দীর্ঘীদিন পর বিএনপির ৪১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা (র্যালি) করেছে বিএনপি। সোমবার বিকেল সোয়া তিনটায় নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে এই শোভাযাত্রা নাইটেঙ্গেল মোড় হয়ে শান্তিনগর মোড়ে এসে শেষ হয়। বিএনপির কেন্দ্রীয় ও সিনিয়র নেতারা ছাড়াও দলীয় ও জাতীয় পতাকা, রঙ-বেরঙের ব্যানার-ফেস্টুন, জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের প্রতিকৃতিসহ নানা বাদ্যযন্ত্র নিয়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের হাজার হাজার নেতা-কর্মী এই শোভাযাত্রায় অংশ নেয়। শোভাযাত্রায় মশারী টানিয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নেতা-কর্মীরা ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধ তথা এডিস মশা প্রতিরোধে জনসচেতনতার বিষয়টি তুলে ধরে। দীর্ঘদিন পর ঢাকায় বিএনপির শোভাযাত্রা দেখতে রাস্তার দুই ধারে দাঁড়ানো পথচারীদের করতালি দিতে দেখা গেছে।
র্যালিতে ঢাকা মহানগর বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, মুক্তিযোদ্ধা দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, জাসাস, কৃষক দল, মৎস্যজীবী দল, তাঁতী দল, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন (ড্যাব), ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন, এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে ফকিরাপুল থেকে নাইটেঙ্গেল রেস্তোরাঁ পর্যন্ত গোটা এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। নেতা-কর্মীরা দলীয় পতাকা ও লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে এই শোভাযাত্রায় অংশ নেয়। জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বড় বড় প্রতিকৃতি হাতে ‘শুভ শুভ শুভদিন, বিএনপির জন্মদিন’, ‘স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া, লও লও লও সালাম’, ‘এক জিয়া লোকান্তরে, লক্ষ জিয়া ঘরে ঘরে’, ‘মুক্তি মুক্তি মুক্তি চাই, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই’, স্লোগান দেয় কর্মী-সমর্থকরা। শোভাযাত্রার সম্মুখভাগ যখন নাইটেঙ্গল মোড়ে তখন মিছিলের শেষ ভাগ ছিলো ফকিরাপুল বাজার পর্যন্ত। র্যালি শুরুর আগে পুরো নয়া পল্টন সড়ক ব্যাপক মানুষের উপস্থিতিতে জনসমুদ্রে পরিণত হয়। বিশেষ করে ছাত্রদলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা বিপুল কর্মী অনুসারী নিয়ে শোডাউন দেয়। সংগঠনের কেন্দ্রীয় ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলকে সামনে রেখে তাদের এই শোডাউন। বিএনপির হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ এবং কাউন্সিলরদের আস্থা অর্জনের জন্যই ছাত্রদলের পদপ্রত্যাশী নেতারা বিপুল সংখ্যক কর্মী অনুসারী নিয়ে শোডাউন দিয়েছেন। র্যালিতে অংশ নেয়া বেশ কয়েকজন সম্ভাব্য প্রার্থী এ ধরনের মন্তব্য করেন।
ছাত্রদলের সভাপতি পদপ্রত্যাশী সাজিদ হাসান বাবু ও হাফিজুর রহমান বলেন, তারা পৃথকভাবে তিন শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন। শোডাউনে পিছিয়ে ছিলেন না সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মো: আমিনুর রহমান, শাহনেওয়াজ, মো: তানজিল হাসানও। তারা পৃথকভাবে বিপুল নেতাকর্মী নিয়ে র্যালির অগ্রভাগে ছিলেন। একইসময়ে সভাপতি প্রার্থী মো: এরশাদ খান, আশরাফুল আলম ফকির, ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ইকবাল হোসেন শ্যামল সহ অন্তত বিশ জন পদপ্রত্যাশী নেতা বিপুল সংখ্যক কর্মী ও অনুসারী নিয়ে শোডাউন দেন। সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শাহনেওয়াজ বলেন, বিএনপির রাজনীতি আমার পরিবারের সাথে ওৎপ্রোতভাবে জড়িত। আজকে দেশনেত্রী গণতন্ত্রের মাতা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি করা ছাড়া বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। আমি আশা করি ছাত্রদলের আসন্ন কাউন্সিলে যোগ্য নেতা নির্বাচিত হবেন। বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের শক্তিশালী সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হওয়ায় কাউন্সিলে আশাবাদীও তিনি। আমিনুর রহমান আমিন ও তানজিল হাসান বলেন, কাউন্সিলকে ঘিরে ছাত্রদল এখন অনেক শক্তিশালী। আশা করি সুষ্ঠু কাউন্সিলের মাধ্যমে সম্মানিত কাউন্সিলরবৃন্দ যোগ্য নেতা নির্বাচন করতে পারবেন। যে নেতৃত্ব দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনকে জোরদারের পাশাপাশি বাংলাদেশের হৃত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সক্ষম হবে।
উল্লেখ্য যে, ছাত্রদলের ৬ষ্ঠ জাতীয় কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের পুনরায় তফসিল মোতাবেক- ভোট গ্রহণ করা হবে ১৪ সেপ্টেম্বর সকাল ১০ টা থেকে বেলা ২ টা পর্যন্ত।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন