বহু আন্দোলন সংগ্রামের ফসল হিসেবে জেলা শহরের উপকণ্ঠে নির্মিত বরগুনা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নির্মাণ কাজ শেষ হবার দুই বছরেও চালু করতে পারেননি কর্তৃপক্ষ।
চার একর জমিতে গড়ে উঠা এই টার্মিনালটির চার পাশে সুরক্ষা দেয়াল ঘেড়া ফুলের বাগান মনমুগ্ধকর পরিবেশ দর্শনারথীদের আকৃষ্ট করছে। টার্মিনালের ভেতরে কার ওয়াসিং উন্নতমানের টয়লেট, ড্রাইভারদের বিশ্রামাগার, পরিবহন কর্মী এবং যাত্রীদের খাবার জন্য দৃশ্যমান হোটেল, মুসুল্লীদের নামাজের স্থান নিয়ে গড়ে উঠেছে মনমুগ্ধকর এ টার্মিনালটি। কাজ সমাপ্তির পর এলজিইডির ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানে কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝে নেয় বরগুনা পৌরসভা।
বাংলাদেশ সরকার ও এশিয়া ডেভলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) চুক্তিমূল্য ১৪ কটি ৩৪ লাখ ১৯ হাজার ৩৪৩ টাকা খরচে এই টার্মিনালটি তৈরি করেছেন। তিনতলা বিশিষ্ট ফাউন্ডেশনে নির্মিত এই কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালটি খুব দ্রুত উম্মুক্ত করা হবে বলে জানায় বরগুনা পৌর কর্তৃপক্ষ।
বরগুনা সদর উপজেলার গৌরিচন্না ইউনিয়নের খেজুরতলা মৌজায় চার একর জমি নিয়ে গড়ে উঠা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে প্রত্যহ শত শত মানুষের উপস্থিতিতে দর্শনীয় স্থানে পরিনত হয়েছে। বরগুনা শহরে তেমন কোন দৃষ্টিনন্দন স্থান না থাকায় কর্মব্যস্ত উৎসুক মানুষ সকাল বিকাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে ভিড় জমিয়ে সৌন্দর্য উপভোগ করছেন।
ছয়টি উপজেলা নিয়ে গঠিত বরগুনা জেলার সীমানা উত্তরে ঝালকাঠি পটুয়াখালী ও বরিশাল জেলা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর পটুয়াখালী জেলা এবং পশ্চিমে বাগেরহাট জেলা। সড়ক পথে যোগাযোগের জন্য কোন টার্মিনাল না থাকায় প্রায় সময়ই রাস্তার পাশ্বেই বাসগুলো কারণে পার্কিং করার গাড়ি ও মানুষ চলাচলে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে। সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও বরগুনায় গড়ে উঠেছে বিসিক শিল্পনগর, টেকনিক্যাল কলেজ, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল, নার্সিংহোম, বঙ্গবন্ধু নৌকা জাদুঘর, জেলা শিল্পকলা একাডেমি, সুরঞ্জনা ইকো পার্ক এন্ড ট্যুরিজমসহ অসংখ্য মনমুগ্ধকর পর্যটন কেন্দ্র। দূরদুরান্ত থেকে প্রতিনিয়ত অসংখ্য মানুষ বরগুনায় ভ্রমণ করেন নৈসর্গিক পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে। দীর্ঘদিন ধরে বরগুনায় কোন নির্দিষ্ট বাসস্টান্ড না থাকায় যত্রতত্র বাস স্টপেজ সৃষ্টি হয়েছিল। একটি নির্দিষ্ট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল গড়ে ওঠার জন্য দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম করতে হয়েছে এ অঞ্চলের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের। বহু প্রতীক্ষিত বরগুনা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে বিদ্যমান আছে ৬৪টি (ক্যাপাসিটি) বাস পার্কিং এর সুবিধা, ১৬টি টিকিট কাউন্টার, ওয়েটিং রুম ২টি, ১টি অফিস কক্ষ, টয়লেট ৬টি লেয়ার রুম ১টি, বগি ১টি, কমার্শিয়াল রেস্টুরেন্ট এবং মনোরম পরিবেশ আছে নামাজ পড়ার জন্য নির্দিষ্ট স্থান।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর ২১ আনুষ্ঠানিকভাবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বরগুনা পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান মহারাজকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিলেও অদ্যবধি আনুষ্ঠানিকভাবে শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়নি।
বরগুনার প্যানেল মেয়র রইসুল আলম রিপন বলেন, নির্মাণ কাজে খুঁটিনাটি সমস্যার কারণে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালটি চালু করা যাচ্ছে না। তবে শিগগিরই চালু হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন পৌর কর্তৃপক্ষ।
এ ব্যাপারে বরগুনা পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট মো. কামরুল আহসান মহারাজ জানান, কিছু ত্রুটি থাকায় রিপিয়ারের কাজ চলছে। আশা করছি অল্প কিছুদিনের মধ্যেই কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালটি চালু করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন