ফেনীর মহিপালে পৌরসভার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত অস্থায়ী আন্ত:জেলা বাস টার্মিনালে খানাখন্দ, পর্যাপ্ত ড্রেনেজ নিষ্কাসন ব্যবস্থা না থাকার কারণে জলাবদ্ধতায় ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যেন দেখার কেউ নেই।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, মহিপালে আন্ত:জেলা বাসের জন্য সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গায় ৩৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে একটি অস্থায়ী টার্মিনাল রয়েছে। গত কয়েক বছর থেকে ফেনী পৌরসভা এই টার্মিনালের দায়িত্ব নিয়েছে। সেখানে প্রতিদিন মহিপাল মালিক শ্রমিকের আন্ডারে থাকা কিছু নির্দিষ্ট গাড়ি রাখা হয়। যেমন ফেনী নোয়াখালী গামী সুগন্ধা কিং ও দ্রুতযান বাস ৯৩ টি,ফেনী-নোয়াখালীগামী যমুনা ক্লাসিক বাস ৪০ টি, ফেনী-কুমিল্লাগামী যমুনা বাস ৬০ টি, ফেনী-খাগড়াছড়ির বাস ৫০ টি,শান্তি পরিবহন বাস ৩০টি, ফেনী-লক্ষ্মীপুর বাস ৩৩ টি,ফেনী-ঢাকার যাত্রীসেবা বাস ৩০টি,ফেনী-চৌদ্দগ্রাম ট্রান্সপোর্ট প্রা: লি: বাস ৩০টি সহ প্রায় ৪০০ এর উপরে গাড়ি এই টার্মিনালে অল্প সংখ্যক জায়গার মধ্যে গাদাগাদি করে দিনে রাতে রাখা হয়। কিন্তু জায়গা সংকুলান না হওয়ায় কিছু গাড়ি বাধ্য হয়ে ফ্লাইওভারের উত্তর-পশ্চিম পাশে সড়কের উপর একপাশ দখল করে অবস্থান নেয়।
এর ফলে সড়কে যানজট লেগে যায়। কিন্তু এ ব্যাপারে জেলা ট্রাফিক পুলিশ রয়েছে নিরব। তাঁরা এসব ব্যপারে কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না। এদিকে টার্মিনালে নেই কোন শৃঙ্খলা ও পরিবেশ। টার্মিনাল বর্ষামৌসুমে বৃষ্টির পানিতে ডুবে থাকে। সেখানে অনেক খানাখন্দের সৃষ্টি হওয়ায় গর্তগুলোতে পানি জমে থাকতে দেখা যায়। টার্মিনালে পৌরসভার নির্মিত দুই আডাই ফুট চওড়া ড্রেনে ময়লা আবর্জনা আটকে থাকায় পানি সরতে পারেনা। ফলে পুরো টার্মিনালে হাটু পরিমাণ পানি জমে যায়। পানি অনেকদিন না সরার কারণে গাড়িগুলো প্রতিদিন কাদাপানি মাডিয়ে অবস্থান করতে হয়। যার ফলে যাত্রী সাধারণকে গাড়িতে উঠতে হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। পুরো টার্মিনাল ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। টার্মিনালে অবস্থানরত কয়েকজন ড্রাইভার ও হেলপারের সাথে কথা বললে তাঁরা জানান, পৌর কর্তপক্ষ গাড়ি রাখার জন্য টার্মিনাল সুবিধা করলেও এখানে নেই কোন পরিবেশ ও শৃঙ্খলা। সেখানে গাড়ির মেরামত করার জন্য কয়েকটি গ্যারেজের রয়েছে। কিন্তু পর্যাপ্ত বিদ্যুতের সরবরাহ নেই। টার্মিনালে পাবলিক টয়লেটের অবস্থা খুবই নাজুক। অনেকদিন মেরামত না করায় পাবলিক টয়লেটের জলছাদ ভেঙে পড়ছে এবং সম্প্রতি কয়েকজন যাত্রী আহত হয়েছেন ।
এদিকে টয়লেটের সেফটি টাংকি পুরে মলমূত্রের পানি পুরো টার্মিনাল চেয়ে যায়। পুরো টার্মিনাল যেন ময়লা আবর্জনার ডিপোতে পরিনত হয়েছে। পৌর কর্তৃপক্ষ টার্মিনালের সৌন্দয্য রক্ষায় নেয়না কোন উদ্যোগ। জানা যায়, টার্মিনালে অবস্থানরত প্রত্যেকটা গাড়ি থেকে পৌরসভা চাঁদা নিচ্ছেন দৈনিক ৫০ টাকা করে মোট ২০ হাজার টাকা। মাসে প্রায় ৬ লক্ষ টাকার উপরে এই টার্মিনাল থেকে চাঁদা আদায় হয়। অস্থায়ী টার্মিনালের পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে গাড়ির যেমন ক্ষতি হচ্ছে তেমনী সেখানে যাত্রীসাধারণ, গাড়ির ড্রাইভার,হেলপার ও শ্রমিকেরা ময়লা আবর্জনা ও নোংরা পানির দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এসব সমস্যা সমাধানে পৌর কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা। এ বিষয়ে আন্ত:জেলা বাস মালিক সমিতির সেক্রেটারীকে ফোন করলে তিনি কিছু বলতে পারবে না বলে লাইন কেটে দেন। ফেনী পৌরসভার প্যাণেল মেয়র আশ্রাফুল আলম গীটার বলেন, মহিপালে টার্মিনালের বিষয়ে আমরা একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি। কিছু দিনের মধ্যে টেন্ডার হলে কাজ শুরু হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন