতে দেখা যায়, ২০১৬ সালেই আংশিকভাবে সম্মিলিত আদর্শ এক্সেল অতিক্রম করেছে। এতে পুরানো দুই লেনে দিনে ৫২ হাজার যান চলাচল করছে ঝুঁঁকি নিয়ে।

মহাসড়কের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টিতেও মহাসড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কাঁচপুর থেকে ফেনী পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় খানা খন্দকের সৃষ্টি হয়েছে। কুমিল্লা অংশের পদুয়ারবাজার, বেলতলী, ঝাগুড়ঝুলি, দুর্গাপুর, আলেখারচর, আমতলী, নিশ্চিন্তপুর, কালাকচুয়া, নিমসার, কোরপাই, চান্দিনা, মাধাইয়া, ইলিয়টগঞ্জ এলাকায় প্রতিনিয়ত মহাসড়কের উপরের অংশের পাথর তুলে পুনরায় বিটুমিনের প্রলেপ দেওয়া হচ্ছে।

মহাসড়ক থেকে বৃষ্টির পানি সরে যেতে পদুয়ারবাজার, কোঁবাড়ি, আলেখারচর, আমতলী, নিশ্চিন্তপুর, ময়নামতি সেনানিবাস, নাজিরাবাজার এলাকায় ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু মহাসড়কের পাশে যত্রতত্র হোটেল, রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।

বাস চালক নাইমুল ইসলাম দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, চার লেনের কাজ শেষ হওয়ায় ভেবেছিলাম আরোও কয়েক বছরেও মহাসড়কে ভাঙন ধরবে না। কিন্তু গত দু’বছরে মহাসড়ক আগের অবস্থায় ফিরে গেছে।

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, মহাসড়ক সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। কিন্তু মেরামতের স্বল্পসময়ের ব্যবধানে ব্যয়বহুল সড়কটির বারবার সংস্কারের বিষয়ে তিনি মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন।

কুমিল্লা সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আহাদ উল্লাহ জানান, মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ঠিকাদাররা প্রতিদিনই সংস্কার কাজ করছেন। সংশ্লিষ্ট এলাকার লোকজন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকদের ড্রেনগুলো পরিষ্কার রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। সওজের সেই জনবল নেই যে, রাস্তার পাশের ড্রেন পরিষ্কার করে পানি নিষ্কাশন স্বাভাবিক রাখবে।

সদ্য সমাপ্ত চার লেন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আফতাব হোসেন খান বলেন, সড়ক দিয়ে সংখ্যায় বেশি এবং ওভারলোডেড যানবাহন চলাচল করায় সঙ্গত কারণেই প্রতিদিন মেগা এ প্রকল্পের ক্ষতি হচ্ছে। মেরামতও চলছে। এসব বিবেচনায় নিয়ে এ সড়কে পাঁচ বছর ধরে সংস্কারের জন্য প্রায় ৭৫০ কোটি টাকার প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান যখন এটি নির্মাণ করছিল তখন প্যানেল অব এক্সপার্টদের পক্ষ থেকেও অত্যধিক ভারবাহী যান চলাচলের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মহাসড়কটি নিয়মিত পরিচর্যা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। এছাড়াও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চৌদ্দটি পয়েন্টে সারা বছরই লেগে থাকে দুর্ভোগ।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রেজা কনস্ট্রাকশনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক শাখাওয়াত হোসেন বলেন, অতিরিক্ত যানবাহন এবং অতিরিক্ত মালবাহী গাড়ির চাপে সড়কের এমন পরিণতি হয়। এ সড়কের হার্ড সোল্ডারের পাশে মাটির অংশে পানি জমে থাকে।
এ ব্যাপারে কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আহাদ উল্লাহ জানান, মহাসড়কে মাত্রাতিরিক্ত ভারি যানবাহন চলাচল করায় নবনির্মিত লেনের বিভিন্ন অংশ দেবে যাচ্ছে। আর ওই দেবে যাওয়া অংশে পানি জমে ছোট-বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সেগুলো প্রতিনিয়ত সংস্কার করে যাচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন